শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বাঙালির আশ্রয়স্থল শেখ হাসিনা

জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সামাজিক ও রাজনৈতিক জীবনে এবং প্রাকৃতিক যে কোনো দুর্যোগ দুর্বিপাকে ধীরস্থিরভাবে নিঃশঙ্ক চিত্তে এগিয়ে যাচ্ছেন দেশরত্ন শেখ হাসিনা। সময়ের সবচেয়ে যৌক্তিক ও কার্যকর পরামর্শ ও দিকনির্দেশনাটি আসে শুধু তার মস্তিষ্ক থেকেই। তাই আজ বলতে দ্বিধা নেই, শেখ হাসিনা আজ বাঙালির ভরসার আশ্রয়স্থল।
ড. মো. মোজাম্মেল হক খান
  ১৬ জানুয়ারি ২০২১, ০০:০০

একজন সফল রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে শেখ হাসিনার অবদান আজ আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। ইতোমধ্যে তিনি গণতন্ত্র, স্বাস্থ্য ও শিশু মৃতু্যর হার হ্রাস, তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার, দারিদ্র্য বিমোচন, উন্নয়ন এবং দেশে দেশে জাতিতে জাতিতে সৌভ্রাতৃত্ব, সম্প্রীতি ও শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য আন্তর্জাতিকভাবে বিভিন্ন খেতাব আর সম্মানে ভূষিত হয়েছেন। মর্যাদাপূর্ণ অসংখ্য পদক, পুরস্কার ও স্বীকৃতির পালক এখন শেখ হাসিনার মুকুটে একের পর এক যুক্ত হচ্ছে।

বঙ্গবন্ধুর যোগ্য কন্যা গ্রামবাংলার ধুলোমাটি আর সাধারণ মানুষের সঙ্গে বেড়ে উঠা। রাজনৈতিক পরিবারে জন্ম নেওয়ায় কিশোর বয়স থেকেই তার রাজনীতিতে পদচারণা। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে ছাত্রলীগের নেত্রী হিসেবে তিনি আইয়ুববিরোধী আন্দোলন ও ৬ দফা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। বর্তমান বদরুন্নেছা গার্লস কলেজ তৎকালীন ঢাকার ইন্টারমিডিয়েট গভ. গার্লস কলেজে অধ্যয়নকালে তিনি কলেজ ছাত্রী সংসদের (ভিপি) পদে নির্বাচিত হন।

১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধু উত্থাপিত ৬-দফা দাবিতে তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানে এক অভূতপূর্ব জাতীয় জাগরণ সৃষ্টি হয়। শাসকগোষ্ঠী ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার করে। শুরু হয় প্রচন্ড দমন-নির্যাতন। আটক থাকা অবস্থাতেই বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী দায়ের করে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা। তার জীবন ও পরিবারের ওপর নেমে আসে গভীর শঙ্কা ও দুঃসহ দুঃখ-কষ্ট। এই ঝড়ো দিনগুলোতেই কারাবন্দি পিতা বঙ্গবন্ধুর আগ্রহে পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার সঙ্গে শেখ হাসিনা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন ১৯৬৮ সালে। বিয়ের কিছুদিন পর শুরু হয় ১১-দফা আন্দোলন, ৬৯-এর গণঅভু্যত্থান। শেখ হাসিনা ছাত্রলীগ নেত্রী হিসেবে সেখানেও সক্রিয়ভাবে অংশ নেন।

১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বর্বরোচিত ও কলঙ্কিত একটি অধ্যায় রচনা করে কিছু কুলাঙ্গার আর মীর জাফরেরা। ভয়াবহ সেই ১৫ আগস্ট কালরাতে ঘাতকের নির্মম বুলেটে বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তার পরিবার পরিজনদের নির্মমভাবে হত্যা করে। ছোট্ট শিশু রাসেলসহ বঙ্গবন্ধুর অন্তঃসত্ত্বা পুত্রবধূকেও ওই হায়েনার দল বাঁচতে দেয়নি। এ সময় বিদেশে থাকায় বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। খুনি ও তাদের দোসররা ইতিহাস থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম-নিশানা মুছে ফেলার অপচেষ্টা করেছে বারবার। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা এবং ৩ নভেম্বর জাতীয় চার নেতাকে হত্যার পর নেতৃত্বশূন্যতায় পড়ে আওয়ামী লীগ। এই শূন্যতা থেকেই দলের মধ্যে একাধিক ভাঙন, গ্রম্নপিং ও বহু ধারায় বিভক্ত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় দেশি-বিদেশি চক্র। এই দুঃসময়ে জোহরা তাজউদ্দীন দলের হাল ধরে সারাদেশ ঘুরে ঘুরে নেতাকর্মীদের সংগঠিত করেন। নেতৃত্ব ও ক্ষুদ্র স্বার্থের কোন্দলে ভাঙন ধরে দলে। শুরু হয় ব্রাকেট রাজনীতির। এ ব্রাকেটের রাজনীতির শিকার দ্বিধাবিভক্ত আওয়ামী লীগেকে মূল ধারায় ফিরিয়ে আনার স্বার্থে আওয়ামী লীগের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে জাতির এক ক্রান্তিলগ্নে শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে তাকে দলের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। ডাক আসে দেশমাতৃকার হাল ধরার। সামরিক শাসকদের রক্তচক্ষু ও নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ১৯৮১ সালের ১৭ মে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন শেখ হাসিনা। এরপর দীর্ঘ ১৬ বছর সামরিক জান্তা ও স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে চলে তার একটানা অকুতোভয় সংগ্রাম। জেল-জুলম, অত্যাচার কোনোকিছুই তাকে তার পথ থেকে একবিন্দু টলাতে পারেনি। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে বাংলার আকাশে-বাতাসে বিদ্রোহের আগুন জ্বলে ওঠে। সে সময় গৃহবন্দি করা হয় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে। দেশে ফিরে আসার পর তিনি ঘোষণা দেন স্বৈরশাসকের অবসান ঘটিয়ে গণতন্ত্র কায়েম করতে হবে। সেই লক্ষ্যে তার নেতৃত্বে দুর্বার আন্দোলনের সূচনা হয়। সব বিরোধীদল স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে শরিক হয়, যার মূল

নেতৃত্বে থাকেন শেখ হসিনা। সফল আন্দোলনে পতন ঘটে স্বৈরশাসকের।

১৯৯৬ সালের ১২ জুনের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয়ের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনা প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। তার সরকারের আমলেই ভারতের সঙ্গে ঐতিহাসিক গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

১৯৭৫ সালে জাতির পিতার নৃশংস হত্যাকান্ডের পর পার্বত্য চট্টগ্রামে একের পর এক রক্তক্ষয়ী সংঘাতের সূত্রপাত হয়। বেপরোয়া হয়ে ওঠে পাহাড়ি-বাঙালি। মুখোমুখি অবস্থানের কারণে হত্যা, অপহরণ, সহিংসতা, উত্তেজনা বাড়তে বাড়তে যখন চরমে তখন শান্তির দূত হয়ে এগিয়ে আসেন বঙ্গকন্যা শেখ হাসিনা। পার্বত্য অঞ্চলের শান্তির জন্য জনসংহতি সমিতির সঙ্গে ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর ঐতিহাসিক পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এর ফলে প্রায় সুদীর্ঘ ২২ বছরের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের অবসান হয়। ফলে পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে বইতে থাকে শান্তির সুবাতাস এবং গড়ে ওঠে সম্প্রীতির সেতুবন্ধনের এক মিলনমেলা। দেশটির কোনো অঞ্চলকে যে পিছিয়ে রেখে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন সাধিত হয় না, এ উপলব্ধি এবং সাহসী পদক্ষেপ রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনারই চিন্তার ফসল হচ্ছে ঐতিহাসিক পার্বত্য শান্তিচুক্তি। সে প্রেক্ষাপটে ১৯৯৮ সালের ১০ ফেব্রম্নয়ারি অশান্ত পাহাড়ি ও শান্তিবাহিনীর সদস্যরা শান্তির দূত মাতা বঙ্গকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে বিপুলসংখ্যক অস্ত্র জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ করেছিলেন।

শান্তিচুক্তির ফলে পাহাড়ে যোগাযোগব্যবস্থার অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়। সময়ের সাহসী নারী জননেত্রী শেখ হাসিনার কারণে আজ অশান্ত পাহাড়ে শান্তির সুবাতাস বইছে। পাহাড়ি অঞ্চলে সব পেশার মানুষ তাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে। পর্যটনশিল্পের বিকাশ ঘটছে। স্থানীয় অর্থনীতিও বিকশিত হচ্ছে, যার সুফল আজ গোটা জাতি ভোগ করছে। সামাজিক কর্মকান্ড, শান্তি ও স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য শেখ হাসিনাকে বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থা সম্মানিত করেছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে সুদীর্ঘ ২৫ বছরের গৃহযুদ্ধ অবসানের জন্য শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর ও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে শেখ হাসিনার অসামান্য ও অভাবনীয় অবদানের জন্য ১৯৯৮ সালে ইউনেস্কো তাকে 'হুপে-বোয়ানি' শান্তি পুরস্কারে ভূষিত করে।

রাষ্ট্রনায়ক থেকে বিশ্বনেতা হয়ে ওঠার যে ম্যাজিক তিনি বিশ্বকে দেখিয়েছেন তা এখন উন্নত বিশ্বে শেখ হাসিনা উন্নয়নের রোল মডেলে রূপ নিয়েছে। বাংলাদেশ এখন অর্জন করেছে খাদ্যে স্বয়ংসম্পপূর্ণতা। প্রবৃদ্ধির হার ৬ দশমিক ৪ শতাংশ ছাড়িয়েছে। যা বর্তমানে ৭ দশমিক ৯ শতাংশ। মুদ্রাস্ফীতি নেমে আসে ১ দশমিক ৫৯ শতাংশে। দারিদ্র্য বিমোচন, খাদ্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, ক্রীড়াসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে উন্নয়ন সূচকের প্রবৃদ্ধির ফলে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। এ কারণেই বাংলাদেশের ইতিহাসে শেখ হাসিনার প্রথমবারের (১৯৯৬-২০০১) শাসনকাল চিহ্নিত হয় স্বর্ণযুগ হিসেবে।

২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয়ে যাওয়া নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনার নিখুঁত নেতৃত্বে অর্জিত হয় ঐতিহাসিক বিজয়। এককভাবে আওয়ামী লীগই লাভ করে তিন-চতুর্থাংশের বেশি আসন। ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি দ্বিতীয়বারের মতো দেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বভার গ্রহণ করেন তিনি। গঠিত হয় মহাজোট সরকার। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে দেশে ফিরিয়ে আনেন সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা এবং শেখ হাসিনা তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের মাধ্যমে রেকর্ড সৃষ্টি করে তিনি চতুর্থবারের মতো দেশ পরিচালনার সুযোগ পেয়েছেন। তার গৃহীত পদক্ষেপে দেশবাসী আজ তার সুফল পাচ্ছে। অমিত সম্ভাবনার দেশ হিসেবে বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে অপ্রতিরোধ্য গতিতে।

এক বর্ণাঢ্য সংগ্রামমুখর কণ্টকাকীর্ণ পিচ্ছিল পথ অতিক্রম করা নীলকণ্ঠীর ন্যায় জীবন পাড়ি দিয়ে বিশ্ব নেতৃত্বে আলোকবর্তিকায় রূপ নেওয়ার নাম হলো শেখ হাসিনা। মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাস তিনি গৃহবন্দি থেকেছেন। সামরিক স্বৈরশাসনামলেও বেশ কয়েকবার তাকে কারাভোগ ও গৃহবন্দি থাকতে হয়েছে। বারবার তার জীবনের ওপর ঝুঁকি এসেছে। অন্তত ১৯ বার তাকে হত্যার অপচেষ্টা করা হয়েছে! কিন্তু সৃষ্টিকর্তার অপার কৃপায় কুচক্রীদের সব মরণ ফাঁদ ভেদ করে জীবনের ঝুঁকি নিয়েও তিনি অসীম সাহসে তার লক্ষ্য অর্জনে থেকেছেন দৃঢ় অবিচল।

সহজ সারল্যে ভরা তার ব্যক্তিগত জীবন। মেধা-মনন, কঠোর পরিশ্রম, সাহস, ধৈর্য, দেশপ্রেম ও ত্যাগের আদর্শে গড়ে উঠেছে তার ব্যক্তিত্ব। অসাধারণ আদর্শ ও পোশাকে-আশাকে চলনে-বলনে, জীবনযাত্রায় কোথাও বিলাসিতা বা কৃত্রিমতার কোনো ছাপ নেই। এই মমতাময়ী কালজয়ী জননেত্রী থেকে বিশ্বনেত্রী হওয়াটা মহান সৃষ্টিকর্তার অপার দয়া ও মানুষের ভালোবাসাটাই তার বড় শক্তি। অসংখ্য গুণে গুণান্বিত বিশ্ব মানবতার নেত্রী শেখ হাসিনা এক দিকে যেমন রাষ্ট্রীয় কাজে নিষ্ঠাবান অন্য দিকে প্রচন্ড ধার্মিক ও সততার মূর্ত প্রতীক। তিনি নিয়মিত ফজরের নামাজ ও কোরআন তেলওয়াতের মাধ্যমে তার দিনের কর্মারম্ভ করেন। পবিত্র হজ্বব্রত পালন করেছেন বেশ কয়েকবার। এই পবিত্র নারীই আমাদের প্রাণপ্রিয় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

নিখাদ দেশপ্রেম, দূরদর্শিতা, দৃঢ়চেতা মানসিকতা ও মানবিক গুণাবলিসমৃদ্ধ জীবনমান তাকে আসীন করেছে বিশ্ব নেতৃত্বের আসনে। একবিংশ শতাব্দীর অভিযাত্রায় দিন বদলের মাধ্যমে আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার সুনিপুণ কারিগর শেখ হাসিনা।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে স্বপ্ন দেখতেন সেই স্বপ্ন আজ বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ করেছে তার জাদুকরী নেতৃত্বে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করে বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থা, নেতৃবৃন্দ ও গণমাধ্যম নানাবিধ উপাধি দিয়েছেন। সেগুলোর কিছু এখানে তুলে ধরা হলো- 'লেডি অব ঢাকা'-যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রভাবশালী বিজনেস ম্যাগাজিন 'ফোর্বস'। 'মাদার অব হিউম্যানিটি'-ব্রিটিশ মিডিয়া। 'কারিশম্যাটিক লিডার'-মিশরের রাষ্ট্রদূত মাহামুদ ইজ্জত। 'প্রাচ্যের নতুন তারকা'-সংযুক্ত আরব আমিরাতের সংবাদপত্র খালিজ টাইমস। 'বিশ্বের নেতা'-ভারতের বিজেপির ভাইস প্রেসিডেন্ট ও সংসদ সদস্য ড. বিনয় প্রভাকর। 'নারী অধিকারের স্তম্ভ'-কানাডার আন্তর্জাতিক উন্নয়নমন্ত্রী মেরি ক্লড বিবেউ। 'বিশ্ব শান্তির দূত'-কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পিস স্ট্যাডিস বিভাগের তিন শিক্ষক। 'মানবিক বিশ্বের প্রধান নেতা'-অক্সফোর্ড নেটওয়ার্ক অফ পিস নামক সংস্থা। 'জোয়ান অফ আর্ক'- শ্রীলঙ্কা গার্ডিয়ান। 'বিশ্ব মানবতার আলোকবর্তিকা'- নোবেল বিজয়ী কৈলাশ সত্যর্থী। 'বিশ্ব মানবতার বিবেক'-কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট জুয়ান ম্যানুয়েল সন্তোস। 'বিরল মানবতাবাদী নেতা'-তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। এছাড়া তার কর্মদক্ষতা ও মহানুভবতার জন্য তিনি বিশ্ববাসীর কাছ থেকে অসংখ্য পদক ও সম্মাননা পেয়েছেন। সম্মাননা আর পদকের স্বীকৃতি বহরে বিশ্ব বরেণ্য নেতা শেখ হাসিনার জন্য নোবেল বিজয়ের অপেক্ষা এখন সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে।

শেখ হাসিনা বারবার বুলেট ও গ্রেনেডের মুখ থেকে বেঁচে ফেরা এক বহ্নিশিখা। তিনি তার জীবনকে বাংলার মেহনতি দুঃখী মানষের কল্যাণে উৎসর্গ করে এগিয়ে যাচ্ছেন বিশ্ব মানবতার দিকে দুর্বার গতিতে। গণ মানুষের কল্যাণই তার রাজনীতির মূল দর্শন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনককে হত্যার পর ১৯৮১ সালের শুরুতে দলের দায়িত্ব নিয়ে দলকে তিনি শুধু চারবার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায়ই আনেননি। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে যেমনি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ তেমনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় একটি উদার, গণতান্ত্রিক ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি এখন তিনি।

শত বাধা-বিপত্তি এবং হত্যার হুমকিসহ নানা প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে শেখ হাসিনা ভাত-ভোট এবং সাধারণ মানুষের মৌলিক অধিকার আদায়ের জন্য অবিচল থেকে সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশের জনগণ অর্জন করেছে গণতন্ত্র ও বাক-স্বাধীনতা। বাংলাদেশ পেয়েছে নিম্নআয়ের দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশের মর্যাদা। শেখ হাসিনার অপরিসীম আত্মত্যাগের ফলেই বাংলাদেশ আজ বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছে।

শান্তি প্রতিষ্ঠা, গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপদান এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অসামান্য অবদান রাখার জন্য বিশ্বের বেশকিছু বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রতিষ্ঠান শেখ হাসিনাকে বিভিন্ন ডিগ্রি এবং পুরস্কার প্রদান করে। যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টন ইউনিভার্সিটি, ব্রিজপোর্ট বিশ্ববিদ্যালয় এবং ব্যারি বিশ্ববিদ্যালয়, জাপানের ওয়াসেদা বিশ্ববিদ্যালয়, স্কটল্যান্ডের অ্যাবারটে বিশ্ববিদ্যালয়, ভারতের বিশ্বভারতী এবং ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়, অস্ট্রেলিয়ার ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ব্রাসেলসের বিশ্ববিখ্যাত ক্যাথলিক বিশ্ববিদ্যালয়, রাশিয়ার পিপলস ফ্রেন্ডশিপ বিশ্ববিদ্যালয় এবং স্টেট ইউনিভার্সিটি অব পিটার্সবার্গ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় তাকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করেছে। এছাড়া ফ্রান্সের ডাওফি বিশ্ববিদ্যালয় তাকে ডিপেস্নামা প্রদান করে।

রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও মানবাধিকারের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসিকতা ও দূরদর্শিতার জন্য যুক্তরাস্ট্রের রানডলপ ম্যাকন উইমেন্স কলেজ ২০০০ সালের ৯ এপ্রিল মর্যাদাসূচক ুচবধৎষ ঝ. ইঁপশ ু৯৯চ্ পুরস্কারে ভূষিত করে। জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি ক্ষুধার বিরুদ্ধে আন্দোলনের অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ শেখ হাসিনাকে সম্মানজনক 'সেরেস' মেডেল প্রদান করে।

সর্বভারতীয় শান্তিসংঘ শেখ হাসিনাকে ১৯৯৮ সালে 'মাদার টেরেসা' পদক প্রদান করে। ১৯৯৮ সালে আন্তর্জাতিক রোটারি ফাউন্ডেশন তাকে পল হেরিস (চধঁষ ঐধৎরং) ফেলোশিপ প্রদান করে। পশ্চিমবঙ্গ সর্বভারতীয় কংগ্রেস ১৯৯৭ সালে তাকে নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু স্মৃতি পদক প্রদান করে। আন্তর্জাতিক লায়ন্স ক্লাব কর্তৃক ১৯৯৬-৯৭ সালে তিনি 'গবফধষ ড়ভ উরংঃরহপঃরড়হ' পদক ও ১৯৯৬-৯৭ সালে 'ঐবধফ ড়ভ ঝঃধঃব' পদক লাভ করেন।

২০০৯ সালে ভারতের ইন্দিরা গান্ধী মেমোরিয়াল ট্রাস্ট শান্তি ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় অসামান্য ভূমিকা পালনের জন্য শেখ হাসিনাকে ইন্দিরা গান্ধী পুরস্কারে ভূষিত করে। এছাড়া তিনি বৃটেনের গেস্নাবাল ডাইভারসিটি পুরস্কার এবং দুইবার সাউথ সাউথ পুরস্কারে ভূষিত হন। ২০১৪ সালে ইউনেস্কো তাকে 'শান্তিরবৃক্ষ' এবং ২০১৫ সালে উইমেন ইন পার্লামেন্টস গেস্নাবাল ফোরাম নারীর ক্ষমতায়নের জন্য তাকে 'রিজিওনাল লিডারশিপ' পুরস্কার এবং গেস্নাবাল সাউথ-সাউথ ডেভলপমেন্ট এক্সপো-২০১৪ ভিশনারি পুরস্কারে ভূষিত করে।

বাংলাদেশের কৃষির উন্নয়নে অব্যাহত সমর্থন, খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়নে অবদানের জন্য আমেরিকার কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয় ২০১৫ সালে তাকে সম্মাননা সনদ প্রদান করে। জাতিসংঘ পরিবেশ উন্নয়ন কর্মসূচি দেশে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পরিবেশ এবং টেকসই উন্নয়নে অসামান্য অবদান রাখার জন্য লিডারশিপ ক্যাটাগরিতে শেখ হাসিনাকে তাঁদের সর্বোচ্চ পুরস্কার 'চ্যাম্পিয়ন অব দ্য আর্থ-২০১৫' পুরস্কারে ভূষিত করেছে। এছাড়া, টেকসই ডিজিটাল কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য ওহঃবৎহধঃরড়হধষ ঞবষবপড়সসঁহরপধঃরড়হ টহরড়হ (ওঞট) শেখ হাসিনাকে ওঈঞং রহ ঝঁংঃধরহধনষব উবাবষড়ঢ়সবহঃ অধিৎফ-২০১৫ প্রদান করে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অসীম ধৈর্য, বিচক্ষণতা ও সাহসিকতার সঙ্গে দৃঢ় মনোবল নিয়ে শক্ত হাতে বিডিআর বিদ্রোহ দমনে যৌক্তিক ও তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত ছিল দূরদর্শিতাপূর্ণ। বাংলাদেশ রাইফেলসের দীর্ঘদিনের ক্ষোভ কাজে লাগিয়ে বিডিআর বিদ্রোহের মাধ্যমে রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা বিনষ্ট, অর্থনৈতিক ও সামাজিক নিরাপত্তা বিঘ্নের লক্ষ্যে কতিপয় স্বার্থান্বেষীর পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে দক্ষ ও প্রশিক্ষিত বাহিনীকে ধ্বংসের চক্রান্ত রুখে দেওয়ার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর রাষ্ট্রনায়কোচিত গৃহীত পদক্ষেপ ছিল বিচক্ষণতা, দূরদর্শিতা, সাহসিকতা ও সময়োপযোগী পদক্ষেপ। পাশাপাশি আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি অগাধ বিশ্বাস এবং আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষার জন্য প্রশিক্ষিত ও সুশৃঙ্খল প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলাদেশ সেনা বাহিনী, বিমান বাহিনী ও নৌ বাহিনীকে দেশের সংবিধান ও গণতন্ত্রের প্রতি অবিচল আস্থা রেখে চরম ধৈর্যের সঙ্গে উদ্ভূত ভয়ংকর পরিস্থিতি মোকাবিলায় পেশাদারিত্বের পরিচয় দিয়ে সমগ্র দেশবাসীর ভালোবাসা ও সুনাম অর্জন করতে পারাটা কেবল শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বের জন্যই সম্ভব হয়েছে।

আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যে জঙ্গিদমনে ইতোমধ্যে যথেষ্ট দক্ষতার প্রমাণ দিয়েছে। আর সেটা সম্ভব হয়েছে শেখ হাসিনার জিরো টলালেন্স নীতির কারণে। এ জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঠিক নির্দেশনায় হলি আটিজানে নৃশংস হত্যাকান্ড, বাসে-গাড়িতে অগ্নিসন্ত্রাস ও জঙ্গিদমনের বিষয়টি বিশ্ববাসীর কাছে এক উৎকৃষ্ট উদাহরণ।

বর্তমানে আমাদের ভরসার জায়গা একটাই, সেটা হলো আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যিনি নিজেই লড়াই করে যাচ্ছেন সারা বিশ্ববাসীর শান্তির জন্য। তিনি করোনাভাইরাস মহামারি থেকে শুরু করে যে কোনো দুর্যোগ দুর্বিপাকে ও জাতির ক্রান্তিকালে প্রতিটি কাজের তদারকি করছেন, প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা ও সিদ্ধান্ত দিচ্ছেন এবং সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য মনিটরিং করছেন। তিনি মানুষের জীবন-জীবিকার ব্যাপারে অত্যন্ত সংবেদনশীল, দূরদৃষ্টিসম্পন্ন এবং সময়পযোগী সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপ নিয়ে বিশ্ববাসীকে একটির পর একটি চমক দেখিয়ে যাচ্ছেন।

বিশ্ববিখ্যাত প্রভাবশালী সাময়িকী ফোর্বসের মূল্যায়নে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ১০০ নারীর মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবস্থান ২৬তম। অ-রাজনীতিবিদদের যদি ফোর্বসের এই তালিকা থেকে সরিয়ে দেওয়া যায় তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চলে আসেন ৩য় অবস্থানে। ফোর্বসের নিয়মনীতি অনুযায়ী শেখ হাসিনা বিশ্বের ৩য় ক্ষমতাধর নারী। শেখ হাসিনার হাত ধরেই 'বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল'। যার সুযোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে এগিয়ে যাচ্ছে, তিনিই বঙ্গবন্ধুকন্যা আমাদের প্রাণপ্রিয় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের প্রতি সহিংসতা শুরু হলে বাংলাদেশে নামে রোহিঙ্গা শরণার্থীর ঢল। এ ভয়াবহ অনুপ্রবেশে হতচকিত হয় দেশবাসী ও বিশ্ব সম্প্রদায়। রাজনীতিবিদ, স্থানীয় জনগণ, সুশীলসমাজ অর্থনীতিবিদরা যখন নির্বিকার, যখন কোনো মত ও পথ খুঁজে না পেয়ে দ্বিধাগ্রস্ত তখন সময়ের সাহসী, দূরদর্শী ও মানবিক নেতা তার স্বরূপে আবির্ভূত হন। শেখ হাসিনা বলেন, '১৬ কোটি মানুষের খাবার জোগাড় করতে পারলে আমরা আরও ১২ লাখ লোকের আহার সংগ্রহ করতেও পারব; প্রয়োজনে হলে খাবার ভাগ করে খাব; এই নির্যাতিত মানুষদের আমরা ফিরিয়ে দিতে পারি না।'

মিয়ানমার সরকারের ভয়াবহ নির্যাতনে আশ্রয়হীন প্রায় ১২ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা শরণার্থীকে বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়ে তাদের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান শিক্ষা ও চিকিৎসা নিশ্চিত করে 'বিশ্ব মানবতার বিবেক' হিসেবে প্রশংসিত হয়েছেন তিনি শুধু আশ্রয় নয় অনেক উন্নত দেশ যেখানে এর চেয়ে অনেক কম সংখ্যক শরণার্থীর সব মৌলিক চাহিদা মিটাতে যথার্থ ব্যবস্থা নিতে পারেনি অথচ ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের জন্য মৌলিক চাহিদা পূরণের সুব্যবস্থা করে বিশ্ববাসীকে বিস্মিত করেছেন শেখ হাসিনা। জাতিসংঘের গত ৭৩ ও ৭৪তম অধিবেশনে এবং এ বছরের ৭৫তম ভার্চুয়াল অধিবেশনেও বিশ্ব নেতারা তার এই মানবিক দৃষ্টান্তের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। নিখাদ দেশপ্রেম, দূরদর্শিতা, দৃঢ়চেতা মানসিকতা ও মানবিক গুণাবলি তাকে আসীন করেছে বিশ্ব নেতৃত্বের আসনে। একবিংশ শতাব্দীর অভিযাত্রায় দিন বদলের মাধ্যমে আধুনিক বিশ্ব গড়ার সুনিপুণ কারিগর শেখ হাসিনা। তার এই পদক্ষেপে বিখ্যাত ব্রিটিশ মিডিয়া, চ্যানেল ফোর তাকে খেতাব দেয়, 'মাদার অব হিউম্যানিটি'। দুবাইর প্রভাবশালী দৈনিক খালিজ টাইমস বলে, 'পূর্বের নতুন সূর্য'। দিলিস্নতে বিজেপির দেওয়া সংবর্ধনায় বর্ষীয়ান বিজেপি নেতা এল কে আদভানী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপস্থিতিতে শেখ হাসিনা সম্পর্কে বলেন, 'শেখ হাসিনাই বর্তমান সাউথ এশিয়ার মূল নেতা'। শেখ হাসিনার জন্য বহু সম্মান, স্বীকৃতি এসেছে সারা দুনিয়ার বিভিন্ন দেশ, সরকার, বিশ্ববিদ্যালয়, প্রতিষ্ঠান, জাতিসংঘ থেকে। বিভিন্ন ইসু্যতে পরামর্শ দেওয়ার জন্য তিনি কয়েকবার আমন্ত্রণ পেয়েছেন বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী সাত দেশের সংগঠন জি৭ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বিশ্বব্যাপী জনমত সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখায়, এ ক্ষেত্রে উন্নয়নশীল দেশগুলোর নেতৃত্ব দেওয়ায় জাতিসংঘ তাকে খেতাব দিয়েছে, 'চ্যাম্পিয়ন অফ দ্য আর্থ'। শেখ হাসিনার নারী উন্নয়ন নীতির ফলাফলস্বরূপ সমাজের সব পর্যায়ে নারীর অংশগ্রহণ, নেতৃত্বদান বৃদ্ধি পাওয়ায় তাকে জাতিসংঘের ইউএনওমেন 'এজেন্ট অফ চেঞ্জ' পুরস্কার প্রদান করে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে স্বীকৃত এই বিশ্বনেতা এখন শুধু বাংলাদেশ নয়, আন্তর্জাতিক সমস্যাবলি সমাধানেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন।

শেখ হাসিনা শুধু বাংলাদেশের নেতা নন, তিনি এখন বিশ্বনেতা। আজ বিশ্বের সব দেশেই শেখ হাসিনার প্রশংসা করা হচ্ছে। শেখ হাসিনার রাষ্ট্র পরিচালনা এবং উন্নয়ন দেখে বিশ্ব নেতারা তার কাছ থেকে পরামর্শ নেন। তিনি কোনো আন্দোলনে ভয় পান না, অন্যায়ের কাছে আপস ও মাথা নত করেন না। সেই কারণে বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক, জাইকা এবং ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংককে চ্যালেঞ্জ করেই নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতুর মতো এত বড় সেতু নির্মাণের সাহস দেখানো একমাত্র শেখ হাসিনার পক্ষেই সম্ভব।

স্বাধীনতার প্রায় পঞ্চাশ বছর অতিক্রান্ত হলেও দেশ-বিদেশের চোখ রাঙানো উপেক্ষা করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রায়বু্যনালের মাধ্যমে স্বচ্ছতার সঙ্গে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করেছেন।

শেখ হাসিনা পুনঃজাগরিত বাংলাদেশের এথেনা। পৌরাণিক গ্রিকদের সাহস, প্রজ্ঞা, কৌশল, ধৈর্য, ন্যায়, সংস্কৃতি প্রেরণাপ্রসূত প্রভূত, গুণাগুণের দেবী হলো এথেনা; সে তাদের সব স্পৃহায় যেমন সাহস মনোবলের যোগান দিত, সমসাময়িক বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা সেই দেবী রূপে, নব চেতনায় বাঙালির সৌরভ ও গৌরবকে সমুন্নত করতে আজ আমাদের সামনে আশীর্বাদ হয়ে দন্ডায়মান হয়েছেন।

জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সামাজিক ও রাজনৈতিক জীবনে এবং প্রাকৃতিক যে কোনো দুর্যোগ দুর্বিপাকে ধীরস্থিরভাবে নিঃশঙ্ক চিত্তে এগিয়ে যাচ্ছেন দেশরত্ন শেখ হাসিনা। সময়ের সবচেয়ে যৌক্তিক ও কার্যকর পরামর্শ ও দিকনির্দেশনাটি আসে শুধু তার মস্তিষ্ক থেকেই। তাই আজ বলতে দ্বিধা নেই, শেখ হাসিনা আজ বাঙালির ভরসার আশ্রয়স্থল।

ড. মো. মোজাম্মেল হক খান : সাবেক সিনিয়র সচিব ও বর্তমান কমিশনার, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে