সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

গফরগাঁওয়ে ধানের বাম্পার ফলনে কৃষকের হাসি

নাজমুল হক বিপ্লব, গফরগাঁও
  ১৭ মে ২০২৩, ১০:৫৮
ছবি-যাযাদি

ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার বোরো ধানের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে । একদিকে তাপদাহ অন্যদিকে অতিরিক্ত গরমে কৃষকদের কষ্ট হলেও ধান কেটে মাড়াই কাজ করছেন তারা। পাশাপাশি বসে নেই কৃষাণীরাও।

তারাও মনের আনন্দে ধান শুকিয়ে গোলায় তোলার কাজে সহযোগিতা করছেন। উপজেলার ১৫ ইউনিয়নের চাষিরা বোরো ধান মাড়াইয়ের কাজ করেছেন । চলতি মৌসুমে এ উপজেলার কৃষকরা রোদ বৃষ্টি মাথায় নিয়ে হাল চাষ দিয়ে বোরো ধান আবাদ করেন। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের ফলে কৃষকরা জমিতে সঠিক সময় পর্যাপ্ত পানি পেয়েছে।

এছাড়া কৃষি অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা মাঠপর্যায়ে থেকে কৃষকদের সব রকম পরামর্শ প্রদান, পর্যাপ্ত সার পাওয়ায় এবার কোনো কিছুতেই কৃষকদের বেগ পেতে হয়নি। তাছাড়া এখন পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সর্বত্রই বোরো ধানের ভালো ফলন হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে,চলতি মৌসুমে বোরো চাষ হয়েছে ২০ হাজার ৮১৫ হেক্টর জমিতে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৮৪ হাজার ২৯৭ হেক্টর মেট্রিক টন। উচ্চ ফলনশীল ধান আবাদ করায় লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে উৎপাদন হয়েছে ৮৯হাজার হেক্টর মেট্রিক টন । উচ্চ ফলনশীল এসব ধানের মধ্যে দুই জাতের ধান রয়েছে, হাইব্রিড ও উফশী। হাইব্রিডের মধ্যে ইস্পাহানি-২, বালিয়া-২, চমক-১, আফতাব এলপি-৭০, এসিআই-১, সবুজ সাথি, ব্রাক হাইব্রিড-১.১২০৩, তেজগোল্ড। আর উফশীর মধ্যে ব্রি ধান ২৮, ব্রি ধান ২৯, ব্রি ধান ৫৫, ব্রি ধান ৫৮, ব্রি ধান ৬৮, ব্রি ধান ৮১, ব্রি ধান ৮৬, ব্রি ধান ৮৮, ব্রি ধান ৮৯, ব্রি ধান ১০০ চাষাবাদ করা হয়েছে।

দীর্ঘদিন বোরো আবাদে কৃষকদের বড় একটি অংশের কাছে ধানের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য জাত ছিল ব্রি ২৮ ও ২৯। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোয় দেখা গেছে, জাত দুটিতে ব্লাস্টের আক্রমণ বেড়েছে। স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তারা এখন জাত দুটি আবাদে নিরুৎসাহিত করছেন। উপযুক্ত নতুন জাতের সন্ধান করছেন কৃষকরাও। বর্তমানে ব্রি ২৮ ও ২৯-এর পরিবর্তে কৃষকদের ব্রি ৮৮, ৮৯ ও ৯২ এবং বঙ্গবন্ধু ১০০ জাতের ধান আবাদে ঝুঁকতে দেখা যাচ্ছে বেশি। বোরো আবাদে ২৮ ও ২৯-এর বিকল্প হয়ে উঠেছে জাতগুলো।

দত্তেরবাজার ইউনিয়নের বারইগাঁও গ্রামের কৃষক শিব্বির আহমেদ জানান, অতিবৃষ্টি কিংবা শিলাবৃষ্টির হাত থেকে রক্ষা পেয়েছি। তবে অনাবৃষ্টির কারণে সেচ দিতে হয়েছে বেশি। এ বছর পোকার আক্রমণ কিংবা রোগবালাই তেমন ছিল না। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা নিয়মিত খোঁজ নিয়ে আমাদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। ফলে আমরা এবার বাম্পার ফলন পেয়েছি ।

দত্তেরবাজার ইউনিয়নের বিরই গ্রামের হাশেম ক্কারী এ বছর ব্রি ২৮ ও ২৯-এর পরিবর্তে ব্রি ধান ৮৯, ৯২ ও বঙ্গবন্ধু ১০০ ধান আবাদ করেছেন। তিনি বলেন, এ তিন জাতের ধান চাষে পানিও কম লাগে, কীটনাশক লাগে না বললেই চলে। ফলনও অনেক বেশি হয়েছে ।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ নূর মোহাম্মদ বলেন, মৌসুমের শুরুতে সরকারি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় এ উপজেলায় ৬ হাজারের ওপর কৃষককে উফসী ধানের বীজ, ডিএপি সার ও এমওপি সার বিনা মুল্যে প্রদান করা ।এ ছাড়াও ফলন বৃদ্ধিতে মাঠপর্যায়ে থেকে কৃষকদের বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ প্রদান করা হয়। আর উচ্চফলনশীল ধান চাষ করায় ফলনও ভালো হয়েছে।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে