অমিতাভ বচ্চন-রেখার প্রেম কাহিনি ছিল বলিউডের সর্বাধিক চর্চিত ব্যর্থ প্রেমের কাহিনি। বিবাহিত অমিতাভের প্রেমে পড়েছিলেন রেখা। দুজনের প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে বলিউডে অনেক চর্চা হয়েছিল। সংবাদমাধ্যমের পাতাতেও উঠে আসত সেসব খবর। এমন সময় রেখা এবং অমিতাভকে নিয়ে মুক্তি পায় 'মুকাদ্দার কা সিকান্দার' ছবিটি।

এই ছবি মুক্তি পাওয়ার আগেই অবশ্য অমিতাভ এবং রেখার সম্পর্ক নিয়ে কানাঘোষা শুরু হয়ে গিয়েছিল বলিউডের অন্দর মহলে। একের পর এক সুপারহিট ছবিতে তখন ধরা পড়ছিল তাদের প্রেমের রসায়ন। এ সব কিছু অমিতাভের স্ত্রী জয়া বচ্চনের কানে এসেও পৌঁছেছিল। রেখা এবং অমিতাভের এই কান্ডে স্বাভাবিকভাবেই মনে মনে বেশ আঘাত পেয়েছিলেন তিনি।

'মুকাদ্দার কা সিকান্দার' ছবিটি যখন মুক্তি পায় তখন রেখা ও অমিতাভের প্রেম নিয়ে চর্চা তুঙ্গে ছিল। ছবি মুক্তির আগে তারকাদের জন্য স্ক্রিনিংয়ের আলাদা ব্যবস্থা হয়েছিল। সেখানে সপরিবারে ছবি দেখার জন্য হাজির হয়েছিলেন অমিতাভ। উপস্থিত ছিলেন রেখাও। ছবির দৃশ্যে অমিতাভ ও রেখাকে প্রেম করতে দেখে জয়ার চোখের জল বাঁধ মানেনি।

রেখা একবার তার এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, তিনি প্রজেকশন ঘর থেকে দেখেন পুরো বচ্চন পরিবার এসেছে। জয়া সামনের সারিতে বসেছিলেন। আর অমিতাভ তার মা-বাবার সঙ্গে পেছনের সারিতে বসেছিলেন। জয়াকে স্পষ্টভাবে বচ্চন পরিবারের কেউ দেখতে পাচ্ছিলেন না। কিন্তু রেখার নজর ছিল জয়ার ওপর।

অন্য এক জয়া আহসান

রেখা দেখেন পর্দাতে অমিতাভ ও তার ঘনিষ্ঠ দৃশ্য দেখতে দেখতে জয়ার দুই চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ছে। এসব নিয়ে কানাঘুষা শুরু হতেই অমিতাভের পরিবারে অশান্তি শুরু হয়। তার বাবা-মাও রেখার সঙ্গে তার সম্পর্কের বিরোধিতা করতে শুরু করেন। অমিতাভ এর পর রেখাকে এড়িয়ে চলতে শুরু করেন। কিন্তু রেখা তবুও অমিতাভকে ভুলতে পারছিলেন না।

এরপর কুলি ছবির সেটে দুর্ঘটনার পর রোজ হাসপাতালে তাকে দেখতে আসতেন রেখা। এসব দেখে জয়া একদিন রেখাকে নিমন্ত্রণ করে তার বাড়িতে ডেকে আনেন। ডিনার টেবিলে প্রকাশ্যে তিনি রেখাকে বলে দেন অমিতাভকে তিনি ছাড়বেন না। এর কয়েক দিন পর রেখা বিস্ফোরক মন্তব্য করে জানান পরিবার এবং সন্তানের কথা ভেবে অমিতাভ তার সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে চাইছেন না।

\হরেখার বলিউড ক্যারিয়ার একাধিক হিট সিনেমা দিয়ে সুসজ্জিত। বলি ক্যারিয়ারের পাশাপাশি রেখা চর্চায় আসেন বিগ বি অর্থাৎ অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে সম্পর্কের জন্য। এই নিয়ে মাঝে মাঝেই সোশ্যাল মিডিয়াতে চর্চার ঝড় ওঠে। তবে বিভিন্ন সম্পর্কে জড়ালেও বিয়ে করেননি অভিনেত্রী। তবে এই বিষয়টি মোটামুটি সবাই জানলেও খুব কম মানুষ জানেন যে অভিনেত্রী রেখা শুধু অমিতাভ বচ্চন নয়, বিনোদ মেহেরাসহ মোট ৭ জনের সঙ্গে নিজের নাম জড়িয়েছিলেন।

বলি ইন্ডাস্ট্রিতে অনেকেই জানেন যে এককালে রেখার সঙ্গে বেশ মাখোমাখো সম্পর্ক ছিল বিনোদ মেহেরার। অনেকেই বিনোদ মেহেরাকে রেখার প্রকৃত প্রেমিক মনে করত। এই যুগল বহুবার একসঙ্গে সময় কাটাতেন। দুজন একে অপরকে খুব ভালোবাসতেন। কিন্তু সূত্র মারফত জানা যায়, বিনোদের মা কখনোই চায়নি রেখা তার বাড়ির পুত্রবধূ হয়ে যাক। এমন পরিস্থিতিতে বিনোদের কাছে মা এবং রেখার মধ্যে একজনকে বেছে নেওয়ার অপশন দেওয়া হয়। অভিনেতা তখন নিজের মাকেই বেছে নেন। এর ফলে দুজনের প্রেম আর বিয়েতে রূপান্তরিত হয় না।

এরপর রেখা অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে সিলসিলা ছবিতে কাজ করেন। এই ছবিটির শুটিং চলাকালীন অমিতাভ-রেখা একে অপরের কাছে চলে আসেন। এমনকি এই সিনেমাতেই রেখার সঙ্গে অমিতাভ বচ্চনের একটি হানিমুনের দৃশ্য দেখানো হয়। অনেকেই মনে করেন এই সিনেমার পর থেকেই একে ওপরের প্রেমে পড়ে যান। এখন বছর কেটে গেল বলিউড ইন্ডাস্ট্রি থেকে রেখা অমিতাভের পরকীয়া প্রেম কাহিনির গল্প মুছে যায়নি।

অমিতাভ বচ্চন শুধু অভিনয়ের জন্য লাইমলাইটে থাকেন এমনটা কিন্তু মোটেই নয়। বিগ বির ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও প্রচুর কাটাছেঁড়াও হয়েছে। অমিতাভ বচ্চনের প্রেম কাহিনি নিয়ে অনেক জল্পনাও রয়েছে। রুপালি দুনিয়ার বেশ কিছু অভিনেত্রীর সঙ্গে অমিতাভের নাম জড়িয়েছিল। তবে রেখার সঙ্গে অমিতাভের সম্পর্ক নিয়ে সবচেয়ে বেশি চর্চা হয়েছে। এমনকি জয়া-অমিতাভের দাম্পত্যেও বহুবার উঠে এসেছে রেখার নাম। কিন্তু জানেন কী জয়া বা রেখা নয়, অমিতাভের ভালোবাসা ছিল অন্য এক নারী। তিনি আবার কলকাতার এক ব্রিটিশ সংস্থায় কর্মরত ছিলেন। তাকে বিয়েও করতে চেয়েছিলেন বিগ বি! অভিনয়ে আসার আগে ওই সংস্থায় অমিতাভও চাকরি করতেন। কিন্তু অমিতাভের প্রেমের প্রস্তাব খারিজ করে দেন। বেশ কয়েক বছর আগে অমিতাভের এক বন্ধু দৈনিক ভাস্করকে সাক্ষাৎকারে অমিতাভের প্রথম ভালোবাসার গল্প বলেছিলেন।