সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

বেড়েছে মোটর সাইকেল দুর্ঘটনা সড়ক নিরাপদ করতে হবে

নতুনধারা
  ০২ জুন ২০২৩, ০০:০০

নানা ধরনের উদ্যোগেও সড়ক নিরাপদ করা সম্ভব হচ্ছে না। সড়কে বেড়েছে মোটর সাইকেল দুর্ঘটনা। অপরিপক্ব লোকের হাতে মোটর সাইকেল চলে গেছে, ফলে ৪০ শতাংশ মোটর সাইকেল দুর্ঘটনায় মানুষ মারা যাচ্ছেন। এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে কাঠবোঝাই ট্রাক্টরের ধাক্কায় তিন মোটর সাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও একজন। বুধবার সকালে উপজেলার দেবীডুবা ইউপির অন্তর্গত কালুরহাট কাটহারি এলাকায় বোদা-দেবীগঞ্জ মহাসড়কে এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। এর আগে সড়ক পরিবহণ সচিব বলেছিলেন, আমরা যদি ২০১০ ও ২০২৩ সালের পরিসংখ্যান দেখি, তাহলে খেয়াল করব আমাদের সড়ক ও যানবাহনের সংখ্যা বেড়েছে। ফিটনেসবিহীন গাড়ি নিয়ন্ত্রণে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চলছে। অনেক সময় গাড়ি লুকিয়ে রাখা হয়। দেশে যদি ৫০ লাখ গাড়ি থাকে, তাহলে সমপরিমাণ চালক আছে। দেশের প্রায় পাঁচ কোটি মানুষের জীবন-জীবিকা এই পেশার সঙ্গে জড়িয়ে গেছে। আমরা এটিকে নিরাপদ করতে কাজ শুরু করে দিয়েছি।

এটা সত্য, মোটর সাইকেল দুর্ঘটনার কারণ কিশোর-যুবকদের বেপরোয়াভাবে মোটর সাইকেল চালানো; অতি উচ্চগতির মোটর সাইকেল ক্রয়ে সহজলভ্যতা ও চালনায় বাধাহীন সংস্কৃতি; মোটরযান চালকদের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা; দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা; সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারির শিথিলতা; বাস-ট্রাক-পিকআপ-প্রাইভেটকার-মাইক্রোবাসসহ দ্রম্নতগতির যানবাহনের বেপরোয়া গতি; চালকদের অদক্ষতা ও অস্থিরতা; ইজিবাইক-সিএনজি-নসিমন-ভটভটি ইত্যাদি স্বল্পগতির যানবাহন অদক্ষ হাতে চালানো; সড়ক-মহাসড়কে ডিভাইডার না থাকা; কিশোর-যুবকদের গতির প্রতি আকৃষ্ট করতে মোটর সাইকেলের বিজ্ঞাপনের উত্তেজনাকর ভাষা-ভঙ্গি; সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ে সচেতনতামূলক প্রচারণা না থাকা; পারিবারিকভাবে সন্তানদের বেপরোয়া আচরণকে প্রশ্রয় দেওয়া এবং দেশে কলুষিত রাজনীতির পৃষ্ঠপোষকতায় কিশোর-যুবকদের মধ্যে বেপরোয়া মোটর সাইকেল চালানোর সংস্কৃতি গড়ে ওঠা ইত্যাদি।

বলার অপেক্ষা রাখে না, দেশে যাতায়াতজনিত দুর্ঘটনা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। প্রতিদিনই দেশের কোনো না কোনো অঞ্চলে দুর্ঘটনায় মানুষ মারা যাচ্ছে। বিশেষ করে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃতু্যর বিভীষিকা থেকে কিছুতেই যেন রক্ষা নেই এ দেশের মানুষের। কিন্তু ভয়াবহ এ দুর্ঘটনাগুলো কেন হচ্ছে, কারা এর জন্য দায়ী- তা শনাক্ত করে দায়ীদের শাস্তি নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মনোযোগ ও তৎপরতা চোখে পড়ছে না। দুর্ঘটনা প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করার কারণেই এর পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। যথাযথ পদক্ষেপ না নেওয়ার কারণেই এ দেশের মানুষ আপনজন হারিয়ে চোখের পানি ঝরাচ্ছে আর নিঃস্ব হচ্ছে অসংখ্য পরিবার। আমরা মনে করি, সড়কে মোটর সাইকেল নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। মোটর সাইকেল আরোহীরা খুবই বেপরোয়া। ফলে যত্রতত্র দুর্ঘটনা ঘটছে।

দেশে এক বছরে ৫ হাজার ৩৭১টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে মারা গেছেন ৬ হাজার ২৮৪ জন। সেই হিসাবে গড়ে প্রতিদিন সড়কে প্রাণ হারান ১৭ জন। অন্য এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, গত ১৫ বছরে সড়ক পথে ৫৫ হাজার মানুষের মৃতু্য হয়েছে। মনে রাখতে হবে, বড় বড় দুর্ঘটনা থেকে যদি আমরা শিক্ষা নিতে না পারি তবে ভবিষ্যতেও এর পুনরাবৃত্তি ঘটবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে