সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

দ্রম্নত বর্ধনশীল অর্থনীতি চ্যালেঞ্জও মোকাবিলা করতে হবে

নতুনধারা
  ০৯ মে ২০২৩, ০০:০০

একটি দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের সঙ্গে অর্থনৈতিক অগ্রগতি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জন ও অগ্রগতির বিষয়টি নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। কেননা, দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি নিয়ে বিভিন্ন সময়ে নানা ধরনের আলোচনাও উঠে এসেছে। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে চ্যালেঞ্জ আছে উলেস্নখ করে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) মিশনপ্রধান রাহুল আনন্দ বলেছেন, 'এই চ্যালেঞ্জিং অর্থনীতিতেও বাংলাদেশ একটি বর্ধনশীল দেশ।' তবে বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতের ওপর চাপ অব্যাহত থাকবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। আমরা মনে করি, বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের আমলে নিতে হবে এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণও জরুরি।

উলেস্নখ্য, রাহুল আনন্দের নেতৃত্বে দলটি বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনা করতে গত ২৫ এপ্রিল ঢাকায় আসেন। তিনি এটাও বলেছেন, মূল্যস্ফীতি, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দাবস্থা ও প্রধান বাণিজ্যিক মিত্র দেশগুলোতে অর্থনৈতিক ধীরগতির কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে চ্যালেঞ্জ আছে। এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে দ্রম্নত বর্ধনশীল অর্থনীতি হিসেবে অবস্থান ধরে রাখতে পারলেও আগামীতে চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করতে হবে। ফলে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার বিষয়টি এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই।

আমরা বলতে চাই, আইএমএফ মিশন প্রধান রাহুল আনন্দ যে বিষয়গুলো আলোচনায় এনেছেন, সেগুলো আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ আবশ্যক। কেননা, বাংলাদেশ বর্ধনশীল এটি যেমন আলোচনায় আসছে, কিন্তু লক্ষণীয়, একইসঙ্গে চ্যালেঞ্জিং অর্থনীতির বিষয়টিও সামনে আসছে। ফলে চ্যালেঞ্জগুলো আমলে নেওয়া এবং সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই। প্রসঙ্গত বলা দরকার, গত ৩০ জানুয়ারি বর্ধিত ঋণ সুবিধার (ইসিএফ) আওতায় ৩৩০ কোটি ডলার এবং রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটির (আরএসএফ) আওতায় আরও ১৪০ কোটি ডলারসহ মোট ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ অনুমোদন করে আইএমএফ। আর সেই ঋণের শর্ত বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনা করতে প্রতিনিধিদল নিয়ে গত ২৫ এপ্রিল ঢাকা সফরে আসেন রাহুল আনন্দ। আমলে নেওয়া দরকার, তিনি বলেছেন, বৈরী অর্থনৈতিক পটভূমিতেও বাংলাদেশ এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে দ্রম্নত বর্ধনশীল অর্থনীতির একটি হিসেবে অবস্থান ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে- যা প্রশংসনীয়। কিন্তু একই সঙ্গে মূল্যস্ফীতি, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দাবস্থা ও প্রধান বাণিজ্যিক মিত্র দেশগুলোতে অর্থনৈতিক ধীরগতির কারণে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ও টাকার মানের ওপর চাপ বেড়েছে- যা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে- এটিও উলেস্নখ করেন। সঙ্গত কারণেই সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নেওয়া দরকার।

উলেস্নখ্য যে, গত বছরের ২৪ জুলাই আইএমএফের কাছে ঋণের আবেদন করে বাংলাদেশ। এরপর চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ অনুমোদন করে আইএমএফ। ঋণ অনুমোদনের তিন দিন পরই প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬২ লাখ ৭০ হাজার ডলার ছাড় করে। ঋণ চুক্তির সময় বেশ কিছু ক্ষেত্র সংস্কারে আইএমএফের শর্তে সম্মতি দিয়েছিল বাংলাদেশ। এরই মধ্যে আর্থিক খাতের কাঠামো ও নীতি সংস্কারের কিছু শর্ত বাস্তবায়নও করেছে সরকার। আর এবার অক্টোবর মাসে দ্বিতীয় কিস্তি ছাড়ের আগে অগ্রগতি মূল্যায়নের জন্য বাংলাদেশ সফর করল আইএমএফের প্রতিনিধিদলটি।

আমরা বলতে চাই, বৈরী অর্থনৈতিক পটভূমিতেও বাংলাদেশ এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে দ্রম্নত বর্ধনশীল অর্থনীতির একটি হিসেবে অবস্থান ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে- এটি ইতিবাচক। তদপুরি সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার, যেসব অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ আছে তা মোকাবিকলা করতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা। আর এই লক্ষ্যে করণীয় নির্ধারণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়ন জরুরি।

সর্বোপরি বলতে চাই, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও অগ্রগতি নিশ্চিত করতে সব ধরনের পদক্ষেপ জারি রাখা বাঞ্ছনীয়। বিভিন্ন সময়ে দেশের অগ্রগতির বিষয় যেমন সামনে এসেছে, তেমনি এটাও মনে রাখতে হবে নানা ধরনের চ্যালেঞ্জও আলোচনায় এসেছে। ফলে সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে। অগ্রগতি ধরে রাখতে প্রয়োজনীয় সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে। দেশের অগ্রগতি এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকুক এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে