ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় কৃষি খামার গড়ে এলাকায় তাক লাগিয়েছেন প্রবাস ফেরত দুই বন্ধু। সফল হয়ে কর্মসংস্থানের পাশাপাশি নিজেদের স্বপ্ন পূরণ করে চলেছেন।
উন্নত জাতের টমেটো চাষ করে বছরে কোটি টাকা আয় করে কৃষিকে সম্ভাবনাময়ী শিল্প হিসেবে গড়ে তুলেছেন তারা। সরকারি সহযোগিতা পেলে গ্রিন হাউজ নির্মাণসহ আরও বড় পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। খামারের কৃষিপণ্য এলাকার চাহিদা মিটিয়ে বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় সরবরাহ করছেন তারা।
প্রবাস ফেরত দুই বন্ধু মোঃ এমদাদুল হক ও মোঃ কবির আহাম্মদ। এক যুগেরও বেশি সময় প্রবাস জীবন শেষে ২০১২ সালে দেশে ফিরে এসে নিজ এলাকায় একটি কৃষি খামার গড়ার পরিকল্পনা করেন। পরে উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৫ বিঘা কৃষি জমি ইজারা নিয়ে খামারের যাত্রা শুরু করেন।
শুরুতে দুই বন্ধু ১৩ লাখ টাকা পুঁজি খাটিয়ে চাষ করেন বিভিন্ন জাতের কৃষি পণ্য। প্রথমে দুই বছর লাভের মুখ না দেখলেও পরের বছর থেকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাদের।
বর্তমানে প্রায় ৬০ বিঘা জমিতে পরিণত হয়েছে এই খামারটি। তাদের এই খামারে প্রায় ৪০/৫০ জন নারী-পুরুষ নিয়মিত কাজ করছে। বর্তমানে খামার থেকে বছরে আয় হয় প্রায় কোটি টাকা।
তাদের এই খামারে দেশি-বিদেশি ও উন্নত জাতের আগাম জাতের টমেটো, শসাসহ ঋতুভিত্তিক শাকসবজি এবং আগাম জাতের তরমুজ ও চাষ হচ্ছে। এবছর খামারের ৫০ বিঘা জমিতে চাষ করেছেন শীতকালীন আগাম জাতের টমেটো।
খামার থেকেই আনসিজনে প্রতি কেজি টমেটো পাইকারি ৮০ থেকে ৯০ টাকা দরে বর্তমানে ২০থেকে ২৫ টাকা পাইকারি দরে বিক্রি করছেন তারা। প্রতি মাসে কর্মীদের বেতন দিচ্ছেন ৬ লাখ টাকার বেশি। পাশাপাশি আগ্রহী বেকার যুবকদেরও কৃষি কাজে উৎসাহ দিচ্ছেন।
খামার উদ্যোক্তা মোঃ এমদাদুল হক ও মোঃ কবির আহাম্মদ বলেন, টানা দুই বছর অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে। তারপর থেকেই আমাদের সফলতা শুরু। সব সময় আগাম জাতের শাকসবজি চাষ করি। এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। আগাম জাতের কৃষিপণ্যগুলো বাজারজাত করার চেষ্টায় ব্যস্ত থাকি। সরকারের সহযোগিতা পেলে গ্রিন হাউজ করার কথাও জানান তারা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাজেরা বেগম বলেন, দেশের কৃষি বর্তমানে দিন দিন বাণিজ্যিক কৃষিতে পরিণত হচ্ছে। কৃষিজাত ফসল চাষাবাদ করে সফল হওয়া যায় এমন দৃষ্টান্ত এখন প্রবাস ফেরত দুই বন্ধু। তারা গ্রীষ্মকালীন, শীতকালীন ফসল চাষ করে প্রচুর পরিমাণে লাভবান হচ্ছেন।
যাযাদি/ এমএস