সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১
সা ক্ষা ৎ কা র

বারো মিশালি কাজ করতে চাই না

দেবলীনা সুর- তার প্রধান পরিচয় রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী। এছাড়া ধ্রম্নপদী, আধুনিক ও লোকসঙ্গীত গেয়ে থাকেন। গানের উপস্থাপনাও করেন। প্রায়ই তাকে বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে গাইতে দেখা যায়। মাঝে মাতৃত্বের কারণে অনুপস্থিত ছিলেন। এখন আবার তাকে নিয়মিতই দেখা যাচ্ছে। এ নিয়ে এ শিল্পীর সঙ্গে কথা বলেছেন মাতিয়ার রাফায়েল
নতুনধারা
  ১৫ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০

কেমন আছেন?

এই তো ভালোই। আসলে সব সময়েই একটা মাতৃত্বের দায়িত্বে থাকি। এ কারণে অন্য বিষয়ে মনোযোগ দিতে পারি না। মোবাইলটাও থাকে সাইলেন্স করা, কখন কে ফোন দিল সেটা দেখাও হয় না। তখন অনেকে আমাকে ভুল বুঝে বসেন। কিন্তু কী আর করা এখন তো এই ডিউটাই প্রধান। এই মেয়েটাই আমার সবকিছুর ঊর্ধ্বে। চেষ্টা করছি যাতে সে সুন্দরভাবে বড় হতে পারে। তাই তার কেয়ার নিতে নিতে কখন যে সময় চলে যায় টেরই পাই না।

তারপরেও তো মাঝে মাঝে টিভিতে

দেখা যায় গান করছেন?

হঁ্যা, মাঝে মাঝে এরই ফাঁকে টিভিতে গান রেকর্ড করাতে যাই। তবে আগে যেমন টিভিতে যাওয়ার আগে সুন্দরভাবে সেজেগুজে যেতাম এখন আর সেটা হয় না। আমি এমনিতেই অতি মাত্রায় সংসারী মানুষ তার ওপর এই মেয়েটাকে নিয়ে যেভাবে পড়ে থাকি তাতে তো সময়ই হয় না সাজগোজ করার। আসলে এখন আমার এটাই বাস্তবতা। তবে আমি করছি। খুব কষ্ট করে হলেও করছি।

এর মধ্যে একটা সিনেমাতেও যুক্ত হলেন!

সে তো অনেক দিন হয়ে গেল। রবীন্দ্রবিষয়ক একটা শিশুতোষ চলচ্চিত্রের গান। ছবিটি বোধহয় কোনো দেশাত্মবোধক সিনেমা। নামটিও মনে নেই ('নুলিয়াছড়ির সোনার পাহাড়')। বাপ্পা দা'র সঙ্গীতায়োজনে 'মোর ভাবনারে কী হাওয়ায় মাতালো'- বেশ দারুণ একটা রবীন্দ্রসঙ্গীত গেয়েছি। গৌড়মলস্নার রাগের এবং ত্রিতাল তালের এই গানটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছিলেন ১৯২৯ সালের ২৯ আগস্ট। গানটির স্বরলিপিকার শৈলজারঞ্জন মজুমদার।

রুনা লায়লার মতো সিনেমায় অভিনয় করতে চান নাকি?

সেই সুযোগও আমার ছিল। তবে আমি বারো মিশালি কাজ করতে চাই না। সিনেমার অভিনয়ে অনেক প্রস্তাব এসেছে। আপনাদের মতো সাংবাদিকদের থেকে অনেক ডিরেক্টর আমার নম্বর নিয়ে ফোনও দিয়েছেন বিভিন্ন সময়ে। তখন ব্যাপারটা আমার কাছে খুব হাস্যকরই মনে হয়েছে। আমি আসলে চাই না এত লোড নিতে। উপস্থাপনাসহ অনেক কিছুই তো করি। আবার সিনেমায় অভিনয়! ভাবতেই পারি না। সত্যি কথা বলতে কি এসব ভাবতে গেলেই আমার মাথা একেবারে বস্নাংক হয়ে যায়। আমি চাই একটা মানুষের পরিচিতি এককেন্দ্রিকই থাকুক।

নতুন কোনো গান আনছেন?

মনে মনে ঠিক করে রেখেছি রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে নতুন একটা গান তৈরি করার। এর মধ্যে চেন্নাইতে গিয়েছিলাম। লম্বা একটা সময় ছিলাম সেখানে। ভ্রমণ করেছি। সপ্তাহ খানেক হলো ফিরেছি। সেজন্য নতুন গান নিয়ে কাজ করতে পারিনি। গান তো অনেক গাওয়াই আছে। চাইলেই সেগুলো নতুন গান হিসেবে ছাড়া যায়। তবে এখন বর্ষা সিজন হওয়ায় গানের জন্য একটা বৈরী পরিবেশ যাচ্ছে।

রবীন্দ্রসঙ্গীতে সিনিয়ররা নতুনদের নাম নিতে চান না কেন?

এজন্য আমাদের মানসিকতাও দায়ী। আমরা নিজেদের যতই উদার বলি আসলেই কি উদার? সেটাই বড় প্রশ্ন। একজন শিল্পী কি, তিনি তো সাধক। সাধক মানে কি, যার সবটাই সাদা। এজন্য মনটাও সাদা থাকতে হয়। কথায় বলে যার মন সাদা সে-ই সাধনা করতে পারে। যদি আমরা এমন সাদা মনের হতাম এটা হতো না। এখন তো আমরা যে ফ্ল্যাটে থাকি তার পাশের ফ্ল্যাটেরই খোঁজ রাখি না। সবাই নিজ নিজ স্বার্থ নিয়েই ব্যস্ত। ডানে-বাঁয়ে কী হচ্ছে কোনো খোঁজই নেওয়া হয় না। তবে যারা শিক্ষক, যদি তিনি শিল্পী হন তিনি তার শিক্ষার্থীদের মাঝে সম্ভাবনা দেখেন। এর বাইরেও আছে, এ নিয়ে খোঁজ থাকে না।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে