শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মাছের পাউডার ব্যবহারে নোবিপ্রবি গবেষক দলের সাফল্য

নোবিপ্রবি প্রতিনিধি
  ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১৪:২২

মাছ ভাজা, মাছের মুড়িঘন্ট, ছোট মাছের চঢচরি সবই ছিল রসনা বিলাস বাঙ্গালীর নিত্য আহার। ভোজন রসিক বাঙ্গালীর পাতে এবার যোগ হলো পুষ্টিমান সমৃদ্ধ মাছের পাউডার। সম্প্রতি নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক তৈরী করেছেন উচ্চ পুষ্ঠিমান সমৃদ্ধ মাছের পাউডার। খাদ্য নিরাপত্তার সকল মানদন্ড বজায় রেখে পাউডারটি ফিশারিজ এন্ড মেরিন সায়েন্স বিভাগের ল্যাবে তৈরী করা হয়েছে। পরবর্তীতে পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে বহুল ব্যবহৃত তরকারী যেমন- ডাল, আলু, কচু শাক, লাল শাক, বেগুন, সীম, লাউ, চাল কুমড়া, ফুল কপি, মুলা, কচুরমুখী, সীমের বিচি ও ভর্তা হিসেবে ফিশ পাউডার রান্না জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

শুক্রবার (১৯ ফেব্রুয়ারী) লক্ষীপুরের চরআলেকজান্ডারে দিনব্যাপি মাঠ দিবস ও প্রযুক্তি প্রদর্শনী সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সুবিধাভোগী ৪০ টি পরিবারের সদস্যরা ও স্থানীয়রা অংশগ্রহন করেন। সভায় বিজ্ঞান অনুষদের ডীন প্রফেসর ড. মো. হানিফ এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ দিদার-উল- আলম।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো.ফারুক উদ্দীন, বাংলাদেশ কৃষি গবেষনা কাউন্সিলের পরিচালক (পুষ্টি) ড. মোঃ মনিরুল ইসলাম, ফিসাররিজ এন্ড মেরিন সায়েন্স বিভাগের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) ড.মফিজুর রহমান,ফার্মেসী বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড.মো. সেলিম উদ্দীন,রামগতি পৌরসভার মেয়র মেজবাহ উদ্দীন,নোয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাছুমা আক্তার। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যানবৃন্দ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকবৃন্দ ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ।

সভায় প্রধান অতিথি মাননীয় উপাচার্য ড. মো. দিদার-উল আলম বলেন, নবীন বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষনা সাফল্য অত্যন্ত প্রশংসনীয়। তিনি উক্ত গবেষণা কায়ক্রমকে আরো বেগবান ও জনগনের দ্বার গোড়ায় পৌছে দেয়ার উপর গুরুত্বারোপ করেন।

ড. মনিরুল ইসলাম বলেন, ফিশ পাউডার ব্যবহারের যে জনপ্রিয়তা আজকে আমরা লক্ষ্য করলাম তা আমাকে আশাবাদী করে তুলেছে। আগামী দিনে প্রজম্মের পুষ্টি চাহিদা রোধ ও উন্নত জাতি গঠনে মাছের তৈরী পুষ্টি পাউডার অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে বিশ্বাস করি।

সুবিধাভোগীদের কিশোরী সোনিয়া আকতার বলেন, আগে মাছের মাথা ও লেজ কে খাবে তা নিয়ে মনকষাকষি হতো কিন্তু পাউডারের খাবার অন্য খাবার থেকে সুস্বাদু ও সকলে সমান ভাগ পায়। একজন কিশোরীর মা রিনা বেগম বলেন, মাছের পুষ্টি পাউডার দিয়া রান্না খাবার আমাদের নতুন নতুন আইটেম যুক্ত করার সুযোগ করে দিয়েছে এবং আশে-পাশে পাড়া-পড়শীর অনেক আগ্রহ।

মাছ পাউডার প্রকল্পে প্রধান গবেষক হিসবে দায়িত্ব পালন করেন, ড. আবদুল্লাহ-আল মামুন, গবেষক দলের সদস্য হিসেবে কাজ করেন ড. শহীদ সরোয়ার, শুভ ভৌমিক। প্রকল্পের গবেষণার সহযোগী হিসবে কাজ করেন আবদুল আজিজ ও সাইদুজ্জামান সাব্বির।

উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশের তিনটি অঞ্চলে লক্ষীপুরের চর আলেকজান্ডার, নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি ও খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় ১২০ টি পরিবারের প্রায় ৬ শতাধিক সদস্যদের মধ্যে সাপ্তাহিক জনপ্রতি ৪০ গ্রাম হারে গত ১৬ সপ্তাহ ধরে এই পাউডার বিতরণ করা হয়। নারীর ক্ষমতায়নের অংশ হিসেবে অংশগ্রহনকারীর গৃহের মহিলারা বিশেষ প্রনোদনা পেয়েছেন। গবেষণার প্রয়োজনে ২৪০ পরিবারের কিশোরী মেয়েদের রক্তের নমুনায় আয়রণ, জিংক, ভিটামিন-এ, ক্যালসিয়ামের উপস্থিতি নির্নয় করা হয়েছে এবং ১৮ সপ্তাহ পর আগামী মার্চে পুনঃনমুনায়ন করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট গবেষকরা জানিয়েছেন।

যাযাদি/এসএইচ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে