শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
পাঠক মত

জীবনের মূল্য বুঝতে হবে

নতুনধারা
  ০৪ ডিসেম্বর ২০২১, ০০:০০

নিকৃষ্টতম কাজের মধ্যে আত্মহত্যা হচ্ছে সর্ব নিকৃষ্ট। ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে আত্মহত্যা ঘৃণিত কাজ। তবু বিশ্বে দিন দিন আত্মহত্যার প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যসূত্রে, বিশ্বে প্রতি বছর গড়ে আট লাখেরও বেশি মানুষ আত্মহত্যা করে থাকে এবং প্রতি ৪০ সেকেন্ডে একজন মানুষ আত্মহত্যা করে। এমনকি, ১৫-২০% মানুষ আত্মহত্যা করতে ব্যর্থ হয়। আমাদের দেশে গড়ে প্রতিদিন ৩০ জন মানুষ আত্মহননের চেষ্টা করে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত ছয় হাজারের বেশি আত্মহত্যার মতো ঘৃণিত অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। শিশু, যুবক কিংবা বৃদ্ধ সব বয়সের মানুষই আত্মহননের পথ বেছে নিচ্ছে। তবে ২১-৩০ বছর বয়সিদের আত্মহত্যার সংখ্যা বেশি। প্রেমে ব্যর্থ, বেকার, বৈষম্য, লাঞ্ছনা-বঞ্চনা, বিভ্রান্তি, মানসিক বিপর্যস্তে ভারসাম্য হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। তবে বর্তমানে আত্মহননের প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে দাম্পত্য কলহ, যৌতুক, পারিবারিক নির্যাতন, প্রেম ও পরীক্ষায় ব্যর্থতা, উক্ত্যক্তকরণ, বেকারত্ব ও দরিদ্রতা। জীবনে তুচ্ছ বিষয়ে পরাজয়ের কারণে আত্মহত্যাকে বেছে নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ হতে পারে না। আত্মহত্যাকে প্রতিরোধ করতে আত্মহত্যাপ্রবণ লোকদের চিহ্নিত করে তাদের জীবনের গুরুত্ব ভালোবাসায় উদ্বুদ্ধ করতে হবে। তাদের বোঝাতে হবে, জীবনের কঠিন পরিস্থিতিতে আত্মহত্যা নয় বরং আত্মপ্রত্যয়ী হয়ে প্রতিকূলতার মুখোমুখি সংগ্রামে বিজয়ী হওয়ার মানেই জীবন। তাছাড়া আত্মহত্যা প্রতিরোধে জনসচেতনতার বিকল্প নেই। এ বিষয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে সামাজিক সচেতনতার পাশাপাশি আত্মহত্যার ভয়াবহতা তুলে ধরা জরুরি। শিশুদের নৈতিক জ্ঞানের সঙ্গে গড়ে তোলা দরকার। জীবনের অন্তিম মূল্যের অবগতিই পারে আত্মহত্যার প্রবণতা কমাতে। কেননা, আত্মহত্যাই জীবনের সব সমস্যার একমাত্র সমাধান হতে পারে না। ব্যর্থ হলেই আত্মহত্যা নয় বরং আত্মপ্রত্যয়ী হয়ে উঠতে হবে।

আজিজুল হক

শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে