সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
সা ক্ষা ৎ কা র

সবকিছুরই ধারা বদলে গেছে

মনির খান- দেশের পেস্ন-ব্যাক ও অডিও গানের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী। নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেল 'মনির খান অফিসিয়াল চ্যানেল' এবং 'এম চ্যানেল-২৪' মাধ্যমেও তার নিজের গান নিয়মিত আপলোড করেন। আসন্ন ঈদেও এ দুটো চ্যানেলসহ বিভিন্ন চ্যানেলের জন্য গান করছেন। শিল্পীর এ ব্যস্ততা নিয়ে কথা বলেছেন মাতিয়ার রাফায়েল
নতুনধারা
  ০৬ জুন ২০২৩, ০০:০০

ঈদকে সামনে রেখে নিশ্চয়ই বেশ ব্যস্ত এখন?

আপনি যখন ফোন করেন একটি কোম্পানির সঙ্গে এ নিয়েই এনগেজড ছিলাম। ডিপি মিউজিকের জন্য ৫টি গান করব। নিজের ইউটিউব চ্যানেল মনির খান অফিসিয়াল এবং এম চ্যানেল-২৪ দুটোর জন্যও চারটি গান করছি। আরও দু-একটি চ্যানেল মিলিয়ে ১০-১২টি গান হবে। এগুলো ঈদের আগেই প্রকাশ পাবে। এগুলোর ভয়েস, ভিডিও এসব নিয়েই চাপের মধ্যে আছি। আজকেই একটি গানের জন্য ভয়েস দেব।

কিছু গানের শিরোনাম বলবেন?

হঁ্যা, বলা যাবে। গানগুলো 'কাঁদতে এত যে সুখ' 'দুঃখ রাশির মানুষ আমি', 'একদিনও কাটে না তোমায় ছাড়া', 'আতা গাছে তোতা পাখি', 'এক যমুনা ভালোবাসা'- এ রকম আরও কিছু শিরোনামের গান আছে।

গানগুলো রোমান্টিক ও বিরহ ধাঁচের হলেও 'আতা গাছে তোতা পাখি' যেন হাস্যরসের?

এই গানটি লিখেছেন লন্ডনপ্রবাসী প্রসেনজিৎ দাদা। গানটি যোগীন্দ্রনাথ সরকারের তোতাপাখি নামে ছড়াগান আছে- সেই যে ছোটবেলায় আমরা ছড়া কেটে দুষ্টুমি করতাম- সেই চিরচেনা কথাগুলো নিয়েই গানটি লিখেছেন। এই গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছি আমি আর সালমা। আর 'একদিনও কাটে না তোমায় ছাড়া' গানটি লিখেছেন পস্নাবন কোরেশি। এটাও ডুয়েট গান। আমার সঙ্গে কণ্ঠ দিয়েছেন তোশিবা। যিনি নয়া দামান গেয়ে আলোচিত হয়েছেন।

সব তো মিউজিক ভিডিওই করছেন-

কিন্তু পেস্ন-ব্যাক?

পেস্ন-ব্যাকে আসলে আগের জায়গায় নেই। সবকিছুরই ধারা বদলে গেছে। ইন্ডাস্ট্রিতেও টানাপড়েন চলছে। মোট কথা, গান এখন ফিল্মকেন্দ্রিক নেই। আগে একটি মহরত অনুষ্ঠান যেরকম সরগরম থাকত সেটা নেই। এখন কোথায় কী গান হচ্ছে কেউ জানছেও না, দেখছেও না। ফিল্ম তো গোপনীয় কিছু নয়। ফিল্ম মানে বড় পর্দার ব্যাপার। ফিল্মের এই আলাদাকরণের জন্যই তার নিজের জায়গাটি হারিয়ে বসেছে।

সিনেমা এবং মিউজিক ভিডিওর গান কি এখন প্রায় একই হয়ে যাচ্ছে?

আগের পেস্ন-ব্যাক ছিল স্ক্রিপ্ট কেন্দ্রিক- এখন সেটা নেই। আগে গান যেমন শোনার ব্যাপার ছিল সেরকম নেই। তখন ফিল্মের গান এমনভাবেই হতো- সিনেমাটি না দেখেও গভীর মন দিয়ে শোনা যেত। এখন সে রকম হয় না। সেই যে এ্যান্ড্রু কিশোরের 'আমার সারা দেহ খেও গো মাটি', 'ডাক দিয়েছেন দয়াল আমারে'- এসব গান ছবি না দেখেও চোখ বুজেই শুনতে ভালো লাগে। এখন চোখে না দেখলে গানটি ভালো লাগে না। এখন মিউজিক ভিডিওর মতোই ফিল্মের গানও চলে গেছে চোখে- ফিল্মের গান এখন আর অন্তরে নেই।

এই পরিবর্তন কি স্টেজেও আসছে?

স্টেজের ব্যাপারটা আলাদা। স্টেজে মানুষ সবসময়ই একটু রিদমিক, একটু নাচানাচি, অঙ্গভঙ্গি- এমন গান শুনতে চায়। বক্তব্যধর্মী, রোমান্টিক চায়। আমরা এ ধরনের গানই গাইতে চেষ্টা করি। গানের গায়কী ঢং অনুযায়ী স্টেজে যার যেমন ভক্ত সেরকমই গাওয়া হয়। আমি এক্ষেত্রে খুবই লাকি, শ্রোতারা যেমন গান চান সেরকম গান দিতে পারি। আমার দিক থেকে শ্রোতাদের পরিবর্তন হয়নি। আমি সবসময় প্রাধান্য দিই সৃষ্টিকে- সময়কে নয়। সৃষ্টিকে প্রাধান্য দিলে সে গান মানুষ সব সময়ই শুনবে- সময়কে প্রাধান্য দিলে শুধু ওই সময়ের জন্যই শুনবে। এরপর শুনবে না।

এখন অসংখ্য মাধ্যমে সবাই ব্যস্ত- এর মধ্যে সৃষ্টিশীল গান কতটুকু হবে?

আমাদের গানের অবস্থা খারাপ হয়েছে রিয়েলিটি শো'র কারণেই। একজন পড়াশোনা করে প্রাইমারি, এসএসসি হয়ে মাস্টার্স করল আরেকজন ভোটের মাধ্যমে এমপি হলো- দুটোই এক হবে? সেরকম একজন গুরুমুখী বিদ্যা অর্জন করে শিল্পী হওয়া আরেকজন অধ্যাবসায় ছাড়াই ভাইয়ামুখী হয়ে পরের ওপর নির্ভর করে পরগাছার মতো এসএমএসে ভোটের মাধ্যমে চ্যাম্পিয়ন হওয়া শিল্পী- দুটোই এক হবে? সম্পূর্ণ ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে চালু করা রিয়েলিটি শো-ই আমাদের গানের বারোটা বাজিয়ে দিচ্ছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে