রোববার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

শহীদদের বীরত্বের কথা বলে নোবিপ্রবির 'ফাউন্টেনপেন' শহীদ মিনার

ইয়াছিন আরাফাত, নোবিপ্রবি
  ০২ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
শহীদদের বীরত্বের কথা বলে নোবিপ্রবির 'ফাউন্টেনপেন' শহীদ মিনার

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) মূল প্রবেশ পথের বাঁয়ে তাকালেই একটুখানি থমকে দাঁড়াতে হয়। সাথে সাথে স্মরণ করতে হয় ষাট-সত্তর দশক থেকে নব্বই দশকের সেই জনপ্রিয় ফাউন্টেনপেন্‌ এর কথা। উপকূলীয় অক্সফোর্ড খ্যাত নোবিপ্রবির বুকে স্বমহিমায় স্থিরভাবে দাঁড়িয়ে আছে দেশের সবচেয়ে উঁচু ফাউন্টেনপেন শহীদ মিনার।

ভাষা শহীদদের বীরত্বের গল্প বলা এই ফাউন্টেনপেন শহীদ মিনার দশ বছর আগে ২০১৪ সালে একুশে ফেব্রম্নয়ারিতে স্থাপিত হয়। দেখতে ফাউন্টেনপেনের মতো শহীদ মিনারটির রয়েছে আলাদা মর্মার্থ। মূল বেদি থেকে এর উচ্চতা প্রায় ২৬ ফুট। ফাউন্টেনপেন শহীদ ভাষা মিনারে রয়েছে মোট সাতটি বেদি। বেদিতে এই সাতটি স্তর স্বাধীনতা অর্জনে ১৯৫২ থেকে ১৯৭১ সালের মধ্যে সাতটি ঐতিহাসিক ধাপ নির্দেশ করে। বেদির দেয়ালে ভাষা শহীদদের টেরাকোটা যেন শহীদ মিনারের ষোলকলা পূর্ণ করে। কালো রঙের মূল অংশ এবং উপরি ভাগে লাল টকটকে গোলাকার বল নির্মিত এই শহীদ মিনারটি দেখলেই চোখ জুড়িয়ে যায়। ক্যাম্পাসের বিকেলবেলায় শহীদ মিনারের আশেপাশে পর্যটকদের সরব আনাগোনায় তার উৎকৃষ্ট প্রমাণ।

দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য বজায় রেখে ভিন্ন ভিন্ন ডিজাইনের শহীদ মিনার নির্মাণ করে। নোবিপ্রবিও তার ব্যতিক্রম নয়। তবে মননশীল বোধের দিক দিয়ে নোবিপ্রবির ফাউন্টেনপেন শহীদ মিনারকে এগিয়ে রাখা যায়। রফিক, বরকত সালাম যেই বাংলা বর্ণমালার জন্য প্রাণ দিয়েছেন সেই বর্ণমালা লিপিবদ্ধ করার মূল হাতিয়ার হলো কলম। আবার তাবিয়ী হাসান বসরীর (রাহ.) কলমের কালিকে শহীদের রক্তের সাথে তুলনা করেছেন। তাই বলা যায় ফাউন্টেনপেন শহীদ মিনার ভাষা শহীদদের বীরত্বের কথা বলে। শহীদ মিনার আজ শুধু ভাষা আন্দোলনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, মানুষ যেকোনো অন্যায়ের প্রতিবাদে শহীদ মিনারের সামনে এসে জড়ো হয়। প্রতিবাদের একটি মোক্ষম হাতিয়ার ও কলম, যা আমরা বিদ্রোহী কবির বিদ্রোহী কবিতায় দেখতে পাই।

নোবিপ্রবির ফাউন্টেনপেন শহীদ মিনারে তাকালে হায়াত মামুদের কবিতার চরণের কথা মনে পড়ে যায়,

কোথায় গেলো, শ্রদ্ধাঞ্জলি

যেই না কেঁদে বললাম

ঐ যে দূরে থাকিয়ে দেখি

বরকত, রফিক, সালাম।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে