সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

নতুন বছরে বন্ধ হোক 'বডি শেমিং'

নতুনধারা
  ২২ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০

অন্যের দৈহিক আকার, বর্ণ, সাজসজ্জা, অঙ্গের তথাকথিত ত্রম্নটি-বিচু্যতি, হ্রাস-বৃদ্ধিকে নির্দেশ করে তাকে দু'চার কথা শুনিয়ে চুপিচুপি আত্মশ্লাঘা অনুভব করা, ঠাট্টার ছলে হুল ফোটানোর এই বদভ্যাসের নামই বডি শেমিং। বডি শেমিং একটি মারাত্মক অপরাধ। সবচেয়ে দুঃখজনক ব্যাপার হলো এই অপরাধটি শুরু হয় খুব কাছের মানুষদের দ্বারা। হাসতে হাসতেই বলে দেয় 'তুমি কোন গোডাউনের চাল খাও?' অথবা এটাও বলি 'দিন দিন হাতি হয়ে যাচ্ছো কেন?' এই হাসতে হাসতে বলা কথাগুলোও অপরাধ।

আপনি একজনকে মানসিকভাবে আঘাত করছেন মানে আপনার পরবর্তী প্রজন্মকেও আত্মবিশ্বাসহীনতায় ঠেলে দিচ্ছেন। আমরা যখন কাউকে শারীরিক গঠন নিয়ে মন্তব্য করি কিংবা উপদেশ দিই ওই ব্যক্তি তখন হাসিমুখে কিছু একটা বলে উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে অথবা চুপ থাকে। কিন্তু আপনি এটি বুঝতে পারবেন যখন আপনিও এরকম প্রশ্নের সম্মুখীন হবেন। বাহ্যিক সৌন্দর্য নিয়ে কাউকে হেয় করে কথা বলা উচিত নয়। অনেক দিন পর কোনো বন্ধুর সঙ্গে দেখা হলে আমরা অনেকেই প্রথম প্রশ্ন করি এত শুকনা কেন, বা কি খেয়ে এত মোটা হয়েছো? কাউকে কখনোই বডি শেমিং করতে যাবেন না। কালো, মোটা, চিকন, অসুস্থ, বেটে এসব কথাগুলো হয়তো আপনার কাছে স্বাভাবিক একটা শব্দ মাত্র। কিন্তু তার বুকে যে এই কথাগুলো তীরের মতো বেঁধে, কতটা কষ্ট পায় তা বোঝার ক্ষমতা হয়তো তখন আপনার নেই। নিজের কাছের মানুষই যখন এইসব ব্যাপার নিয়ে আলাদা করে দেখে তখন ব্যাপারটা আরও বেশি কষ্টকর হয়ে পড়ে সে মানুষটির জন্য। অনলাইনে, অফলাইনে কেউ কাউকে বুলিং, হয়রানি কিংবা ছোট করবেন না। লম্বা, খাটো, মোটা, চিকন এক কথায় বডি শেমিং করবেন না। মানসিকভাবে মানুষ একটু দুর্বল হলে পরিণতি ভয়াবহ হতে পারে। অনলাইনে ব্যাপারটা মারাত্মকভাবে ছড়িয়ে গেছে।

অতিরিক্ত বডি শেমিং-এর জন্য অনেকে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। অতিরিক্ত মানসিক অসুস্থ এক সময় অবসাদে রূপ নেয়। বডি শেমিংয়ের কারণে অনেকের পারসোনালিটি ডিজঅর্ডার দেখা দিতে পারে। সম্প্রতি এই ধরনের বুলিং, বাজে মন্তব্যের জন্য অনেক তরুণ-তরুণীকে বেছে নিতে হয়েছে আত্মহত্যার পথ, বিভিন্ন নেশাজাতীয় দ্রব্য। যা সত্যি বেদনাদায়ক।

সঠিক কাজ করা পৃথিবীতে কোনো দিনও সহজ ছিল না। কিন্তু তারপরেও যুগে যুগে অসংখ্য মানুষ স্বেচ্ছায় নিজের লোকসান করে হলেও সঠিক পথটি বেছে নিয়েছেন বলেই আজকে আমি, আপনারা সবাই এত দূরে এসেছি। এবারে আমাদের অন্যকে পথ দেখানোর পালা। নতুন বছরের শুরুতে আমরা নিজের সঙ্গেই অনেক ধরনের কমিটমেন্ট করি। যেমন ভালো কাজ করার, ওজন কমানো বা কোনো কিছু অর্জনের। এই অনেক কিছুর সঙ্গে আসুন আরও একটা বিষয় যোগ করি তা হচ্ছে বডি শেমিং না করা।

মানুষ বৈচিত্র্যময়, ব্যক্তিগত পছন্দের কোনো মাপকাঠি নেই। খুব সহজেই বলে ফেলা যায়, তুমি তো সুন্দর না। কিন্তু খুব সহজে কি একজন সুন্দর মনের মানুষ হওয়া যায়? কারও সামনে বা পেছনে তার শারীরিক গঠন নিয়ে সমালোচনা করা থেকে বিরত থাকুন। শরীর খুব ক্ষণস্থায়ী একটি অস্তিত্ব। একজন মানুষের মানসিকতাকে গুরুত্ব দিন। একটি সুন্দর মন পাল্টে দিতে পারে একটি সমাজ।

মানুষের মন ভালো করার কাজ যদি অনেক শ্রমসাপেক্ষ ও কষ্টকর মনে হয়, তাহলে সহজ কাজটিই করুন- দয়া করে কারও মন খারাপ করিয়ে দেবেন না। চষবধংব ঝঃড়ঢ় ইড়ফু ঝযধসরহম.

সাকিবুল ইসলাম

শিক্ষার্থী

সমাজকর্ম বিভাগ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা

ময়লার স্তূপে পরিবেশ বিনষ্ট কাম্য নয়

মানবসমাজে বেঁচে থাকা এবং বেড়ে ওঠা পরিবেশক কেন্দ্র করে। কিন্তু কোনো কারণে যদি সে পরিবেশ দূষিত হয় তবে মানবসমাজসহ প্রাণিকুলের বেঁচে থাকা হুমকিস্বরূপ হয়ে দাঁড়ায়। এমনি একটি স্থান হচ্ছে মাদারীপুর জেলার মস্তফাপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে দক্ষিণে আনুমানিক ১ কিলোমিটার দূরে। মস্তফাপুর ও তাঁতি বাড়ির মাঝখানে। বরিশাল থেকে ঢাকাগামী মহাসড়কের পাশে। যেখানে দীর্ঘদিন ধরে প্রতিনিয়ত জমা করা হচ্ছে শহরের ব্যবহৃত দ্রব্যসামগ্রীর বর্জ্য পদার্থ। সেখানে ক্রমান্বয়ে গড়ে উঠছে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ। যা পরিবেশকে ব্যাপকভাবে কলুষিত করছে। অনেকটা জায়গাজুড়ে হওয়ায় সেখানে জনজীবন বিপন্ন হয়ে উঠেছে। আমরা যখন ঢাকা বা বরিশালগামী হই তখন ওই স্থানে প্রায় পাঁচ মিনিটের মতো শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থায় যেতে হয়। এটা খুব বাজে অবস্থা। ওই স্থানে বসে চালকও খুব দ্রম্নতগতিতে গাড়ি চালায় স্থানটি থেকে প্রস্থান করার জন্য। যার ফলে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। ওই স্থান দিয়ে চলার পথে দেখা যায় কিছু লোক শূকর চড়াচ্ছে যার ফলে গন্ধের তীব্রতা বৃদ্ধি পায়। সাময়িক সময় অবস্থান করে আমরা অসহ্য যন্ত্রণা অনুভব করি। ময়লার স্তূপের আশপাশে বসবাসরত মানুষের কতই না দুর্ভোগে। বায়ুদূষণের ফলে ফুসফুসে ক্যানসার, হাঁপানি, কাশি, ব্রঙ্কাইটিস ইত্যাদি হতে পারে। ময়লার স্তূপের পাশে বসবাসরত শিশুরা বিভিন্ন ধরনের রোগ-ব্যাধিতে আক্রান্ত হতে পারে। এরকম বায়ুদূষণ পর্যায়ক্রমে বাড়তে থাকলে একসময় ময়লার স্তূপের পাশে মানুষের বসবাস অযোগ্য হয়ে পড়বে। এ বিষয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। যত দ্রম্নত সম্ভব নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করে পরিবেশের ভারসাম্য ফিরিয়ে আনা জরুরি। আশা করি কতৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন।

ইমন হাওলাদার

শিক্ষার্থী, ঢাকা কলেজ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে