শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

অসচ্ছল বন্দিদের দেখতে কারাগারে গেলেন বিচারপতি

ম আইন ও বিচার ডেস্ক
  ০৭ জুন ২০২২, ০০:০০

অসচ্ছল বন্দিরা আইনি সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন কিনা তা সরজমিনে দেখতে কারাগার পরিদর্শন করেছেন সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যান ও বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন। সার্বিক অবস্থা দেখতে শুক্রবার (৩ জুন) সকালে কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারে যান তিনি।

পরিদর্শনকালে বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন কয়েদি, হাজতি এবং কারা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় একজন বন্দিও যেন আইনি সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত না হয় সে বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন তিনি।

সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটি (এসসিএলএসি) সূত্র বলছে, কেরানীগঞ্জ কারাগার পরিদর্শনের সময় কারা কর্তৃপক্ষ এসসিএলএসি চেয়ারম্যানকে জানিয়েছেন এই কারাগারের মোট বন্দির সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৯ হাজার। তবে তাদের মধ্যে প্রায় ৬ হাজার বন্দি অধস্তন আদালতে বিচার কার্যক্রম শেষ

না হওয়ায় এবং সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগে জেল আপিল নিষ্পত্তি না হওয়ায় কারাগারে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। কারো কারো ক্ষেত্রে কারাদন্ডের মেয়াদ ইতোমধ্যে শেষ হয়ে গেলেও, সংশ্লিষ্ট আদালতের নথি এখনো কারা কর্তৃপক্ষের কাছে না পৌঁছানোয় বন্দি আছেন।

সূত্র জানায়, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম আজ শুক্রবার (৩ জুন) কেরানীগঞ্জ কারাগার পরিদর্শনে গেলে তার সামনে ১০০ জন বন্দিকে হাজির করা হয়। এ সময় তিনি প্রায় ২০ জন কারাবন্দির বক্তব্য শোনেন।

পরিদর্শন ও শুনানি শেষে তিনি বন্দিদের আইনি সমস্যার বর্ণনাসহ একটি প্রতিবেদন তার কার্যালয়ে পাঠাতে কেরানীগঞ্জ কারাগারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।

এছাড়া তিনি বন্দিদের জানান, এসসিএলএসি দরিদ্র ও নিঃস্ব বন্দিদের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগে তাদের মামলা চলাকালে আইনি সহায়তা এবং অধস্তন আদালতে তাদের মামলা পরিচালনার সময় বিনামূল্যে আইনি পরামর্শ দেবে।

বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম কারাগারে বন্দিদের পশুপালন, তাঁতের কাপড় ও লুঙ্গি তৈরি, জুতা তৈরি, শরীর চর্চা, ফুটবল ও ক্রিকেট প্রশিক্ষণ নিতে দেখেন। কর্তৃপক্ষ থেকে বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিমকে জানানো হয়, কারাগারে বিপুলসংখ্যক কয়েদিকে বিভিন্ন ধরনের কাজ করে অর্থ উপার্জনের সুযোগ দেওয়া হয়েছে।

এ সময় তিনি কারাগারের বিভিন্ন কক্ষ ও রান্নাঘর পরিদর্শন করেন। কারাগার পরিদর্শন শেষে বের হয়ে কারাগারের ব্যবস্থাপনায় পরিছন্ন পরিবেশে সন্তোষ প্রকাশ করেন এই বিচারপতি।

দেশের ৬৮টি কারাগারের ধারণ ক্ষমতা প্রায় ৪১ হাজার। বন্দির সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি। কারাগারের ৮ ফুট বাই ৮ ফুট ঘরে মৃতু্যর প্রহর গুনছেন দুই হাজারেরও বেশি আসামি। এর মধ্যে দাগি আসামি যেমন রয়েছেন, তেমনি রয়েছেন পরিস্থিতি ও হয়রানির শিকার কিছু নিরাপরাধ মুখও।

তিনি জানান, কারাগারের উঁচু প্রাচীরে ১৪ শিকের মধ্যে বছরের বছর বন্দি থাকা অসচ্ছলরা যেন আইনি সুবিধা থেকে বঞ্চিত না হয় সে জন্য কাজ করছে সরকার।

এদিকে, এ পর্যন্ত ৬৩১টি জেল আপিল নিষ্পত্তি করেছে সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড। নিষ্পত্তির অপেক্ষায় থাকা ২৪০টি মামলার দ্রম্নত শুনানির উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানান সরকারি আইনগত সেবা প্রদান সংস্থাটির চেয়ারম্যান।

এ সময় এসসিএলএসি কর্মকর্তা এবং জেলা ও দায়রা জজ ফারাহ মামুন এবং সমন্বয়কারী রিপন পালসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে