সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

ধর্ষণে জন্ম নেওয়া শিশুর ব্যয় বহন করা হবে আসামির সম্পত্তি থেকে

আইন ও বিচার ডেস্ক
  ১৭ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০

ধর্ষণের দায়ে এক আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন চট্টগ্রামের একটি আদালত। পাশাপাশি ধর্ষণের ফলে জন্ম নেওয়া ভিকটিমের সন্তানের সব ব্যয়ভার রাষ্ট্র বহন করবে বলে রায় দিয়েছেন আদালত। আসামির সম্পদ থেকে ওই ব্যয় বহন করার নির্দেশনা দেওয়া হয় রায়ে। চট্টগ্রাম নারী শিশু নির্যাতন ট্রাইবু্যনাল-৭ এর বিচারক ফেরদৌস আরা এ রায় দেন।

দন্ডিত ব্যক্তির নাম মো. শাহজাহান (৩২)। তিনি চট্টগ্রামের জোরারগঞ্জ থানার কাটাছড়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড মুরাদপুর গ্রামের মৃত শাহ আলমের ছেলে।

রায়ে ধর্ষণের ফলে জন্ম নেওয়া শিশুর পিতৃ পরিচয় নির্ধারণ করে দিয়েছেন আদালত। দন্ডিত আসামি মো. শাহজাহান ওই শিশুর বাবা হিসেবে পরিচিত হবেন। পাশাপাশি অভিযুক্ত শাহজাহানকে তিন লাখ টাকা অর্থদন্ড করা হয়েছে। অনাদায়ে আরও ৩ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ভোগ করতে হবে।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, জোরারগঞ্জে ধর্ষণের কারণে ভিকটিমের ঔরসে শিশুর জন্ম হয়। ঘটনার ছয় বছর পর ২০১৬ সালে সন্তানের পিতৃপরিচয়ের দাবিতে থানার দ্বারস্থ হন কিশোরী ভিকটিমের মা। পরে আদালতে নালিশি মামলা দায়ের করেন। মামলায় প্রথমে অভিযোগের সত্যতা মেলেনি দাবি করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় পুলিশ।

পরে ভিকটিম পুলিশের চূড়ান্ত প্রতিবেদনের ওপর ট্রাইবু্যনালে নারাজি দেয়। আদালত ভিকটিমের আবেদন গ্রহণ করে অভিযোগ আমলে নিয়ে আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। পরে বাদীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ধর্ষণের ফলে জন্ম নেওয়া শিশু এবং আসামির ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়।

পরীক্ষায় ওই শিশুর সঙ্গে আসামির ডিএনএ মিলে যায়। এতে ধর্ষণের ফলে জন্ম নেওয়া শিশুটি আসামির ঔরসজাত বলে প্রমাণিত হয়। একই সঙ্গে ধর্ষণেরও প্রমাণ মেলে। এরপর ২০১৮ সালের ২৪ অক্টোবর আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত।

অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড, ৩ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৩ বছরের সশ্রম কারাদন্ড দেন আদালত। রায় ঘোষণার সময় আসামি ট্রাইবু্যনালে হাজির ছিলেন। পরে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

রায়ে বিচারক উলেস্নখ করেন, ধর্ষণের ফলে জন্ম নেওয়া ভিকটিমের সন্তানের সব ব্যয়ভার রাষ্ট্র বহন করবে। আসামির সম্পদ থেকে ওই ব্যয় বহন করার নির্দেশনা দেওয়া হয় রায়ে। একই সঙ্গে আসামি মো. শাহজাহানের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে এ ব্যবস্থা করার জন্য চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেওয়া হয়। দন্ডিত আসামিই শিশুটির পিতা হিসেবে পরিচিত হবেন বলেও আদালত রায়ে বিচারক উলেস্নখ করেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে