সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

আবারও শিক্ষার্থীর মৃতু্য

সড়ক নিরাপদ করা জরুরি
নতুনধারা
  ০৩ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০

সড়কে মৃতু্যর মিছিল কিছুতেই থামছে না। দিনের পর দিন দীর্ঘ হচ্ছে। প্রতিদিনই ঝরছে তাজা প্রাণ। খালি হচ্ছে হাজারো মায়ের বুক। প্রিয়জন হারানোর কষ্টের কোনো বর্ণনা হয় না। যে হারায় কেবল সেই বোঝে। সড়ক দুর্ঘটনায় মৃতু্যবরণ করে হাজার হাজার পরিবার পথে বসছে। সড়ক দুর্ঘটনার প্রভাব শুধু ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর ওপরই নয়, সমাজজীবনেও পড়ছে ব্যাপকভাবে। জাতীয় অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সর্বোপরি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশ। এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, রাজধানীর লালবাগের বেড়িবাঁধ এলাকায় কাভার্ডভ্যানের চাপায় সানজিদা আক্তার তামান্না (২৭) নামে এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এ শিক্ষার্থী মোটর সাইকেল আরোহী ছিলেন বলে জানা গেছে। মোটর সাইকেলে কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় সানজিদা ছিটকে রাস্তায় পড়ে যান। এরপর তার মাথার ওপর দিয়ে চলে যায় কাভার্ডভ্যানের চাকা। খুব সাধারণ হেলমেট থাকায় সানজিদার মাথা থেঁতলে যায়। এ ঘটনায় কাভার্ডভ্যান চালককে আটক করেছে লালবাগ থানা পুলিশ। শুক্রবার রাত ১০টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এর চেয়ে মর্মান্তিক ঘটনা আর কী হতে পারে? এর আগে বেশ ক'জন শিক্ষার্থী সড়কে প্রাণ হারিয়েছে। রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনায় শিক্ষার্থীরা আন্দোলনও করেছে, কাজের কাজ কিছুই হয়নি। রাজধানীতে দুই বাসের রেষারেষিতে হাত হারানোর পর রাজীবের মৃতু্যর ঘটনা এখনো মানুষের মনে দাগ কেটে আছে। বাসচালক ও চালকের সহকারীদের খামখেয়ালির কারণে নিরীহ ছাত্রছাত্রীসহ যাত্রীরা প্রাণ হারাচ্ছেন। তাদের কবল থেকে কেউই রেহাই পাচ্ছেন না। এটা সত্য, দেশে যাতায়াতজনিত দুর্ঘটনা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। এ দেশের সড়ক নিরাপদ হওয়া খুব জরুরি। খুন-খারাবির চেয়ে সড়কেই মানুষ মরছে বেশি। সড়কে আইন না মানা, ফিটনেসবিহীন গাড়ি, অদক্ষ এবং অবৈধ ড্রাইভার গাড়ি চালাতে গিয়ে হরহামেশাই দুর্ঘটনায় পড়ছে। আসলে আমরা বলছি অনেক, করছি কম। আইনের যথাযথ প্রয়োগ না থাকার কারণে দুর্ঘটনা বাড়ছে। অন্য এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, গত ১৫ বছরে সড়ক পথে ৫৫ হাজার মানুষের মৃতু্য হয়েছে। ৭০ হাজার মামলাও হয়েছে বিভিন্ন দুর্ঘটনায়। মানুষের জীবন যে কত তুচ্ছ তা এসব ঘটনার দ্বারা আবারও প্রমাণিত হলো। যোগ্য ও দক্ষ লোকেরাই যেন গাড়ি চালানোর লাইসেন্স পায় তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব বিআরটিএর। যদি যোগ্য লোককে লাইসেন্স দেওয়া হয় তা হলেই সড়ক দুর্ঘটনা কমে আসবে। এ ছাড়া শিক্ষিত ও সচেতন চালক নিয়োগ দেওয়াও জরুরি। মনে রাখতে হবে, বড় বড় দুর্ঘটনা থেকে যদি আমরা শিক্ষা নিতে না পারি তবে ভবিষ্যতেও এর পুনরাবৃত্তি ঘটবে। দুর্ঘটনায় মৃতু্যর হার কমাতে হলে দোষীদের তাৎক্ষণিক শাস্তি নিশ্চিত করার পাশাপাশি জনগণকেও নৌ, রেল ও সড়ক পথে ভ্রমণ ও রাস্তা পারাপারের ক্ষেত্রে আরও সচেতন হতে হবে। পরিকল্পিত ও সফল উদ্যোগই কেবল পারে এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনা রোধ করতে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে