মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২

বঙ্গবন্ধুর ৫ খুনির তথ্য দিতে পারলে পুরস্কার দেবে সরকার 

যাযাদি ডেস্ক
  ১৫ আগস্ট ২০২৩, ০৯:৩৮
বঙ্গবন্ধুর ৫ খুনির তথ্য দিতে পারলে পুরস্কার দেবে সরকার 
বঙ্গবন্ধুর ৫ খুনির তথ্য দিতে পারলে পুরস্কার দেবে সরকার 

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ডে জড়িত ৫ পলাতক খুনি আজও অধরা। এই খুনিদের অবস্থানের তথ্য দিতে পারলে সরকারের পক্ষ থেকে তাকে পুরস্কৃত করা হবে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডক্টর এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর দুই খুনির খবর আমরা জানি।

একজন আমেরিকায় এবং আরেকজন কানাডায়। বাকি পাঁচজন সম্পর্কে আমরা কিছুই জানি না। যে এদের তথ্য দেবে সরকার তাকে পুরস্কৃত করবে।

সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাংবাদিক ফোরামের আয়োজনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করা খুনি রাশেদ চৌধুরীকে ফেরানোর প্রসঙ্গে মোমেন বলেন, ‘আমরা অনেক চিঠিপত্র দিয়েছি। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীকে দিয়েও আমরা আমেরিকার প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছি। কিন্তু তারা সব সময় বলে, এ ইস্যুটা তাদের অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিসে আছে। মাঝখানে অ্যাটর্নি জেনারেল আমাদের দেশে যে রাশেদ চৌধুরীর নামে মামলা হয়েছে তার বিস্তারিত তথ্য চেয়েছেন। আমরা সব তথ্য তাকে দিয়েছি। আমরা এখন স্টেট ডিপার্টমেন্টে অ্যাপ্রোস করলে তারা বলে, এটা অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসে।’

কানাডায় অবস্থান করা খুনি নূর চৌধুরী প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কানাডিয়ান সরকার তাকে ফেরত দিচ্ছে না। ওরা ফাঁসির রায় কার্যকর করে এমন দেশে খুনিদের পাঠায় না। এতে সব খুনিরা ওখানে গিয়ে আশ্রয় নেবে।’

রাশেদ-নূরকে না ফেরত দেওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র-কানাডার সমালোচনা করে মন্ত্রী বলেন, ‘কানাডা-যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশ যেখানে আইন অত্যন্ত শক্তিশালী, সেখানে তারা খুনিদের আশ্রয় দিতে পারে না। যে খুনিরা কিনা ভয়ংকর কাজ করেছে।’

যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা প্রবাসী বাংলাদেশিদের উদ্দেশে মোমেন বলেন, ‘প্রবাসীদের বলব, খুনিরা দিব্বি ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আপনারা খুনির বাড়ির সামনে গিয়ে প্রতিবাদ করেন। অন্তত মাসে একবার হলেও এটা ঘটা করে করেন, তাদের দেখলে বলেন- ‘‘খুনি যাচ্ছে’’। এতে করে তারা মনঃপীড়ায় পড়বে। ওখানকার সাংবাদিকদের নিয়ে আপনারা আন্দোলন করেন।’ বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ফেরাতে সরকার সব ধরনের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে বলেও জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

প্রসঙ্গত, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১২ খুনির মধ্যে ২০১০ সালের ২৮ জানুয়ারি লে. কর্নেল সৈয়দ ফারুক রহমান, লে. কর্নেল সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান, মেজর বজলুল হুদা, লে. কর্নেল মহিউদ্দিন আহমেদ (আর্টিলারি) ও লে. কর্নেল এ কে এম মহিউদ্দিন আহমেদের (ল্যান্সার) মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়। খুনি আব্দুল মাজেদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয় ২০২০ সালের ১১ এপ্রিল দিবাগত রাতে। অন্য খুনি আজিজ পাশা ২০০১ সালে জিম্বাবুয়েতে পলাতক অবস্থায় মারা যান। বাকি পাঁচ খুনি এখনো পলাতক। এদের মধ্যে রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। আর কানাডায় আছেন নূর চৌধুরী। এদিকে খন্দকার আব্দুর রশিদ, শরীফুল হক ডালিম ও মোসলেম উদ্দিনের সন্ধান নেই সরকারের কাছে। যদিও তাদের গ্রেপ্তারে ইন্টারপোলের পরোয়ানা জারি রয়েছে।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানই বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর সবচেয়ে বেশি সুবিধাভোগী ছিলেন মন্তব্য করে আলোচনা সভায় আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ডক্টর হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যায় নেপথ্যের কুশীলব কারা ছিল, তা উন্মোচন করা এখন সময়ের দাবি। তা করতে না পারলে ইতিহাসে এ বিষয়টি অধরাই থেকে যাবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে।’

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে প্রতিটি মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে তখন নানামুখী ষড়যন্ত্র চলছে।’ বিএনপির সমালোচনা করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিদেশিদের পেছনে ঘুরে কোনো লাভ হয়নি তাদের। তাই তারা এখন ভিন্ন সুরে কথা বলছে। বিদেশে লবিস্ট নিয়োগ করে তারা বিবৃতি আনে, মার্কিন কংগ্রেসম্যানদের কাছে দেশটির দেওয়া বিবৃতি সম্পর্কে জানতে চাইলে, তারা বলেছেন কিছু জানেন না এ বিষয়ে।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সম্প্রতি জঙ্গি আটক হবার পর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বললেন- আন্দোলনে মানুষের দৃষ্টি অন্যদিকে নেওয়ার জন্য নাকি জঙ্গি নাটক করা হয়েছে। যেমন চেয়ারম্যান তেমন মহাসচিব। যখন জঙ্গিদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছিল তখন খালেদা জিয়া বলেছিলেন, কিছু মানুষকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয় কিছুদিন আটক রাখা হয় তারপরে যখন তাদের চুল দাড়ি লম্বা হয় তাদের জঙ্গি আখ্যা দেওয়া হয়। একইভাবে এখন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলছেন মানুষের দৃষ্টি অন্যদিকে নেওয়ার জন্য জঙ্গি নাটক সাজানো হচ্ছে। এসব ঘটনাতেই প্রমাণিত হয় জঙ্গিদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক হচ্ছে বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম ও বিএনপির নেতারা।’

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে