সোমবার, ১২ মে ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২

নারী দিবসে ঢাবি ছাত্রদলের বইমেলা ও আলোচনা সভা

ঢাবি প্রতিনিধি
  ০৮ মার্চ ২০২৫, ১৭:৪২
নারী দিবসে ঢাবি ছাত্রদলের বইমেলা ও আলোচনা সভা
ছবি: যায়যায়দিন

আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপন উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) দিনব্যাপী বইমেলা আয়োজন করছে ঢাবি শাখা ছাত্রদল। ‘অদম্য নারী, শক্তিতে অজেয়’ শ্লোগানকে উপজীব্য করে এ মেলা এবং আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার (৮ মার্চ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রের মাঠে এ বইমেলা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।আলোচনা সভা শেষে আন্দোলনে আহত নারী ও শহীদ পরিবার এবং বিগত ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার সময়ে বিভিন্ন সময় নির্যাতনের নিপিড়নের শিকার নারীদের সম্মাননা দেওয়া হয়।

আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান এবং সালাউদ্দিন আহমেদ।কেন্দ্রীয় ছাত্রদের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীন নাসির, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস, সাধারণ সম্পাদক নাজিমুজ্জামান শিপন সহ ঢাবি ছাত্রদলের বিভিন্ন পর্যায়ে নেতা- নেত্রী এবং কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

নারী উদ্যোক্তা ও বই মেলা ঘুরে দেখা গেছে নারীদের বিভিন্ন স্টলে বিক্রি হচ্ছে বই,খাবার,পোশাকসহ নানা দ্রব্য। ঢাবি শিক্ষার্থী এবং ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের স্টলগুলো ঘুরতে দেখতে এবাং বই কিনতে দেখা গেছে । স্টলগুলোতে জিয়াউর রহমন ও বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে লেখা বিভিন্ন বই প্রদর্শন ও বিক্রি করতে দেখা যায়।

সভায় জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের নিহত নাফিসা হোসেনের মামা উপস্থিত ছিলেন। ভাগনী হত্যার বিচার চান তিনি।তিনি বলেন,এখানে এভাবে আসতে হবে ভাবিনি।জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহত আমার ভাগিনী নাফিসা একজন নারী শহীদ। সাভারে ৫ আগস্ট পুলিশের গুলিতে সে শহীদ হয়।আমার ভাগনিকে যারা গুলি করে হত্যা,করেছে তাদের যেন বিচার হয়।

এসময় বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেফতার হয়ে নির্যাতনের শিকার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কোবরা। তিনি আন্তর্জাতিক নারী দিবসকে নিয়ে বলেন,নারীর পুরুষ সমান অধিকার মানে এই না যে নারীকে পুরুষের মতো সিগারেট খাওয়ার অধিকার দেওয়া।ন্যায্যতার ভিত্তিতে নারীর সকল অধিকার নিশ্চিত করাই নারী অধিকারের মূল বিষয়।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলে,নারীদের সমতা অধিকার তখনই হবে যখন নারী পুরুষ উভয়ই পাশাপাশি কাজ করবে এবং একই মেধা নিয়ে, কর্মপ্রচেষ্টা নিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।কিন্তু আমরা শুধু নারী দিবসের দিনটায় সভা করছি,র‍্যালি করছি,বিভিন্ন অনুষ্ঠান করছি বিভিন্ন স্লোগানকে উপজীব্য করে কিন্তু পরবর্তী দিন আমরা আর নারীদের মনে রাখছি না।বৈষম্য বিরোধ ছাত্র আন্দোলনে অনেক ছাত্রী বোন অংশগ্রহণ করেছিল।কিন্তু ৫ আগস্টের পরে তাদেরকে আর কোথাও দেখা যাচ্ছে না।আন্দোলন সংগ্রাম করে ফ্যাসিস্টকে পালাতে বাধ্য করার পরেও কেন তাদেরকে মূল্যায়ন করা হচ্ছে না?

তিনি বলেন,শিক্ষাজীবনে যেসব ছাত্রী বোনেরা ছাত্রদল করতো বৃহৎ রাজনীতিতে তারা অবস্থান করে না।এখন নারীরা যদি নারী ক্ষমতায়নের জন্য কথা তুলতে না পারি তাহলে নারী পুরুষ যে সমতার কথা বলা হচ্ছে তা কখনোই আসবে না।দেশের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণে নারীর অংশগ্রহণ করতে পারে একমাত্র রাজনীতির মাধ্যমে। নির্বাচনকে সামনে রেখে সারাদেশে নারীদেরকে কীভাবে মূল্যায়ন করা যায় সে বিষয়ে চিন্তা করা দরকার। এসময় তিনি নারীদের সংসদীয় আসন বাড়িয়ে দেওয়ার দাবি জানান।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন,জুলাই গণঅভ্যুত্থান নারীদের যা ভূমিকা তা আমরা লক্ষ্য করেছি এবং তা বিশ্ব স্বীকৃত হয়েছে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের নিহত হওয়া শহীদের একটা উল্লেখ যোগ্য অংশ নারী এবং শিশু।নারীরাই সব সময় সকল গণতান্ত্রিক ও রাজনৈতিক সংগ্রামে এগিয়ে ছিল।আমরা দেখেছি প্রকৃতপক্ষে আমাদের এই অর্জিত বিজয়ে নারী অংশ এবং ভাগ আছে।

সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, বিএনপির দেওয়া ৩১ দফায় এবং নারীর ক্ষমতানে দেওয়া প্রতিশ্রুতির মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নারীদের ক্ষমতায়ন করা হবে সাংবিধানিকভাবে,সংসদীয়,প্রাতিষ্ঠানিক এবং আইনী ভাবে সমাজের সকল স্তরে। ক্ষমতায়নের ভার পূর্বের তুলনায় বৃদ্ধি পাবে।আমরা সাংবাদিক সংস্থা কমিশনের মাধ্যমে আমাদের এবং অন্যান্য দলের প্রস্তাবনার মধ্য দিয়েসংসদে নারীদের সংখ্যা বৃদ্ধির মাধ্যমে একটি সংসদীয় নারীর ক্ষমতানের ভূমিকা রাখবো।তিনি বলে,আমরা নারী ক্ষমতানের দিকে যত এগিয়ে যাবো বিশ্বের আমাদের দেশ তত এগিয়ে যাবে।

যাযাদি/ এমএস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে