কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) রেজিস্ট্রার দপ্তরে কার্য সহকারী পদে সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত এক কর্মচারীকে মারধর করেছেন কুবি শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মেহেদী হাসান সোহাগ।
শনিবার (৫ জুলাই) বিকালের দিকে মারধরের বিষয়টি মুঠোফোনে প্রতিবেদকের কাছে স্বীকার করেন তিনি।
মেহেদী হাসান সোহাগ বলেন, 'অভিযুক্ত মেহেদী হাসান বলেন, ‘যেই নিয়োগটি হচ্ছে সেই নিয়োগে অন্য একটা পদে আমিও ক্যান্ডিডেট ছিলাম। ঘটনার দিন সকালে জানতে পারি, ওই নিয়োগ স্বজনপ্রীতি বা অর্থের বিনিময়ে হয়েছে—যেটি আমি যাচাই করতে চেয়েছিলাম। এ জন্য আমি তাকে (আজাদ) ফোন দিয়ে দেখা করার কথা বলি। সে বারবার বলছিল ‘আসছি’, কিন্তু পরে ফোন বন্ধ করে দেয়। পরে বিকেল পাঁচটার দিকে রেজিস্ট্রার অফিসে তার সঙ্গে দেখা হলে, আমাকে মিথ্যা বলার কারণে রাগের মাথায় আমি তাকে একটি থাপ্পড় দিয়ে ফেলি। পরবর্তীতে অফিস থেকে বের হলে তার সাথে দেখা করে আবার বিষয়টি বুঝিয়ে বলি।’
জানা যায়, মো. মেহেদী হাসান সোহাগ কুবি শাখা ছাত্রদলের ২০২১ সালে ঘোষিত কমিটির সাত নং যুগ্ম আহ্বায়ক। বর্তমানে তিনি একটি ব্যাংকে কর্মরত আছেন।সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত ভুক্তভোগী কর্মচারীর নাম আজাদ। গত ৩ জুলাই (বৃহস্পতিবার) তার কর্মস্থলে যোগদানের দিন ছিল এবং ওই দিনই তিনি মারধরের স্বীকার হন।
তবে ভুক্তভোগী আজাদের সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি বলেন, আমাকে এইখানে অনেকদিন চাকরি করতে হবে ভাই। আমি এই এলাকার কারো বিরুদ্ধে এই ঘটনায় বক্তব্য দিতে পারব না বলে ফোন কেটে দেন।
তবে এই ঘটনার দিন কুবি ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল বাশারও ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গেছে। তবে এই ঘটনার কিছুই জানেন না বলে তিনি মন্তব্য করেন।
ছাত্রদল নেতা আবুল বাশার বলেন, 'ক্যাম্পাস সংলগ্ন এটিএম বুথের সামনে এক কর্মচারী ও এক শিক্ষার্থীর মধ্যে বাকবিতণ্ডা দেখে আমি থামানোর চেষ্টা করি। পাশে একজন দাঁড়িয়ে ছিলেন, পরে শুনলাম তার নাম আজাদ। তবে আমি তাকে চিনি না, তাই কে কাকে মারধর করেছে সেটা সঠিকভাবে শনাক্ত করার সুযোগ আমার ছিল না।'
এই ব্যাপারে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, 'মারধরের বিষয়টি আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে, আমরা তদন্ত করছি। দ্রুততম সময়ে ব্যবস্থা নিয়ে নিব।'
এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল হাকিম বলেন, ‘এ বিষয়ে আমরা আগামী রবিবার একটি মিটিংয়ে বসবো। ইতোমধ্যে ভুক্তভোগীকে একটি লিখিত অভিযোগ জমা দিতে বলা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর সেটি পর্যালোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।'
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘সে সদ্য যোগদান করেছে। শুনেছি, কেউ একজন এসে তার সঙ্গে এমন আচরণ করেছে—বিষয়টি আমাকে মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে। আমি তাকে বলেছি, কে মারধর করেছে তার পরিচয়সহ একটি লিখিত অভিযোগ প্রক্টর অফিসে জমা দিতে। অভিযোগের ভিত্তিতেই আমরা তদন্ত করবো। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সব জায়গায় সিসি ক্যামেরা রয়েছে, তাই তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তবে, তার আগে অবশ্যই কারও না কারও পক্ষ থেকে একটি লিখিত অভিযোগ জমা দিতে হবে।’