জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলের করে আটক সেই যুবক আশরাফুল আলম পারভেজকে (যাযাবর পারভেজ) কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (২০ জানুয়ারি) ঢাকার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহফুজুর রহমান কারাগারে পাঠানোর এই আদেশ দেন। ঢাকা জেলা পুলিশের আদালত পরিদর্শক আকতার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আশুলিয়া থানার সাব-ইন্সপেক্টর গোলাম কিবরিয়া চুরির অভিযোগে করা মামলায় তাকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন।
আবেদনে বলা হয়, আসামি একজন পেশাদার চোর দলের সক্রিয় সদস্য। তার বৈধ কোনো কর্ম নাই। চুরি করে জীবিকা নির্বাহ করে। গত ১৮ জুলাই রাত পৌনে ১১ টার সময় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নওয়াব ফয়জুন্নেসা ছাত্রী হলের ২১৬ নম্বর কক্ষের সামনে সন্দেহজনক ভাবে ঘোরাফেরা করতে দেখতে পেয়ে চোর চোর বলে চিৎকার করতে থাকে। তখন এ আসামি দৌড়ে পালানোর চেষ্টাকালে তাকে আটক করা হয়। আসামিকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে তল্লাশিকালে সে তার পরিহিত কালো রংয়ের ট্রাউজারের ডান পকেট থেকে ২১৬ নম্বর কক্ষের ভিতর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীর চুরি যাওয়া ৯০০ টাকা বের করে দেয়।
জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নওয়াব ফয়জুন্নেসা ছাত্রী হলের ২১৬ নম্বর কক্ষে প্রবেশ করে বিছানার বালিশের নিচ থেকে ৯০০ টাকা চুরি করে। উল্লেখ্য যে, ছাত্রীদের হলে বিনা অনুমতিতে পুরুষের প্রবেশ সম্পূর্ণরুমে নিষেধ।
আশরাফুল ইসলামের দাবি, তিনি চট্টগ্রামের ডাবলমুরিং এলাকার বাসিন্দা এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘হিম উৎসব’ অনুষ্ঠান উপলক্ষে সেখানে ঘুরতে এসেছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার (১৮ জানুয়ারি) রাত ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের ৫২তম ব্যাচের এক ছাত্রীর সঙ্গে হলে প্রবেশ করেন পারভেজ। এ সময় তার কপালে টিপ, পরনে পালাজ্জো ও ঘোমটা দিয়ে মুখ ঢাকা ছিল। তার পোশাক ও হাঁটার ধরন দেখে কয়েকজন ছাত্রীর সন্দেহ হলে বিষয়টি হল সুপারকে জানানো হয়। একপর্যায়ে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে হল সুপারসহ কয়েকজন গিয়ে ওই ছাত্রীর কক্ষে পারভেজকে দেখতে পান। এরপর তাকে আটক করে হল প্রাধ্যক্ষ ও প্রক্টরিয়াল টিমের উপস্থিতিতে আশুলিয়া থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলের হল সুপার নাদিয়া সুলতানা জানান, ওই ছাত্রীর কক্ষে পুরুষের উপস্থিতি টের পেয়ে তাকে জানানো হয়। তাৎক্ষণিকভাবে অভিযুক্ত ছাত্রীর কক্ষে গিয়ে ওই যুবককে (পারভেজ) খাটের ওপরে বসে থাকা অবস্থায় দেখা যায়। পরে বিষয়টি হলের প্রাধ্যক্ষকে জানানো হয়।
আটকের পর পারভেজ বলেন, ‘আমরা দুজন ভালো বন্ধু। সাত বছরের বন্ধুত্ব। হিম উৎসব উপলক্ষে ক্যাম্পাসে বেড়াতে এসেছি। আমি কপালে টিপ পরে মুখ ও শরীরে চাদর মুড়িয়ে হলে প্রবেশ করি।’
নিজেকে বিবাহিত দাবি করে অভিযুক্ত ওই ছাত্রী বলেন, ‘আমরা উভয়ই ভালো বন্ধু। হিম উৎসবে সে বেড়াতে এসেছিল। রাতে থাকার জায়গা না পাওয়ায় তাকে হলে নিয়ে এসেছি।’
যাযাদি/ এস