বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ৩১ বৈশাখ ১৪৩২

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীদের হেনস্তা, নিরাপত্তার শঙ্কায় শিক্ষার্থীরা

চবি প্রতিনিধি
  ১৫ জুলাই ২০২৪, ২২:৪৯
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীদের হেনস্তা, নিরাপত্তার শঙ্কায় শিক্ষার্থীরা
ছবি : যায়যায়দিন

সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল করে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় ৩জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এছাড়া প্রক্টর অফিসের সামনে ৩টি ককটেল বিস্ফোরণ করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। নারী শিক্ষার্থীদেরকে শারীরিকভাবে হেনস্তা ও প্রক্টরের সামনে বিশ্রী ভাষায় গালিগালাজ করার ও অভিযোগ উঠেছে।

1
সোমবার (১৫ জুলাই) বিক্ষোভের জন্য ক্যাম্পাস থেকে দুপুর আড়াইটার শাটল ট্রেনে শহরের উদ্দেশ্যে হওনা হলে ট্রেনটি আটকে দেয় নেতাকর্মীরা। এসময় ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ এসে শাটলের চাবি কেড়ে নেয় ও আন্দোলনের সমন্বয়ক সহ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে জিম্মি করে প্রক্টর অফিসে নিয়ে যায়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসের সামনে ফের প্রক্টরের উপস্থিতিতে কোটা সংস্কারপন্থীদের মারধর করে ছাত্রলীগ কর্মীরা।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, দুপুরে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেশনে জড়ো হই ষোলশহরে যেয়ে আন্দোলনে যোগ দেওয়ার জন্য। তখন ছাত্রলীগ কর্মীরা এসে শাটলের চাবি নিয়ে নেয় ও আমাদের উপর হামলা করে। এসময় তারা তালাত মাহমুদ রাফি সহ কয়েকজন শিক্ষার্থী জিম্মি করে প্রক্টর অফিসে নিয়ে যায়। তখন আন্দোলনকারী জিম্মি হওয়া শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করতে যাওয়ার পথে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে তাদেরকেআটকে বেধড়ক মারধর করে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। তারা এসময় রাস্তায় ফেলিয়ে বাঁশ-তক্তা দিয়ে এক শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে মারাত্মক জখম করে ও ছাত্রীদেরকে হেনস্তা করেন। এসময় গুরুতর আহত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের ২০-২১শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. মাহবুবুর রহমান।

প্রক্টর অফিসের সামনে মারধরের শিকার বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী নাম প্রকাশ না করে বলেন, আমরা প্রক্টরের অফিসে ঢুকতে চাইলে ছাত্রলীগ বাধা দেয়, দরজা লাগিয়ে দিতে চায়। তখন আমি দরজা আটকালে তারা আমার পায়ে একাধিক লাথি মারেও হাতে আঘাত করে। আমাদের সব ছাত্রীর সাথেই তারা খারাপ আচরণ করেছে। তারা প্রক্টর অফিসের সামনেই আমাদের উপর হাত তুলেছে, বিশ্রী ভাষা ব্যবহার করেছে। প্রক্টররা সব কিছু দেখেও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি উল্টো তাদের সাথে কথা বলার সময় আমাদেরকে ধমক দেন।

এ বিষয়ে সমন্বয়কারী রাফি বলেন, গণতন্ত্রের দেশের একজন নাগরিককে কেউ জোর করে তুলে আনতে পারে না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাকে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই। ছাত্রলীগের নেতারা আমার শরীরে বেশ কয়েকবার আঘাত করছে।

ছাত্রলীগের বিজয় গ্রুপের নেতা সাখওয়াত বলেন," আমরা জামাত - শিবিরকে ছাড় দিবো না। যারা অরজগতা সৃষ্টি করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবো। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজাকারদের কোনো ঠাঁই নেই। রাজাকার-রাজাকার স্লোগান দিয়ে কেউ এদেশে থাকতে পারে না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. অহিদুল আলম বলেন, গতকাল রাতে যে শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের মধ্য স্লোগান নিয়ে ঝামেলার জেরে আজ এঘটনা ঘটেছে। রাফিকে আমাদের হেফাযতে রেখে তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি। একই সাথে শিক্ষার্থীদের হামলায় কেউ জড়িত থাকলে আমরা তদন্ত করে শাস্তির আওতায় আনবো।

এর আগে গতকাল রাতে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া বক্তব্যের ক্ষোভে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা মাঝরাতে 'তুমি কে, আমি কে- রাজাকার রাজাকার' স্লোগানে মিছিল করলে ক্যাম্পাসের কাটাপাহাড় রোডে পেছন থেকে অতর্কিত হামলা করে ছাত্রলীগ। এতে আহত হয় বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে