সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

জঙ্গিবাদ

নির্মূল করতে হবে
  ২১ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, আমরা উগ্রতা পছন্দ করি না। এ দেশের মানুষ জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদকে পছন্দ করে না, আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় না। আর সে জন্যই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ৩১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বৃহস্পতিবার বাংলা একাডেমিতে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, উগ্রবাদ, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি। আমরা যখনই ঘন অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়েছিলাম তখনই ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি উজ্জীবিত করেছে। এই সংগঠনটি মনের আগুন জ্বালিয়েছে। আমরা মনে করি যেভাবে সংগঠনটি এগোচ্ছে, এ দেশের মানুষের আমাদের সবাইকে একত্রিত করে অন্ধকারে আলো জ্বালিয়ে দেবেন। 'উগ্র মৌলবাদ, সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাদীপ্ত ধর্মনিরপেক্ষ মানবিক সংস্কৃতির বিকাশ ঘটুক'- এই স্স্নোগানে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ৩১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত হয়েছে

এটা সত্য সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদের হুমকিতে আতঙ্কিত বিশ্ব। শুধু বাংলাদেশে নয়, শুধু এশিয়াতে নয়, শুধু ইউরোপে নয়, জঙ্গিবাদের ঘৃণ্য দৃষ্টান্ত আজ চোখে পড়ে খোদ আটলান্টিকের ওপারের সুদূর আমেরিকার বুকেও। চলমান বিশ্বে মিডিয়া ও রাজনৈতিক অঙ্গনজুড়ে জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আলোচ্য এবং আতঙ্কের বিষয়। মুসলিম, অমুসলিম নির্বিশেষে সব ধর্ম-বর্ণের মানুষ, রাজনৈতিক মহল, এই সাম্প্রদায়িকতা-জঙ্গিবাদ ও জঙ্গিবাদীদের নিয়ে শুধু মহাব্যস্ত নন, রীতিমতো আতঙ্কগ্রস্ত ছিল। এখন এর আধিপত্য অনেকটা কমে এসেছে। প্রশ্ন উঠতে পারে, কেন এই সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদ জন্ম নিল, কারা এর পেছনে নাটের গুরু। এর প্রতিরোধ ও প্রতিকারের ব্যবস্থা কী হতে পারে- এ চিন্তায় হিমশিম খাচ্ছে সব মহল।

পবিত্র ইসলামের দৃষ্টিতে জঙ্গিবাদ হারাম। ইসলামের নামে হোক কিংবা অন্য নামে। ইসলামের লেবাস ধারণ করে হোক কিংবা ভিন্ন পোশাকে। কখনো কোথাও অন্যায়ভাবে মানুষের জানমালের ক্ষতি করা হলে, আতঙ্ক ছড়ানো হলে, অন্যায়ভাবে রক্তপাত ঘটানো হলে, এগুলোই উগ্রবাদ, এর নামই জঙ্গিবাদ। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি, হোন তিনি মুসলিম কিংবা অমুসলিম, হোন ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব কিংবা রাজনৈতিক নেতা নেত্রী, হোন তিনি দেশি কিংবা বিদেশি। বাংলাদেশের সব মহলের আলেম-উলামা এ উগ্রবাদ, সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদকে হারাম ফতোয়া দিয়ে আসছেন।

আমরা মনে করি, জঙ্গিবাদের মতো মানব বিধ্বংসী, সভ্যতা ও মানবতাকে আঘাতকারী নিকৃষ্টতম বিষয়টিকে নির্মূল করা রাষ্ট্র ও জনগণ সবার ওপর আবশ্যকীয় দায়িত্ব। দল ও মত নির্বিশেষে সরকারি দল, বিরোধী দল, রাজনৈতিক নেতাকর্মী, ধর্মীয় নেতা, ইমাম, খতিব ও পীর মাশায়েখ, শিক্ষক-ছাত্র, শ্রমিক-মজুর-কুলি, চাষি-ধোপা, কামার-কুমার থেকে শুরু করে সব পেশার সব লোকের ওপর অবশ্য পালনীয় ফরজ দায়িত্ব।

ইসলাম সার্বজনীন এবং মানবতাবাদী পূর্ণাঙ্গ জীবনাদর্শ হওয়ার কারণে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান এতে নেই। ইসলাম আজন্ম সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী। স্বার্থান্বেষী মহলের দাবার ঘুঁটি হয়ে যে কারো উপরে হামলে পড়তে দ্বিধাবোধ করে না জঙ্গিগোষ্ঠী, যে কাউকে হত্যা করতে দ্বিধাবোধ করে না, এমনকি আত্মঘাতী হতেও যাদের বুক কাঁপে না। আশার কথা দেশ থেকে জঙ্গিবাদ অনেকটাই নির্মূল হয়েছে। উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য জঙ্গিবাদ নির্মূল অপরিহার্য।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে