অড্রি হেপবার্ন (৪ মে, ১৯২৯- ২০ জানুয়ারি, ১৯৯৩) ছিলেন একজন ব্রিটিশ অভিনেত্রী এবং মানবহিতৈষী। হলিউডের স্বর্ণযুগের সময় সক্রিয় থাকায় হেপবার্ন একজন চলচ্চিত্র ও ফ্যাশন আইকন হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন। আমেরিকান ফিল্ম ইনস্টিটিউট কর্তৃক মার্কিন চলচ্চিত্র ইতিহাসের তৃতীয় সেরা নারী কিংবদন্তি হিসেবে স্বীকৃতি পান। অনেকের মতে তিনি সর্বকালের অন্যতম প্রকৃতিগতভাবে সুন্দর নারী। ইক্সেলেস, বেলজিয়ামের ব্রাসেলসের একটি জেলায় জন্মগ্রহণকারী হেপবার্ন শৈশবের অধিকাংশ সময় কাটান বেলজিয়াম, ইংল্যান্ড ও নেদারল্যান্ড এই তিন দেশে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানদের দখলে থাকা নেদারল্যান্ডের আর্নহেম শহরেও তিনি অবস্থান করেছিলেন। আমস্টারডামে থাকাকালীন, তিনি সোনিয়া গাস্কেলের সঙ্গে ব্যালে নিয়ে পড়াশোনা করতেন। সমবেত সঙ্গীতদলের একজন হিসেবে ওয়েস্ট অ্যান্ড মিউজিকাল প্রোডাকশনে কাজ করার সুযোগ পান। তিনি কয়েকটি ভাষায় দক্ষ ছিলেন, এর মধ্যে ইংরেজি, ফরাসি, ওলন্দাজ, ইতালীয়, স্পেনীয় ও জার্মান অন্তর্ভুক্ত। অভিনয় জীবনের প্রথমদিকে কয়েকটি ব্রিটিশ চলচ্চিত্রে উপস্থিতি এবং ১৯৫১ সালে ব্রডওয়ে নাটক জিজিতে অভিনয়ের পর, হেপবার্ন রোমান হলিডে চলচ্চিত্রে তিনি প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন, যার জন্য তিনি প্রথম অভিনেত্রী হিসেবে একইসঙ্গে একটি একাডেমি পুরস্কার, একটি গোল্ডেন গেস্নাব এবং একক কর্মসঞ্চালনের জন্য বাফটা পুরস্কার অর্জন করেন। একই বছর, তিনি অনডিন নাটকে অভিনয়ের জন্য মঞ্চনাটকে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর জন্য টনি পুরস্কার অর্জন করেন। হেপবার্ন স্বল্পসংখ্যকদের মধ্যে একজন যিনি একাডেমি, এমি, গ্র্যামি ও টনি পুরস্কার পেয়েছেন। তিনি শ্রেষ্ঠ ব্রিটিশ অভিনেত্রী হিসেবে তিনবার বাফটা পুরস্কার অর্জনের রেকর্ড করেন। তার বয়স বাড়ার সঙ্গে তিনি অভিনয়জগৎ থেকে দূরে সরে যান। ইউনিসেফের হয়ে জনহিতৈষী কাজে নিজেকে নিয়োজিত করেছিলেন। যদিও এই সংগঠনের সঙ্গে তিনি ১৯৫৪ সাল থেকেই যুক্ত ছিলেন, ১৯৮৮ থেকে ১৯৯২ সালের মধ্যে তিনি আফ্রিকা, দক্ষিণ আমেরিকা ও এশিয়ার দরিদ্র সম্প্রদায়ের জন্য কাজ করেছিলেন। ইউনিসেফের শুভেচ্চা দূত হিসেবে কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৯২ সালের ডিসেম্বরে তাকে প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম পদকে ভূষিত করা হয়। এর এক মাস পর, এপেন্ডিক্স ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে সুইজারল্যান্ডে নিজ বাসায় ৬৩ বছর বয়সে তিনি মৃতু্যবরণ করেন।