সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

শব্দদূষণ রোধে সঠিক উদ্যোগ জরুরি

নতুনধারা
  ২৮ মে ২০২৩, ০০:০০

কিছুতেই রোধ করা যাচ্ছে না শব্দদূষণ। আশার কথা, শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে পরিবহণ চালকসহ অন্যান্য শ্রমিকদের নিয়ে সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২৬ মে শুক্রবার রাজধানীর পূর্বাচলের ড্রাইভার্স ট্রেনিং সেন্টার-ডিটিসি মিলনায়তনে এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। পরিবেশ অধিদপ্তরের উদ্যোগে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত ও অংশীদারিত্বমূলক প্রকল্পের অধীনে এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে দুই শতাধিক পরিবহণ শ্রমিক শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে অযথা হর্ন না বাজানোর অঙ্গীকার করেন। এটা সত্য শব্দদূষণ হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপসহ ৩০টি রোগের কারণ। হাইড্রোলিক হর্ন বহু আগেই নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বিধিমালা অনুসারে, এই হর্ন ব্যবহার করলে তার শাস্তি রয়েছে। এছাড়া বিধিমালা অনুসারে, নীরব এলাকায় গাড়ির চালকদের হর্ন না বাজানোসহ বিভিন্ন এলাকায় কী কী নিয়ম মানতে হবে তা তাদের জানতে হবে।

পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে আইন জানতে হবে। এজন্য আমরা বিভিন্ন পর্যায়ে এ বিষয়ে সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ কর্মশালা আয়োজন করে যাচ্ছি।

ঢাকা শহরে প্রায়ই দেখা যায় ফাঁকা রাস্তায় বিকট শব্দে হর্ন বাজিয়ে দ্রম্নতগতিতে ছুটছে গাড়ি ও বাইক। পুরো রাস্তা প্রায় খালি থাকার পরও হর্ন বাজায় অনেক চালক। কারণে-অকারণে হর্ন বাজানোর প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। অন্যের কান ঝালাপালা হলেও চালকের যেন তাতে কিছু এসে যায় না। শুধু রাজধানী ঢাকায়ই নয়, সারাদেশেই শব্দদূষণ দিন দিন বাড়ছে। অনেক চালকের মনোভাব দেখে মনে হয়, শুধু হর্ন দিলেই সব সমাধান হয়ে যাবে, কিন্তু হয় উল্টোটা। সমাধানের বদলে আশপাশে থাকা মানুষ মানসিক ও শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে।

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের কাউন্সেলিং ইউনিটের সাইকোলজিস্ট সাফিনা বিনতে এনায়েত বলেন, উচ্চ শব্দে মানুষের উচ্চ রক্তচাপ, হৃদ্‌রোগ ও উদ্বেগজনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে। এসব সমস্যা হতে পারে সব বয়সের মানুষেরই। তবে বিশেষভাবে ক্ষতি হতে পারে শিশুদের। দিনের পর দিন শব্দদূষণের শিকার হওয়া শিশুদের মনোযোগ দেওয়া ও কিছু পড়ার ক্ষমতা লোপ পেতে পারে। মাত্রাতিরিক্ত শব্দদূষণ ঢাকার বাসিন্দাদের মানসিক অস্থিরতা বাড়িয়ে দিচ্ছে। অতিরিক্ত হর্নের কারণে নাগরিকদের মানসিক স্বাস্থ্যেরও অবনতি ঘটছে।

সম্প্রতি এক জরিপে দেখা গেছে, ঢাকা শহরে শব্দদূষণের কারণে অনেক মানুষের শ্রবণশক্তি হ্রাস পেয়েছে। শব্দদূষণকে বলা হয় নীরব ঘাতক। বিশেষ করে ঢাকা শহরে শব্দদূষণের বহু উৎস রয়েছে- যা জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি। গাড়ির হর্ন, নির্মাণকাজ, মাইকের ব্যবহার, শিল্পকারখানা এসব ক্ষেত্রে শব্দদূষণ হয় সবচেয়ে বেশি। আর শব্দদূষণের ক্ষেত্রে যে নিয়ম রয়েছে, তাও সঠিকভাবে মানা হয় না।

দীর্ঘসময় অতিরিক্ত শব্দের মধ্যে থাকার কারণে হাইপারটেনশন, আলসার, হৃদ্‌রোগ, মাথাব্যথা, স্মরণশক্তি হ্রাস, স্নায়ুর সমস্যা ও মানসিক চাপ তৈরি হতে পারে। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় কান। অতিরিক্ত শব্দের মধ্যে দীর্ঘদিন কাটালে শ্রবণশক্তি ধীরে ধীরে কমে যাওয়ার, এমনকি বধির হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। শব্দদূষণ রোধে সরকারের কার্যকর উদ্যোগ জরুরি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে