সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আবার খুন

কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে
নতুনধারা
  ২৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০

রোহিঙ্গা সংকটের যৌক্তিক সমাধানের ব্যাপারে মিয়ানমারের পক্ষ থেকে কেবল আশার বাণী শোনানো হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি- এমন বিষয় বারবার আলোচনায় এসেছে। এছাড়া, পর্যায়ক্রমে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন করা হবে- এ ধরনের আশ্বাস বাংলাদেশকে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তা বাস্তবে আলোর মুখ দেখেনি। আর এমন পরিস্থিতিতে বিভিন্ন সময়েই রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ঘটছে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা, ঘটছে খুনের মতো ঘটনাও।

এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, কক্সবাজারের উখিয়ায় পৃথক দুটি রোহিঙ্গা শিবিরে আধিপত্য বিস্তারের জেরে সন্ত্রাসী হামলায় এক কমিউনিটি নেতাসহ দু'জন নিহত হয়েছেন। ২১ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার ভোরে এ ঘটনা দুটি ঘটে।

আমরা মনে করি, এ ধরনের ঘটনা যখন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ঘটছে- তখন তা যেমন উদ্বেগের, তেমনিভাবে তা কতটা আশঙ্কাজনক বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে সেটাও এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। বলা দরকার, শুধু এবারের ঘটনাই নয়, এর আগেও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নানা ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। ফলে এবারের ঘটনা আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার, কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়নে কাজ করা। এর আগে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মিয়ানমারের সশস্ত্র রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীগোষ্ঠী আরএসও-আরসার কিলিং স্কোয়াডের সদস্যদের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনায় ওই চার রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে।

উলেস্নখ্য, শুধ এরকম ঘটনাই নয়, এর আগে জানা গিয়েছিল যে, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার পর মাদকের চোরাচালান বেড়েছে। যেখানে বলা হয়, মাদকের হাব হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে রোহিঙ্গা এলাকাকে। এছাড়া নানা সময়ে রোহিঙ্গা এলাকায় ঘটছে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। সশস্ত্র রোহিঙ্গারা দিন দিন দেশের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রম্নপের মধ্যে গোলাগুলি, খুন, রাহাজানি, ছিনতাই, মাদক পাচার ও অস্ত্র তৈরি রীতিমতো স্থানের মধ্যে আতঙ্ক ও উদ্বেগ বিরাজ করছে। আমরা মনে করি, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে নানা আঙ্গিকে যে বাড়তি চাপ ও ঝুঁকি সৃষ্টি হচ্ছে- তা এড়ানোর সুযোগ নেই। কেননা, মানবিক বিবেচনায় রোহিঙ্গাদের ভার বহন করতে গিয়ে এই চাপ নিতে হচ্ছে।

এখানে বলা দরকার, মিয়ানমারের রাখাইন থেকে সেনাবাহিনীর গণহত্যা ও নির্যাতনের মুখে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট হত্যা-নির্যাতন শুরুর কারণে মাত্র কয়েক মাসে সাত লাখ ৩৯ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। এ ক্ষেত্রে এটাও বলা দরকার, প্রাণভয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা নাগরিকদের মানবিক কারণে আশ্রয় দিতে বাধ্য হয়েছিল বাংলাদেশ। সেই থেকে বিশ্বের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ দেশ অনেকটা এককভাবেই মোকাবিলা করছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী সংকট। আমরা মনে করি, প্রত্যাবাসন সফল না হলে বাংলাদেশের জন্য স্বাভাবিকভাবেই তা উদ্বেগের। একই সঙ্গে বাড়তে থাকবে নানা ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাও। ফলে সার্বিক অর্থে, রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান নিহিত রয়েছে মিয়ানমারে তাদের নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবর্তনের ওপর। যা আমলে নিয়ে উদ্যোগ অব্যাহত রাখার বিকল্প নেই।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে