সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
অ্যান্টার্কটিকা

উষ্ণ পানিতে গলতে শুরু করেছে থোয়াইটস হিমবাহ

পুরোপুরি গলে গেলে বিশ্বজুড়ে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা আধা মিটারের বেশি বেড়ে যেতে পারে
যাযাদি ডেস্ক
  ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০

বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বেড়েছে সমুদ্রের পানির ?উষ্ণতা। আর সেই পানি প্রবেশ করায় অ্যান্টার্কটিকার দৈত্যাকার থোয়াইটস হিমবাহের দুর্বল অংশগুলো গলতে শুরু করেছে। ক্রমশ বাড়তে থাকা তাপমাত্রা এই হিমবাহের গলে যাওয়াকে ত্বরান্বিত করছে। ব্রিটিশ জার্নাল নেচারে প্রকাশিত দুটি গবেষণাপত্র এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। সংবাদসূত্র : ডিডাবিস্নউ নিউজ, এপি, রয়টার্স

এই হিমবাহকে 'কেয়ামতের হিমবাহ' বলেও ডাকা হয়। এটি পুরোপুরি গলে গেলে বিশ্বজুড়ে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা আধা মিটারের (১.৬ ফুট) বেশি বেড়ে যেতে পারে।

তবে এই হিমবাহ গলতে কয়েকশ বছর সময় লেগে যাবে বলে ধারণা করছেন গবেষকরা। তাদের দাবি, এই হিমবাহ গলে গেলে তা আশপাশের অন্য হিমবাহগুলোকেও অস্থিতিশীল করে তুলবে। সেগুলো গলে গেলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা আরও তিন মিটার বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে।

নেচারের গবেষণা বলছে, ২০১৯ ও ২০২০ সালে প্রায় ছয় সপ্তাহের মতো এই হিমবাহে অবস্থান করে গবেষণা চালিয়েছে ১৩ জন মার্কিন ও ব্রিটিশ বিজ্ঞানীর একটি দল। 'আইসফিন' নামে পরিচিত পানির নিচে চলাচলে সক্ষম রোবটযানের মাধ্যমে গবেষকরা বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করেন। তাছাড়া ওই যন্ত্রের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো, যেখান থেকে হিমবাহের বরফ গলে সমুদ্রে মিশছে, সেই স্থানের তথ্য সংগ্রহ করা হয়।

এর আগে বিজ্ঞানীদের কাছে থোয়াইট হিমবাহের গভীর এই অংশ নিয়ে কোনো তথ্য ছিল না। তবে আইসফিনের বদৌলতে এবারই প্রথম ৫৮৭ মিটার গভীরের চিত্র সামনে এসেছে। সেখানে হিমবাহের চিড় যে কতটা ভয়াবহ, সে সম্পর্কে ধারণা পাওয়া গেছে।

বিশ্বের হিমবাহগুলো সম্পর্কে আরও বেশি ধারণা পাওয়ার জন্য চালানো এই গবেষণার প্রকল্পটি বেশ ব্যয়বহুল। এর পেছনে খরচ হয়েছে প্রায় চার কোটি সাত লাখ ইউরো (প্রায় ৫৩০ কোটি টাকা)।

কর্নওয়াল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী ব্রিটনি স্মিডট একটি গবেষণাপত্রে লিখেছেন, এসব চিড়ে উষ্ণ পানি জমা হওয়ায় খুব দ্রম্নত হিমবাহ গলে যাচ্ছে। প্রতি বছর ৩০ মিটার করে বরফ গলছে বলে জানান তিনি। স্মিডট ব্যাখ্যা দেন, উষ্ণ পানি হিমবাহের সবচেয়ে দুর্বল অংশগুলোয় প্রবেশ করছে ও পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করে তুলছে। বিষয়টি নিয়ে এখনই আমাদের সবার সচেতন হওয়া উচিত।

জানা গেছে, স্মিডট আরেকটা গবেষণাপত্র নিয়ে কাজ করছেন। সেটিতে বলা হয়েছে, হিমবাহটির বরফ যেখান থেকে সমুদ্রে মিশেছে, সেখানকার বরফ বছরে পাঁচ মিটার করে গলে যাচ্ছে। স্মিডটের দাবি, যা ধারণা করা হয়েছিল, তার চেয়ে পরিস্থিতি কিছুটা ভালো। তবে বরফ গলার হার কমার মানে এই নয় যে, তা থেমে যাচ্ছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে