সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ

শস্যচুক্তি বাতিলের হুমকি মস্কোর

যাযাদি ডেস্ক
  ২৬ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০

বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ অর্থনৈতিক জোট জি-৭ সদস্যরা যদি রাশিয়ার আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের ওপর পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি করে, সেক্ষেত্রে ইউক্রেনের সঙ্গে স্বাক্ষরিত শস্যচুক্তি বাতিল করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে মস্কো। সোমবার রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বর্তমানে দেশটির সর্বোচ্চ নিরাপত্তা সংস্থা 'রাশিয়ান সিকিউরিটি কাউন্সিল'র উপপ্রধান দিমিত্রি মেদভেদেভ এই সতর্কবার্তা দিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম 'টেলিগ্রামে' পোস্ট করা এক বার্তায় মেদভেদেভ বলেন, 'জি-৭ জোটের নির্বোধরা এখন সুন্দর এক সুখস্বপ্নে ডুবে আছে। তারা রাশিয়ার আমদানি-রপ্তানির ওপর পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি করতে চায়। রাশিয়ার অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দেওয়ার জন্য এটা তাদের নতুন ফন্দি।' সংবাদসূত্র : রয়টার্স

মেদভেদেভ বলেন, 'আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, যদি জি-৭ যদি সত্যিই এ ধরনের কোনো পদক্ষেপ নেয়, সঙ্গে সঙ্গে আমরা শস্যচুক্তি থেকে সরে আসব; সেই সঙ্গে আরও কিছু পদক্ষেপ আমরা নেব, যেগুলো তাদের পুরোপুরি শেষ করে দেবে।'

গত সপ্তাহে নিজ দেশের সূত্রের বরাত দিয়ে জাপানি বার্তা সংস্থা 'কিওদো নিউজ এজেন্সি'তে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুসারে, জি-৭ জোটভুক্ত সাত দেশ- আমেরিকা, যুক্তরাজ্য, কানাডা, জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি ও জাপান রাশিয়ার আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের ওপর পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারির পরিকল্পনা করছে। প্রতিবেদনটির প্রতিক্রিয়াতেই সোমবার এই হুঁশিয়ারি দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভস্নাদিমির পুতিনের অন্যতম ঘনিষ্ঠ ও বিশ্বাসভাজন দিমিত্রি মেদভেদেভ।

বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ গম উৎপাদনকারী দেশ ইউক্রেন ইউরোপের 'রুটির ঝুড়ি' নামেও পরিচিত। ইউরোপের ২৭টি দেশসহ বিশ্বের একাধিক দেশ গম ও সূর্যমুখী বীজের তেলের জন্য ইউক্রেনের ওপর প্রায় পুরোপুরি নির্ভরশীল। কিন্তু ২০২২ সালের ২৬ ফেব্রম্নয়ারি রুশ বাহিনী ইউক্রেনে সামারিক অভিযান শুরুর পর থেকে দেশটি থেকে গম ও সূর্যমুখী তেলের চালান আসা বন্ধ হয়ে যায়। ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে হু হু করে বাড়তে থাকে গম ও ভোজ্য তেলের দাম। প্রায় পাঁচ মাস এই অবস্থা চলার পর জাতিসংঘ ও তুরস্কের উদ্যোগে শস্য রপ্তানি চুক্তি স্বাক্ষর করে রাশিয়া ও ইউক্রেন। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, যতদিন এই চুক্তির মেয়াদ থাকবে, ততদিন কৃষ্ণসাগর দিয়ে ইউক্রেনের গমবাহী বাণিজ্যিক জাহাজগুলো নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারবে। রুশ বাহিনী এক্ষেত্রে কোনো বাধা দেবে না। শুরুতে তিন মাস থাকলেও পরে আরও দুই দফায় বাড়ানো হয় চুক্তির মেয়াদ। আগামী ১৮ তারিখ সেই মেয়াদ শেষ হচ্ছে।

দিনিপার নদীর পূর্ব তীরে নিয়মিত হানা

দিচ্ছে ইউক্রেনীয় বাহিনী

এদিকে, দিনিপার নদীর পশ্চিম তীর থেকে ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী রাশিয়ার দখলকৃত খেরসন শহরে পূর্ব তীরে নিয়মিত হানা দিচ্ছে। মঙ্গলবার ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা এই দাবি করেছেন। ধারণা করা হচ্ছে, তারা রুশ সেনাদের আরও নদীর তীর থেকে আরও দূরে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে।

গত বছর ফেব্রম্নয়ারিতে আক্রমণের পর কয়েক মাস দিনিপার নদীর পশ্চিম ও পূর্ব পাশ দখলে ছিল রুশ সেনাবাহিনীর। কিন্তু গত বছর নভেম্বরের দিকে নদীর পশ্চিম তীর থেকে নিজেদের সেনা প্রত্যাহার করে পূর্ব তীরে নিয়ে যায়। পশ্চিম তীর পুনরুদ্ধার করে ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী।

এমন সময় রুশ অবস্থানে ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর হানা দেওয়ার খবর সামনে এলো, যখন পশ্চিমা ও ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা একটি সম্ভাব্য পাল্টা আক্রমণের বিষয়ে কথা বলে আসছেন। খেরসন আঞ্চলিক প্রশাসনের উপ-প্রধান ইউরি সোবোলেভস্কি বলেছেন, অভিযানগুলোর লক্ষ্য হলো রাশিয়ার সেনাদের যুদ্ধ করার সক্ষমতা কমিয়ে দেওয়া। পশ্চিম তীর ছেড়ে যাওয়ার পর থেকে রুশ সেনারা গোলাবর্ষণ অব্যাহত রেখেছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে