রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

বিস্ফোরণ ও অগ্নিকান্ড

দেশের বিভিন্ন স্থানে একের পর এক বিস্ফোরণ ও অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটছে। এই ঘটনাগুলো স্বাভাবিক দুর্ঘটনা নাকি নাশকতা তা নিয়ে এখন ভাববার সময় এসেছে।
হাসি ইকবাল
  ২৯ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০

বঙ্গবাজারের ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের রেশ কাটতে না কাটতেই আগুন লাগল রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায়। ১৫ এপ্রিল সকাল পৌনে ৭টার দিকে এক বার্তায় আইএসপিআর জানিয়েছে নিউ মার্কেটে আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। গত ৪ এপ্রিল বঙ্গবাজারের ভয়াবহ আগুন নিয়ন্ত্রণেও সেনাবাহিনী সদস্যরা কাজ করেছেন।

দেশের বিভিন্ন স্থানে একের পর এক বিস্ফোরণ ও অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটছে। এই ঘটনাগুলো স্বাভাবিক দুর্ঘটনা নাকি নাশকতা তা নিয়ে এখন ভাববার সময় এসেছে।

প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনে মাঠে কাজ করছে পুলিশ,র্ যাবসহ বিভিন্ন গোযেন্দা সংস্থা। একের পর এক এমন ঘটনা ভাবিয়ে তুলছে দেশের বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষকে।

এক অসহায় আত্মসমর্পণের নাম আগুনে পুড়ে যাওয়া। অনেক সময় চোখের সামনে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে অসহায়ের মতো সবকিছু পুড়ে যেতে দেখতে হয়, কিন্তু কিছু করার উপায় থাকে না। আগুন হলো দ্রম্নত প্রজ্বলনশীল পর্দাথের রাসায়নিক বিক্রিয়াবিশেষ। আলোর মাধ্যমে এ রাসায়নিক বিক্রিয়া শক্তিতে পরিণত হয়। বেশ কিছু দিন থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে আগুনের লেলিহান শিখা কেড়ে নিয়েছে মানুষের জীবন যাত্রা ব্যাহত করছে। পথে বসিয়েছে হাজার হাজার মানুষকে। কেড়ে নিয়েছে শত শত জীবন। তবুও আগুন জ্বলছে তো জ্বলছে। আজ এ বস্তিতে তো কাল ওই মার্কেটে। বড় বড় শপিং মলে, নামকরা করপোরেট অফিসে, সরকারি-বেসরকারি অফিসে, ঘরবাড়ি সবকিছু পুড়ে তছনছ হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এই যে প্রতিনিয়ত আমরা বিভিন্ন জায়গায় অগ্নিকান্ড, অগ্নি বিস্ফোরণ হতে দেখছি এর কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ আজও বের করা সম্ভব হয়নি। অনেকেই এর পেছনে অসাবধনতাকেই দায়ী করছে।

গত কয়েক বছর ধরে অগ্নিকান্ডের দুঃসংবাদটি ক্রমেই বেড়ে চলছে। কুন্ডলী পাকানো আগুনের লেলিহান শিখা পুড়তে পুড়তে এক সময় কালো হয়ে গোটা আকাশ বাতাসকে ভারী করে তুলছে। প্রতি বছরই মানুষের সামান্য ভুল, ভুল পরিকল্পনা, ভুল চিন্তাধারা, অজ্ঞতা আর অসাবধনতার কারণে পুড়ে যাচ্ছে কোটি কোটি টাকা সম্পত্তি। তিলতিল করে গড়ে তোলা মূল্যবান জিনিসপত্র। সঙ্গে ক্ষতি হচ্ছে জানমালের। সর্বস্বান্ত হচ্ছে লাখ লাখ মানুষ। একেকটি আগুন ট্র্যাজেডি কেড়ে নেয় মানুষের সর্বস্ব। বড় কোনো দুর্ঘটনা না ঘটা পর্যন্ত নড়েচড়ে বসে না সংশ্লিষ্টরা।

আগুনকে বলা হয় সর্বভুক। কারণ আগুনে ছাই হয়ে যায় কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি। আগুন যতক্ষণ নিয়ন্ত্রণে ততক্ষণ কিছুটা আশার বাণী দেখা গেলেও আুগন নিয়ন্ত্রণের বাইরে গেলে তা হয়ে উঠে মহা শক্তিশালী। তাই আগুনের লেলিহান শিখা থেকে বাঁচতে হলে সবাইকে সর্বাত্মক সচেতন থাকতে হবে। আগুন লাগার বড় ধরনের উৎস হলো জ্বলন্ত চুলা, জলন্ত সিগারেট, ম্যাচের কাঠি, খোলা বাতি, বৈদু্যতিক শর্টসার্কিট, গরম ময়লা, আবর্জনা ও অন্যান্য দাহ্য বস্তু, ছেলেমেয়েদের আগুন নিয়ে খেলা রাসায়নিক বিক্রিয়া ইত্যাদি। এছাড়া মেশিনারিজ, আবর্জনায় গ্যাস সৃষ্টি, মেশিনের ঘর্ষণ, বজ্রপাত, গ্যাসের সিলিন্ডারসহ বিভিন্ন ধরনের বিস্ফোরণ, সূর্যরশ্মির প্রতিফলন থেকেও আগুন লেগে যেতে পারে।

বঙ্গবাজারে ব্যবসায়ীরা মঙ্গলবার ভোরে হঠাৎ শুনতে পান মার্কেটে আগুন লেগেছে। খরব পেয়ে মার্কেটের সামনে জড়ো হন তারা। প্রথমে মার্কেটের পেছনে আগুনের সূত্রপাত হলেও দ্রম্নত তা ছড়িয়ে পড়ে পুরো মার্কেট ও আশপাশে। অল্প সময়ের মধ্যে যে যেভাবে পেরেছেন তাদের মালামাল দোকান থেকে বের করেছেন। বাকি সবই আগনে পুড়ে গেছে। ঈদ উপলক্ষে দেকানগুলো মালামালে ভরা ছিল। এই আগুনে পাঁচ হাজারের বেশি ছোটবড় ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, ২০১৯ সালে মার্কেটটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা দেওয়া হলেও ব্যবসায়ীরা তার কর্ণপাত করেননি। অসচেতনতার কারণেই পুড়ে গেছে হাজারো ব্যবসায়ীর সাজানো দোকান আর স্বপ্ন। নানা অনিয়ম-অব্যবস্থাপনার মধ্যেই মৃত্যঝুঁকি নিয়েই বসবাস পুরান ঢাকার মানুষের। গত ১৩ এপ্রিল বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর নবাবপুরে ভয়াবাহ অগ্নিকান্ড ঘটেছে। পুরান ঢাকার নবাবপুর রোডে পুড়েছে ২০টির মতো গুদাম। প্রায় দুই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে ফায়ার সার্ভিস। ঘন ঘন আগুন লাগার ঘটনায় প্রশ্ন দেখা দিয়েছে এগুলো কি কোনো নাশকতা কিনা? ঢাকা নিউ মার্কেটসহ কয়েকটি মার্কেটকে বেশ আগেই ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু ব্যবসায়ীরা সচেতন হয়নি।

উলেস্নখ্য, এ বছর বেশ কিছু আগুন ও ভবন ধসের ঘটনা ঘটেছে। গত ২৭ মার্চ মহাখালীর সাততলা বস্তিতে আগুন লাগে। ৫ মার্চ সায়েন্স ল্যাবের শিরিন ম্যানশনে হঠাৎ বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে প্রায় পাঁচজন নিহত হন। গত ৭ মার্চ সিদ্দিকবাজারে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। এতে পাশাপাশি দুটি বহুতল ভবন ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ঘটনায় নিহত হন ২৫ জন। ২৬ ফেব্রম্নয়ারি কড়াইল বস্তিতে আগুন লাগে। ১৯ ফেব্রম্নয়ারি গুলশান-২ নম্বরের ১০৪ নম্বর সড়কের ১৪ তলা ভবনের ১১ তলায় আগুনের ঘটনা ঘটে।

বিগত কয়েক বছর ধরে আগুনের ভয়বহতার কথা মনে হলে, প্রথমেই মনে পড়ে যায় নিমতলি ট্র্যাজেডির কথা। ২০১০ সালের ৩ জুন পুরান ঢাকার নবাব কাটরার নিমতলিতে এক অগ্নিকান্ডে ১৭ জন মানুষ নিহত হন। পরে ৬ জুন এক শিশু এবং ৭ জুন একজন নারী মারা গেলে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ায় ১১৯। নিমতলী ট্র্যাজেডির পর টাস্কফোর্স গঠন, অঙ্গিকার ও পরিকল্পনা নেয়া হয়েছিল। এরপর কেটে গেছে বেশ কয়েক বছর; কিন্তু বাস্তবায়ন হয়নি। বদলায়নি পুরান ঢাকা। আবারও লাশের মিছিল। চকবাজরের ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে কেড়ে নিয়েছে বহু প্রাণ।

অব্যবস্থাপনা রুখতে নানা উদ্যোগের কথা বলা হলেও বাস্তবে এসবের কোনো ব্যবস্থা হয়নি। ফলে আগুন ট্র্যাজেডির পুনারবৃত্তি ঘটছে।

উন্নত বিশ্বে বেশ কিছু যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে অগ্নিকান্ড নিয়ন্ত্রণ ও প্রাণহানি এখন কমে গিয়েছে। যদিও আমাদের দেশের শিল্পকারখানা, মার্কেট ও অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকরা ব্যয়ের কারণে আধুনিক যন্ত্রপাতি স্থাপন করতে আগ্রহী নন। অনেকে স্থাপন করলেও তা সঠিকভাবে পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ করেন না- ফলে দুর্ঘটনায় প্রচুর জানমালসহ সম্পদের ক্ষতি হয়।

বলার অপেক্ষা রাখে না, আমাদের দেশের ফায়ার সার্ভিস ব্যবস্থা খুব উন্নত না হলেও তাদের আন্তরিকতার কোনো ঘাতটি নেই। কিন্তু কোথাও কোনো আগুন লেগে গেলে ফায়ার সার্ভিসকে খরব দিলে রাস্তায় জ্যামসহ নানা কারণে আসতে তাদের সময় লাগে। এরপর পাইপ স্থাপন করে কাজ শুরু করতে গিয়ে বেশ সময় লাগে। আর এ সময়ের মধ্যে আগুন প্রায় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। কারণ এ দেশে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পানি ছিটানো হয় কম।

বাংলাদেশে অগ্নিকান্ডের সময় প্রায়ই পানির সংকটের কথা জানা যায়। ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে বেশি পানি থাকে না। কয়েক মিনিটেই তা শেষ হয়ে যায়। তাই প্রয়োজন অগ্নিকান্ডের কাছাকাছি স্থানে পানির ব্যবস্থা। এক্ষেত্রে উন্নত বিশ্বে ব্যবহৃত হয় ফায়ার হাইডেন্ট। এটি মূলত একটি পানির সংরক্ষণাগারের সঙ্গে সংযুক্ত আগুন নেভানোর জন্য পানির ব্যবস্থা। এখানে উচ্চচাপে পানি সংরক্ষিত হয়। ফলে কাছাকাছি কোথাও আগুন লাগলে এ পয়েন্টে পাইপ লাগিয়ে অগ্নি নির্বাপকরা সহজেই আগুন নিয়ন্ত্রণ করেন। বাংলাদেশে এখনো ফায়ার হাইড্রেন্ট স্থাপন শুরু না হলেও এ ব্যবস্থা চালু করা এখন সময়ের দাবি। শুধু তাই নয়, ফায়ার সার্ভিস ব্যবস্থাকে আরো উন্নত, বিদেশে উন্নত প্রশিক্ষণ, উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে। ঢাকার রাস্তাঘাটকে যানজট মুক্ত রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপসহ নানামুখী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

অগ্নিকান্ড নিয়ন্ত্রণে আমাদের সক্ষমতা নিয়ে বারবার প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। কিছুদিন পরপর বাংলাদেশে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। প্রায়ই মানুষ প্রাণ হারায়; অনেকে আহত হয়। ক্ষতি হয় কোটি কোটি টাকার সম্পদ। কয়েকদিন হইচই চলে। কিন্তু কয়েকদিনের মাথায় সেটা কালের গর্ভে হারিয়ে যায়। অগ্নিকান্ডের তদন্ত রিপোর্ট নিয়ে জনমনে যে খুব বেশি স্বস্তি তাও নয়। কারণ বারবার একই দৃশ্যের অবতারণা! গলদ কোথায়? ইতোপূর্বে তাজরিন ফ্যাশন, হাসেম ফুডসহ বহু কারখানায় আগুনে প্রাণহানি ঘটেছে। নিয়ম অনুয়ায়ী অগ্নিকান্ডে যারা নিহত বা আহত হয়েছেন তাদের যে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ক্ষেত্রে গড়িমসি ও নানা ধরনের কৌশলের আশ্রয় নিয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ।

সীতাকুন্ডের ঘটনায় অনিয়ম, গাফিলতি এবং দায়িত্বহীনতার চরম বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে অর্ধশতধিক মানুষের মৃতু্য ছিল হৃদয়বিদারক ও মর্মান্তিক। বাংলাদেশের শ্রম আইন অনুযায়ী বড় আকারের কোনো স্থাপনা ও কারখানায় অগ্নিনিরাপত্তা পরিকল্পনা থাকা বাধ্যতামূলক। কিন্তু শ্রম আইনের এই বিধানটি কেবল কাগজেই থেকে গেছে বলে মনে হয়। কারখানাগুলোতে শ্রমিকের নিরপত্তার বিষয়ে কর্তৃপক্ষ সত্যিকার অর্থেই আন্তরিক নন। যদি তাই হতো, তাহলে বারবার এমনটি ঘটতো না।

হঠাৎ করে কোনো আগুনের ঘটনা বাড়ছে প্রশ্নে বিশ্লেষকরা বলছেন, বড় বড় আগুনের ঘটনায় 'অবহেলাজনিত' কারণ বিষয়টি বারবার দেখা যাওয়ার পরেও বিচারের মুখোমুখি করতে দেখা যায়নি। বিচারহীনতার কারণে যারা দায়ী তারা সর্তক হওয়ার প্রয়োজন বোধ করেন না। ফলে যে কোনো দুর্ঘটনা এড়াতে তার যেসবে প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা নেয়ার কথা তা তারা নেয় না।

এর আগে ঘন ঘন আগুন ট্র্যাজেডি নিয়ে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সাবেক নির্বাহী পরিচালক, নূর খান বলেছেন, ধারাবাহিকভাবে এ ধরনের অগ্নিকান্ডের কারণ হিসেবে নাশকতার একটি কারণ থাকতে পারে। তিনি বলেন, এসব ক্ষেত্রে দু'ধরনের বিষয় ঘটে থাকে। এক 'অবহেলাজনিত ও আরেক নাশকতামূলক'। বাংলাদেশে বর্তমানে প্রতিটা ক্ষেত্রে দায়িত্বের জায়গায় এক ধরনের অবহেলা লক্ষ্য করা যায়।

বিচারহীনতাকে কারখানায় ঘনঘন অগ্নিকান্ডের অন্যতম কারণ উলেস্নখ করে শ্রমিক নেতা শহীদুল ইসলাম বলেন, সবখানেই আগুনের পেছনে মালিকপক্ষের অবহেলা ছিল বলে তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। পুরান ঢাকা থেকে এখনো কেমিক্যালের গুদাম সরানো হয়নি। একজন মালিককেও কাজের (অবহেলা) জন্য বিচারের মুখোমুখি হতে হয়নি। ফলে সবচেয়ে দুর্বল হিসেবে শ্রমিক সমাজকে বারবার মৃতু্যর মুখোমুখি হতে হয়েছে, হচ্ছে। নামমাত্র ক্ষতিপূরণেই চুপ থাকতে হচ্ছে তাদের। আর অন্যরা ঝুঁকি নিয়েই আবার নেমে পড়েছে জীবনযুদ্ধে। আসলে তাদের জন্য কথা বলার কেউ নেই।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, অগ্নিকান্ডের ঘটনা নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করা উচিত এবং দোষীদের বিচারের আওতায় আনা উচিত। আইএলও কনভেনশনের ১২১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং আহত শ্রমিকদের সুস্থতা ও ভবিষ্যৎ নিরপত্তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। বড় বড় অগ্নিকান্ডের পর কয়েকদিন হইচই থাকলেও তা হঠাৎ ঝিমিয়ে পড়ে। এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে বরং সেজন্য ঘনঘন মনিটরিং করা এবং পর্যাপ্ত নীতিমালা ও নির্দেশনা তৈরি করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ ও প্রতিবেদন অনুযায়ী পর্যাপ্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

দেশের প্রত্যেকটি আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী যাতে (বঙ্গবাবাজার/ নিউমার্কেট) যেন পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ পান সেটা নিশ্চিত করতে হবে। এটা যেন শুধু লোক দেখানো কিংবা পুনর্বাসনেই সীমাবদ্ধ না থাকে- সেটা নিশ্চিত করতে হবে। স্থায়ী মার্কেট করে যাদের দোকান ছিল তাদের বরাদ্দ দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

সর্বোপরি জবাবদিহিতা এবং স্বচ্ছতার জায়গাটিকে আরও স্বচ্ছ ও দৃঢ় করতে হবে। প্রাতিষ্ঠানিক জবাবদিহিতার পাশাপাশি আইনের শাসন না থাকলে আদৌ এগুলো সমাধান সম্ভব নয়। নজরদারির তৎপরতার ওপর নির্ভর করে অনেক কিছু। আমরা চাই না বারবার আগুনের লেলিহান শিখা কেড়ে নিক আমাদের দেশের কোটি কোটি সম্পদ আর মূল্যবার জীবনকে। আমরা আর চাই না সেই কথাটি শুনতে.... 'ঈশ্বর যদি করেন কর্তা যদি মরেন তাহলে ঘরে বসেই কান্না শুনতে হবে'।

হাসি ইকবাল : নাট্যকার, কবি ও প্রাবন্ধিক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে