সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ কার্যকর উদ্যোগ নিন

নতুনধারা
  ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০

আবারও গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। বাংলাদেশে এখন আর স্বাভাবিক জীবনের নিশ্চয়তা নেই। যাদের এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার কথা- তারা রয়েছে চরম উদাসীন। এক দুর্ঘটনার রেশ না কাটতেই আরেক দুর্ঘটনা এসে হাজির হয়। আমরা বেদনাগ্রস্ত ও হতাশ হই। এটাই দেশের বাস্তবতা। বাংলাদেশের মানুষের নিয়তি। অন্যান্য দুর্ঘটনার পাশাপাশি ইদানীং গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দুর্ঘটনা ও মৃতু্যর সংখ্যা বাড়ছে।

এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, রাজধানী ভাটারার সাঈদ নগর এলাকায় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দগ্ধ হয়ে স্বামী-স্ত্রীর মৃতু্য হয়েছে। তারা হলেন, আব্দুল মজিদ শিকদার (৭০) ও তাসলিমা বেগম (৫০)। বৃহস্পতিবার ভোরে এ ঘটনা ঘটে। ফ্ল্যাটে স্বামী-স্ত্রী দুজনেই থাকতেন। পুলিশের ধারণা সিলিন্ডার লিকেজ থেকে ঘরে গ্যাস জমে ছিল। ভোরে চুলা জ্বালানোর সময় আগুন লেগে স্বামী-স্ত্রী দগ্ধ হন। ঘটনাস্থলেই তারা মারা যান। এই ঘটনা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। জানুয়ারি মাসে একাধিক ব্যক্তি গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দগ্ধ হয়ে মারা গেছেন। ১৭ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে বাসায় গ্যাস লাইন বিস্ফোরণে দগ্ধ হন জাহিদ হোসেন তার স্ত্রী রুমা আক্তার ও মেয়ে লাবণী। পাঁচ থেকে সাত বছর আগেও এসি, গ্যাসলাইন বা গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে এত মৃতু্যর ঘটনা ঘটত না। এর আগে, চট্টগ্রামের পাথরঘাটা এলাকায় গ্যাসের পাইপলাইন বিস্ফোরণে দেয়াল ধসে ৭ জন নিহত এবং ১০ জন দগ্ধ হয়েছিল। এখানেই শেষ নয়, রাজধানীর রূপনগরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে ৭ শিশুর মৃতু্য আমাদের হৃদয়ে দাগ কেটে আছে। বাসাবাড়িতে গ্যাস সংযোগে বা গ্যাসের চুলার ব্যবহারে অসাবধানতা ও অসচেতনতা, গ্যাসের সিলিন্ডার পরীক্ষা না করা এবং সরবরাহকৃত গ্যাসলাইনের ত্রম্নটির কারণে বিপদ এবং মর্মান্তিক পরিণতি ডেকে আনতে পারে তার দৃষ্টান্ত এসব দুর্ঘটনা। মানুষকে বলা হয় সৃষ্টির সেরা জীব, আশরাফুল মাখলুকাত। বর্তমান সমাজের মানুষ সবচেয়ে অনিরাপদ।

আশার কথা, নানা ধরনের দুর্ঘটনা ও বিপর্যয়ের মধ্যেও বাঙালির মনোবল কখনো দুর্বল হয়নি, হয়নি হীনবল। দৃঢ়চেতা ও মনোবলসম্পন্ন বাঙালি জাতি সব সময় এগিয়ে চলেছে সামনের দিকে। কখনো বন্যা, ঝড়-ঝঞ্ঝা, টর্নেডো, সাইক্লোন, নদীভাঙন, জলোচ্ছ্বাস মোকাবিলা করেছে, কখনো বা অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে। তারা মোকাবিলা করেছে করোনাভাইরাস ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবকে এবং নানা ধরনের দুর্ঘটনা। বাঙালি জাতি বারবার প্রমাণ করেছে তারা অদম্য। এ ক্ষেত্রে সরকারকে হাত গুটিয়ে বসে থাকলে চলবে না। মেয়াদোত্তীর্ণ গ্যাসলাইন, এসি, গ্যাস সিলিন্ডারসহ দুর্ঘটনাপ্রবল সব বিষয়ে মনোযোগ বাড়াতে হবে। মনে রাখতে হবে, এ দুর্ঘটনা রোধে ব্যক্তি সচেতনতা বাড়ানোসহ এ ব্যাপারে রাষ্ট্রেরও গভীরভাবে মনোযোগ দিতে হবে। সরকারের পরিকল্পিত উদ্যোগই কেবল পারে মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে। এ ক্ষেত্রে ব্যক্তি সচেতনতাও জরুরি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে