সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

লক্ষ্মীপুরে হত্যাচেষ্টা মামলায় ছাত্রলীগ নেতা কারাগারে 

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
  ১৮ মে ২০২৩, ১২:১০
ফাইল ছবি

লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে প্রবাসী তোফায়েলকে হত্যাচেষ্টা মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত ছাত্রলীগ নেতা হারুনুর রশিদ হারুনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

বুধবার (১৮) মে সকালে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পেশকার মিজানুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। হারুন কমলনগর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক।

পেশকার মিজানুর রহমান বলেন, হারুন হত্যাচেষ্টা মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ছিলেন। তিনি রায়ের দিন আদালতে উপস্থিত ছিলেন না।

মঙ্গলবার (১৬ মে) তিনি লক্ষ্মীপুর চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পন করেন। এসময় তিনি আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন আবেদন করেছেন। আদালতে বিচারক মোহাম্মদ মুমিনুল হাসান জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। বর্তমানে তিনি কারাগারে আছেন।

এরআগে ৭ মে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মোহাম্মদ মুমিনুল হাসান একটি হত্যাচেষ্টা মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ১৪৯/৩২৬ ধারায় হারুনকে ২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। একই সঙ্গে ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ১ মাসের সশ্রম কারাদণ্ডের এবং ১৪৩ ধারায় অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় আরও ৩ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

কমলনগর থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনের বিরুদ্ধে এর আগে চাঁদাবাজি ও জমি দখলের অভিয়োগে কমলনগর থানা ছাত্রলীগের কমিটি স্থগিত রাখা হয়েছিলো ২ মাস।

জেলা ছাত্রলীগের সাবেক এক সাংগঠনিক সম্পাদক নাম না প্রকাশ করার শর্তে জানান ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র মোতাবেক কোনা সাজাপ্রাপ্ত আসামী ছাত্রলীগের কোনো পদে থাকতে পারবা না। কিন্তু বর্তমান জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দন্ড প্রাপ্ত আসামী উপজেলা ছাত্রলীগের পদ আছে। তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহন না করা ইমেজ সংকটে পড়বে লক্ষ্মীপুর জেলা ছাত্রলীগ। মেধাবী ছাত্ররা ছাত্রলীগ করতে উৎসাহ হারিয়ে ফেলবে।

একই মামলায় হারুনের মামা চরলরেন্স ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য (মেম্বার) ও কমলনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ইসমাইল হোসেনকে ১৪৯/৩২৬ ধারায় ৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একইসঙ্গে ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ১ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ১৪৩ ধারায় অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় আরও ৩ মাসের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। ইসমাইল মামলার প্রধান আসামি। তিনি রায়ের সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এ মামলায় আরও ১২ আসামিকে ১ হাজার টাকা করে জরিমানা ও অনাদায়ে ১০ করে বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেয় আদালত।

রায়ের দিন কমলনগর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ হারুন সাংবাদিকদের বলেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জের ধরে মামলাটিতে আমার মামা ইসমাইলকে জড়িয়ে দেওয়া হয়। তার ভাগিনা হওয়ায় আমাকেও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আসামি করা হয়েছে। ঘটনার সময় আমি ঢাকায় ছিলাম। পরে মামলাটি মীমাংসা হয়েছিল। কিন্তু মীমাংসাকারীদের সাক্ষী আদালত নেয়নি।

এজাহার সূত্র জানায়, তোরাবগঞ্জ বাজারে কিছু মালামাল কিনতে গেলে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আসামিরা তোফায়েলের ওপর হামলা করে। আসামি ইসমাইল ধারালো রামদা দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে তোফায়েলের মাথায় আঘাত করে। দ্বিতীয় আসামি হারুন দা দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে তোফায়েলের কপালে কোপ দেয়। এ ঘটনায় অন্যান্য আসামিরাও তোফায়েলকে মারধর করে। পরে দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর তোফায়েল মারা যান। ২০১৭ সালের ১০ অক্টোবর তোফায়েলের স্ত্রী মিনরা বেগম বাদী হয়ে কমলনগর থানায় ১৫ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ১০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। ২০১৮ সালের ১৯ মার্চ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও কমলনগর থানার পিএসআই মোশারফ হোসেন আদালতে ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। দীর্ঘ শুনানী ও সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত আজ রায় প্রদান করেন।

লক্ষ্মীপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম রকি বলেন, ঘটনাটি আমাদের জানা আছে। আর হারুনের সাজার এই রায় চূড়ান্ত রায় না। হারুন আমাদেরকে বলছে এই রায়ে ক্রুটি আছে , সে আপিল করবে। সামনে আমাদের বর্ধিত সভা আছে সেখানে হারুনের বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে