কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে বর্তমানে মানুষের খাওয়ার চালের চেয়েও গোখাদ্য গমের ভুসির দাম বেশি। বাজারে ১ কেজি চাল বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। অপরদিকে ১ কেজি গোখাদ্য গমের ভুসি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়। এছাড়া খৈল, খুদ ও লবণের দামেও রয়েছে বৃদ্ধির তালিকায়। গোখাদ্যের ক্রমবর্ধমান দাম বৃদ্ধিতে বিপাকে পড়েছেন উপজেলার সাধারণ কৃষক ও খামারিরা। গোখাদ্যের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির কারণে দুধ উৎপাদন ও পশু মোটাতাজাকরণে ব্যয় বেড়েছে কৃষক ও খামারিদের। এতে করে গবাদি পশুপালনে হিমশিম খাচ্ছেন তারা।
উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে গিয়ে দেখা গেছে, বর্তমানে খোলা বাজারে প্রতি কেজি গমের ভুসি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়, চালের খুদ বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, খৈল বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি ও লবণ ২০ টাকা কেজি দরে। অথচ ১ কেজি চাল বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকায়।
উপজেলার মসূয়া ইউনিয়নের পং মসূয়া গ্রামের মো. মনির হোসেন জানান, আমার সংসারে সদস্যের সংখ্যা ৬ জন। আমার আবাদি জমি নেই। ভাড়ায় সিএনজি চালাই আর ২টি গাভি লালন পালন করি। এর থেকে যা আয় হয়, তা দিয়ে কোনো রকম চলে সংসার। কিন্তু হঠাৎ মানুষের খাদ্যে ও গোখাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিপদে পড়ছি সংসার নিয়ে। নিজের খাবার জোগাড় করতেই হিমশিম খাচ্ছি এখন আবার গরুর খাদ্যেরে দাম বৃদ্ধি। গরুগুলোকে আগের মতো খাবার দিতে পারছি না। গরুকে ঠিকমতো খাবার দিতে গেলে সংসারের টানাপোড়েন শুরু হয়ে যায়। তাই বাধ্য হয়ে একটি গাভি বিক্রি করতে হচ্ছে।
উপজেলার মুমুরদিয়া ইউনিয়নের উত্তর মুমুরদিয়া গ্রামের আলী হোসেন বলেন, আমি অনার্স ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী। পড়ালেখার পাশাপাশি একটি গরুর খামার দেই। আমার খামারের ৫টি গাভীসহ ছোটবড় ১২ টি গরু পালন করছি। যে হারে খৈল, ভুসি ও খুদসহ গরুর খাবারের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে।, তাতে ৪০ থেকে ৫০ টাকায় দুধ বিক্রি করে পোষায় না। এখন গরু লালনপালন করে লাভ করা খুব কঠিন।
মসূয়া বাজারের গোখাদ্য বিক্রেতা আবুল কাসেম বলেন, আমাদের তো কিছু করার নেই। বেশি দামে কিনে আনতে হয়। তাই বেশি দামে বেচতে হয়। আগের চেয়ে বেচাবিক্রি অনেক কমে গেছে। মানুষ এখন অল্প অল্প করে খাদ্য কেনে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ উসমান গনি বলেন, গোখাদ্যের দাম বাড়ার কথা খামারিদের কাছ থেকে শুনেছি। দাম বাড়া-কমা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে। আমরা খামারিদের বাইরের তৈরি খাবারের পরিবর্তে সবুজ ঘাস গরুকে খাওয়ানো, বাড়িতে গরুর সুষম খাদ্য তৈরিসহ কৃষক ও খামারিদের সব ধরনের সেবা ও পরামর্শ আমরা দিচ্ছি। পশুখাদ্যের দাম বৃদ্ধি পেলে উৎপাদন খরচ বেড়ে যায়।
যাযাদি/এস