সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

বাজার সিন্ডিকেটের কারসাজি কঠোর পদক্ষেপ নিন

নতুনধারা
  ০১ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০

গত এক মাসে কতিপয় ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট করে শুধু ব্রয়লার মুরগিতে কারসাজির মাধ্যমে ১ হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেছে দাবি করে এর পেছনে মূল হোতাদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন কনজিউমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)। বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ব্রয়লার মুরগিসহ নিত্যপণ্যের কারসাজিতে দায়ীদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধনে এ দাবি জানানো হয়। তাদের মতে, দেশের সাধারণ মানুষ বাজারে যেতে ভয় পায়। একশ্রেণির ব্যবসায়ী নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের কৃত্রিম সংকট করে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছে। অতি মুনাফাবাদীদের জন্য সাধারণ মানুষের জীবন এখন বিপন্ন। কাউকে আধাবেলা খেতে হয়, কেউ না খেয়ে থাকতে হয়। এসব ব্যবসায়ীরা কখনো চিনি, কখনো তেল, কখনো মুরগির দাম কারসাজি করে। এ সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে।

মুরগির দামে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গিয়েছিল। সাধারণ মানুষের প্রোটিনের সবচেয়ে সস্তা ও বড় উৎস ব্রয়লার মুরগির দাম চড়তে চড়তে ২৯০ টাকা ছুঁয়েছিল। ব্রয়লার মুরগির কেজি এখন ২০০ টাকা। ব্রয়লারের পাশাপাশি দাম বেড়েছিল সোনালি মুরগিরও। একইভাবে সোনালি মুরগির কেজি হয়েছিল ৩৭০ টাকা। যা এখন ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকা। দাম বৃদ্ধি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে, মানুষ তার খাবার তালিকা থেকে সস্তা প্রোটিনের উৎসটিতেও কাটছাঁট করছে।

এটা সত্য, নিত্যপণ্যের বাজার কোনোভাবেই স্বাভাবিক হচ্ছে না। একেক সময় একেক অজুহাত তুলে বিক্রেতারা পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। বাজারে পর্যাপ্ত পণ্যের সরবরাহ আছে। তা সত্ত্বেও বাজারে পণ্যের দাম বাড়ছে। মূলত এটা বাজার ব্যবস্থাপনায় সমস্যা। এ ব্যবস্থাপনায় এক ধরনের কালোবাজারি এবং অতিমুনাফা লাভের প্রত্যাশা লুকিয়ে আছে। প্রশ্ন হচ্ছে- সরকারের বেঁধে দেওয়া দাম বাজারে কার্যকর হচ্ছে কিনা, কেউ উচ্চ লাভের আশায় মজুতদারি করেছে কিনা। এসব মনিটরিং করার দায়িত্ব সরকারের। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এসব মনিটরিং করছে। এ কথা ঠিক, যখন সংকট তৈরি হয় তখন অনেক সময় বড় করে তাকে দেখিয়ে কেউ কেউ সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করে। নিত্যপণ্যের দাম কারা বাড়ায় তা সবারই জানা। এটা সিন্ডিকেটের কারসাজি। নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির ক্ষেত্রে তাদের অজুহাতের শেষ নেই। তারা একেক সময় একেক অজুহাত দাঁড় করায়। তারা খাদ্যে ভেজালও দেয়। এই চিত্র বদলানো কঠিন।

আমরা মনে করি, ব্যবসায়ীদের কাছে জিম্মি হলে চলবে না। তাদের কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালতের সংখ্যা বাড়াতে হবে। এরা জনগণের স্বার্থের দিকে কখনোই নজর দেয় না। এরা বাজারসন্ত্রাসী। কীভাবে অসৎ উপায় অবলম্বন করে দ্রম্নত ধনী হওয়া যায় সেটাই তাদের প্রধান উদ্দেশ্য। বাজারে মূল্য তালিকা টাঙিয়ে যথাযথ তদারকির ব্যবস্থা করতে হবে। দেশের অসহায় জনগণকে জিম্মি করে তারা পকেট কাটবে এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। বিক্রেতাদের মানসিকতার পরিবর্তন যতদিন না ঘটবে ততদিন নিত্যপণ্যের বাজার অস্থির থাকবেই এবং দেশের জনগণও তাদের কাছে জিম্মি থাকবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে