সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
রহস্য রয়েই গেল

বিষপ্রয়োগের ২৯ বছর পর মারা গেলেন চীনের নারী

যে সময় তার শরীরে থ্যালিয়াম প্রয়োগ করা হয়, সে সময় তিনি শিক্ষার্থী ছিলেন
যাযাদি ডেস্ক
  ২৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০
ছাত্রাবস্থায় ও পরে বিষক্রিয়ার শিকার ঝু লিং

বিষপ্রয়োগের ২৯ বছর পর পক্ষাঘাতগ্রস্ত অবস্থায় মারা গেলেন ঝু লিং নামের এক চীনা নারী। শুক্রবার ৫০ বছর বয়সে তার মৃতু্য হয়। তার মৃতু্যর ফলে তাকে বিষপ্রেয়োগের বিষয়টি '৩০ বছর' পরও রহস্যময় থেকে গেল।

১৯৯৪ সালে ২০ বছর বয়সে ভয়ংকর রাসায়নিক থ্যালিয়াম প্রয়োগের শিকার হন ঝু লিং। যে সময় তার শরীরে থ্যালিয়াম প্রয়োগ করা হয়, সে সময় তিনি বেইজিংয়ের সিনহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়নের শিক্ষার্থী ছিলেন।

ওই বছরের শেষদিকে হঠাৎ করেই পেট ব্যথা ও চুলপড়া শুরু হয় ঝু লিংয়ের। এর কয়েক মাস পরই কোমায় চলে যান তিনি। পরে চিকিৎসকরা তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে থ্যালিয়াম নামক ধাতুর অস্তিত্ব পান, যা মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।

স্বাদ-গন্ধহীন বিষজাতীয় এই ধাতুটি পানিতে মিশে যায়। থ্যালিয়ামের উপস্থিতির কারণে ঝু লিংয়ের শরীরের বামদিক অসাড় হয়ে যায়। মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে একপ্রকার অন্ধও হয়ে যান তিনি। দীর্ঘ ২৯ বছর ধরে ঝুং লি'র যত্ন নিতেন তার মা-বাবা।

বিষপ্রয়োগের ঘটনায় ওই বছরই মামলা হয়। তবে মামলা হলেও কে, কীভাবে ও কেন বিষপ্রয়োগ করেছিল, তা আজও জানা যায়নি। আশ্চর্যের বিষয় হলো- ওই মামলায় কাউকে অভিযুক্ত পর্যন্ত করা হয়নি। এমনকি, ঝু লিংয়ের সহপাঠী ও তৎকালীন রুমমেট সান ওয়েইর বিরুদ্ধে তদন্ত হলেও তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আনা হয়নি। ১৯৯৭ সালে সানের বিরুদ্ধে পুলিশ তদন্ত শুরু করলেও প্রমাণের অভাবে তাকে শুধুমাত্র সন্দেহভাজন হিসেবে দেখিয়ে তদন্ত শেষ করা হয়। পরে সামাজিক যোগাযোগেরমাধ্যমে বারবার নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন সান। এমনকি, নিজের নামও পরিবর্তন করেছেন তিনি।

ঝু লিং-এর সৌন্দর্য, গান গাওয়ার দক্ষতা ও পড়ালেখায় অত্যন্ত ভালো হওয়ার কারণে ঈর্ষান্বিত ছিলেন সান, এমনটাই দাবি ঝু-এর পরিবার ও সমর্থকদের। তবে এই ব্যক্তিগত শত্রম্নতা অস্বীকার করেছেন সান। থ্যালিয়াম রাখার জায়গাটিতে যাওয়ার অনুমতি ছিল সানের। তবে সান বলছেন, এই অনুমতি আরও কয়েকজন শিক্ষার্থীর ছিল।

২০১৩ সালে এক পিটিশনে আমেরিকায় বসবাসরত সানের বিরুদ্ধে তদন্ত করে তাকে সেই দেশ থেকে বের করে দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছিল। ওই পিটিশনে সানের পরিবারের শক্তিশালী রাজনৈতিক প্রভাব রয়েছে বলেও উলেস্নখ করা হয়েছিল। অভিযোগ করা হয়, সানের বিষাক্ত রাসায়নিকের কাছে যাওয়ার অনুমতি ছিল এবং তার উদ্দেশ্য খারাপ ছিল।

তবে হোয়াইট হাউস ওই পিটিশনের লিখিত প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলে, তারা এই আহ্বানের বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি নয়। তবে ঝু লিংকে বিষপ্রয়োগের ঘটনা দুঃখজনক। বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবর থেকে জানা গেছে, সানের দাদা সান ইউইকি একজন জ্যেষ্ঠ চীনা কর্মকর্তা ছিলেন। এ ছাড়া বেইজিংয়ের সাবেক ভাইস মেয়রও সানের আত্মীয়। এসব কারণেই বেঁচে গেছেন তিনি। সংবাদসূত্র : বিবিসি

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে