সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

ক্যানসার যেভাবে শুরু হয়

যাযাদি ডেস্ক
  ২৯ অক্টোবর ২০২৩, ১৩:১৩

বিশ্বব্যাপী ক্যানসার আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। ২০২০ সালে পৃথিবীতে ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ৭ লাখ মানুষের মৃতু্য হয়েছে। মানুষের ক্যানসার নিয়ে দুশ্চিন্তার শেষ নেই। তবে ক্যানসার হলে আর বাঁচা সম্ভব নয়- এ ধারণাও সঠিক নয়। চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের দাবি, মারণব্যাধি এ ক্যানসার প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে বেশির ভাগ ক্যানসারেরই চিকিৎসা ও নিরাময় সম্ভব। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, ক্যানসারে ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ মৃতু্য প্রতিরোধ করা সম্ভব। যার অর্থ হলো আগে থেকেই সাবধান হওয়া।

ক্যানসার কী?

মানুষের শরীর অসংখ্য কোষ দ্বারা গঠিত। কোষগুলো ক্রমাগত বিভাজিত হতে থাকে। এটি একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া এবং এর ওপর শরীরের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। কিন্তু অনেক সময় যখন শরীরের কোনো নির্দিষ্ট অংশের কোষের ওপর শরীরের নিয়ন্ত্রণ নষ্ট হয়ে যায় এবং কোষগুলো হিসাবহীনভাবে বৃদ্ধি পেতে থাকে, তখন তাকে ক্যানসার বলে।

ক্যান্সার কীভাবে শুরু হয়?

মানবদেহে কোষের জিন পরিবর্তন হতে শুরু করলে ক্যানসার শুরু হয়। এমন নয় যে কোনো বিশেষ কারণে জিনের পরিবর্তন হচ্ছে, এটি নিজেও পরিবর্তন হতে পারে বা অন্য কারণেও হতে পারে, যেমন সিগারেট, অ্যালকোহল, গুল-তামাক, অতিবেগুনি রশ্মি বা বিকিরণ ইত্যাদির জন্য দায়ী হতে পারে।

ক্যানসারের কারণ

ক্যানসারের সুনির্দিষ্ট কারণ নেই। জীবনযাপন প্রণালি, পরিবেশ, খাদ্যাভ্যাস, ভৌগোলিক অবস্থান, বয়স, বংশানুক্রম, সিগারেট, অ্যালকোহল, গুল-তামাক, অতিবেগুনি রশ্মি বা বিকিরণ ও অতিরিক্ত ওজন ইত্যাদি বিষয় ক্যানসার সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখে।

ক্যানসারের লক্ষণ

১. দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি লাগা।

২. আকস্মিক ওজন হ্রাস।

৩. শরীরের কোনো অংশে অস্বাভাবিক মাংসপিন্ড, চাকা বা দলা হওয়া।

৪. ঘন ঘন জ্বর হওয়া।

৫. দীর্ঘস্থায়ী কাশি বা কাশির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।

৬. মলমূত্র ত্যাগের অভ্যাসে পরিবর্তন হওয়া অথবা মলমূত্রের সঙ্গে রক্ত যাওয়া

৭. মাসিকের রাস্তা দিয়ে অস্বাভাবিক রক্তপাত হওয়া।

৮. খাবার গ্রহণে রুচি না থাকা।

৯. খাবার গিলতে কষ্ট হওয়া বা গলায়ে খাবার আটকে যাওয়া, অল্প খাবার পর পেট ভারভার লাগা বা বমি হওয়া।

১০. মুখের ভেতর ঘা হওয়া।

১১. গলার স্বর পরিবর্তন হওয়া বা ভেঙে যাওয়া।

১২. কোনো কারণ ছাড়াই দীর্ঘদিন ধরে শরীরের কোনো অংশে যদি ব্যথা হয় আর তাতে ওষুধেও যদি কাজ না করে।

ক্যানসার প্রতিরোধের উপায়

১. চর্বিযুক্ত খাবার যেমন- গরুর মাংস, খাসির মাংস, কলিজা, দুধের সর ও চিংড়ি মাছ ইত্যাদি কম খেতে হবে।

২. প্রচুর পরিমাণে পানি, ফ্রেশ শাকসবজি ও ফলমূল বেশি করে খাবেন।

৩. তামাকজাতীয় দ্রব্য যেমন: ধূমপান, জর্দা, গুল, আলোয়া পরিহার করতে হবে।

৪. ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।

৫. নিয়মিত শরীরচর্চা যেমন- প্রতিদিন ৩০ মিনিট হাঁটতে হবে।

৬. স্ক্রিনিং টেস্ট- বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্ক্রিনিং পরীক্ষা রয়েছে- যা ক্যানসার থেকে রক্ষা করতে সহায়তা করতে পারে। এজন্য কোলন ক্যানসার, স্তন ক্যানসার, সার্ভিকাল ক্যানসার নিয়মিত পরীক্ষা করা উচিত। শুধু কলোরেক্টাল ক্যানসারের জন্য নিয়মিত স্ক্রিনিং প্রতি বছর ৩০ হাজারেরও বেশি জীবন বাঁচাতে পারে।

পৃথিবীতে অন্তত ২০০ ধরনের ক্যানসার রয়েছে। এর মধ্যে অনেকগুলোই রয়েছে যেগুলো আক্রান্ত হওয়ার পর মানুষের সুস্থ হওয়ার হার অনেক বেশি, যেমন- স্তন ক্যানসার ও প্রোস্টেট ক্যানসার। ফলে ভয় না পেয়ে দ্রম্নত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে