সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

নিজস্ব ছন্দে কেয়া পায়েল

তারার মেলা রিপোর্ট
  ২৭ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০
কেয়া পায়েল

এবারের ঈদের নাটকে সিনিয়রদের তুলনায় তরুণ অভিনয়শিল্পীদের উপস্থিতি বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তাদের মধ্যে অন্যতম কেয়া পায়েল। শুধু এই ঈদেই নয়, গত কয়েক ঈদেই সর্বাধিক নাটক-টেলিফিল্মে অভিনয় করে দর্শকের প্রশংসা কুড়িয়ে আসছেন ২৮ বছর বয়সি এ লাস্যময়ী। মিষ্টি মুখের টোলপড়া গালের উঠতি তারকা বছরজুড়েই ব্যস্ত থাকেন মডেলিং ও অভিনয়ে। অনবদ্য ও সাবলীল অভিনয় দিয়ে ইতোমধ্যে দর্শকের পছন্দের অভিনেত্রীর তালিকাতেও জায়গা করে নিয়েছেন স্বল্প সময়ে। মাত্র ৫ বছর আগে মডেলিংয়ের মাধ্যমে ছোট পর্দায় পা রাখেন কেয়া। পা রেখেই বুঝতে পারেন এটাই তার আসল ঠিকানা। এরপর ক্রমশ তার পথচলা সুগম হতে থাকে। টোলপড়া গালে হাসি ছড়িয়ে সহসাই নিজের একটা জায়গা যেন পাকা করে নিয়েছেন। টেলিভিশন নাটক, টেলিছবি ও বিজ্ঞাপনের এই হাসিমাখা মুখের মেয়েটির সরব উপস্থিতি বিমোহিত করে রাখে অগণিত দর্শককে।

ব্যতিক্রম ঘটেনি এবার ঈদেও। অন্যান্য ঈদের তুলনায় এবার ঈদে কাজ করলেও তারপরও এক ডজনের বেশি নাটকে দেখা মিলবে তার। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি নাটক প্রচার হয়েছে তার। এসব নাটক দেখে দর্শকের চোখে আগের চেয়ে আরও বেশি পরিপক্ব মনে হয়েছে কেয়াকে। এ বিষয়ে কেয়া পায়েল বলেন, 'যখন নিজের কোনো কাজ দেখি ভালো যাচ্ছে, দর্শক নাটকটির গল্প চরিত্র ও আমার অভিনয় নিয়ে আলোচনা করছেন, তখন অনুপ্রাণিত হই। সব কাজই তো খুব কষ্ট করে করতে হয়। যখন দেখি সেগুলো নিয়ে আলোচনা হয়, ভালো সাড়া পায়, তখন দিন শেষে কাজের শান্তিটুকু পাই। ভালো কাজের আগ্রহ জন্মে। এবার ঈদের নাটক ও টেলিফিল্মের ব্যাপারে একটু ভেবেচিন্তে কাজ করছি। অনেক ভালো ভালো গল্পের নাটকও ছেড়ে দিয়েছি। এসব নাটকের মাধ্যমে চেষ্টা করছি একটু ভিন্নভাবে নিজেকে উপস্থাপন করতে; যেন ঈদে মানুষ নতুন কিছু পায়।'

এই মডেল অভিনেত্রী আরও বলেন, 'আমি সব সময় গল্প ও চরিত্রকে প্রাধান্য দিয়েই কাজ করি। এবার ঈদেও তা-ই করছি। চেষ্টা করছি ভিন্ন ধরনের চরিত্রে কাজ করার। দর্শক বিরক্ত হতে পারেন- এমন গল্প ও চরিত্রগুলো অ্যাভয়েড করার চেষ্টা করছি। তবে এটা সত্যি যে ঈদের নাটক নিয়ে দর্শকের প্রত্যাশা সব সময় বেশি থাকে। দেখা যাক দর্শকের সেই প্রত্যাশা কতটা পূরণ করতে পারি। তবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি দর্শকের মনের মতো করে কাজ করতে।'

ক্যারিয়ারের এই অল্প সময়ে দর্শকের কাছে অনেক ঋণ জমা হয়ে গেছে তার। এই বোধটুকু এই সুহাসিনী মডেল-অভিনেত্রীকে রীতিমতো রোমাঞ্চিত করে এবং একই সঙ্গে নতুন ও ভালো কাজ করার উৎসাহ জোগায়। তাই সব সময় তিনি স্বপ্ন বুনছেন অভিনয় ও মডেলিংয়ে নিজেকে উজাড় করে দেওয়ার। রংধনুর মতো সাতরং ছড়িয়ে আপন ছন্দে সেই লক্ষ্যেই এগিয়ে চলছেন কেয়া পায়েল।

অথচ অভিনয়ের সঙ্গে নিজেকে জড়াবেন- এমন স্বপ্ন কখনোই ছিল না কেয়া পায়েলের। কেয়ার ভাষ্য, একেবারে হুট করেই মিডিয়ায় এসেছি। শখের বশে একটি বিজ্ঞাপনচিত্রে কাজ করি। এটি প্রচারের পর সঙ্গীতশিল্পী তাহসান, হাবিব ওয়াহিদ ও ইমরান মাহমুদুলের গানে মডেল হয়েছি। সবকিছু মিলে মিডিয়ার মানুষজনের সঙ্গে টুকটাক পরিচয় ঘটে। এরপরই একের পর এক অভিনয়ের প্রস্তাব আসতে থাকে। নাটকেও কাজ শুরু করি। ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই প্রায় সব তারকা অভিনেতার বিপরীতেই অভিনয় করেছি। এ যেন পরম পাওয়া।'

উজ্জ্বল মহিমায় দর্শকের সামনে আসতে সব সময় তিনি বদ্ধপরিকর। তাই তো অনেক কাজের প্রস্তাব পেলেও গুরুত্ব দিচ্ছেন চিত্রনাট্য, সহশিল্পী ও নির্মাতার গুণমানকে। চলচ্চিত্রের বেলাতেও বুঝে-শুনে কাজ করতে চান তিনি। ২০১৮ সালের শেষে আনিসুর রহমান মিলনের বিপরীতে 'ইন্দুবালা' সিনেমায় নাম-ভূমিকায় অভিনয় করেন তিনি। এরপর একাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব পাওয়ার পরও জুতসই চিত্রনাট্য কিংবা পারিপার্শ্বিকতার কারণে এখনই নিজেকে খুব একটা চলচ্চিত্রে অঙ্গনে জড়াতে রাজি নন তিনি। নিজেকে সবসময় হাসিখুশি রাখা কেয়া পায়েল বলেন, 'আমি সব সময় ভালো থাকার চেষ্টা করি। যদি মন থেকে ভালো থাকা যায় শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকলেও কোনো সমস্যা হয় না। সহকর্মীদের সঙ্গে দেখা হলে হাসি দিয়ে কথা শুরু করি। আমার মুখে হাসি লেগেই থাকে। এর মধ্যে আমি তৃপ্তি খুঁজে পাই।'

অভিনয়ের পাশাপাশি সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটিতে আইন বিষয়ে পড়ছেন কেয়া পায়েল। নিজেকে একজন আইনজীবী হিসেবে দেখতে চান এই অভিনেত্রী। তিনি বলেন, আমি কোনো প্রেমের মধ্যে নেই। অভিনয়ই মন দিয়ে করার চেষ্টা করছি। আর বিয়ে তো করবই। সবে তো ক্যারিয়ার শুরু। আরও চলুক। পড়াশোনা শেষ হোক। তারপর যখন মনে হবে আমার জীবনে কাউকে প্রয়োজন, তখন হয়তো বিয়ে নিয়ে ভাবব। ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে মাতামাতি করতে পছন্দ করি না। গুঞ্জনের শিকার হতে চাই না বলেই সচেতনভাবে বুঝেশুনে চলার চেষ্টা করছি।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে