শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
দাম নিয়ন্ত্রণে শুল্ক কমিয়ে এনবিআরের প্রজ্ঞাপন

কমছে পেঁয়াজের দাম

যাযাদি রিপোর্ট
  ১৫ অক্টোবর ২০২১, ০০:০০

হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়া পেঁয়াজের দাম পাইকারি ও খুচরা দুই বাজারে কেজিপ্রতি ৮ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। বৃহস্পতিবার কেজিপ্রতি ৮ টাকা কমে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকা কেজিতে। আর ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৩-৫৪ টাকা কেজিতে।

এদিকে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুরোধের পর পেঁয়াজ ও চিনির দাম নিয়ন্ত্রণে শুল্ক কমিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। পেঁয়াজ আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ এবং চিনির নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক (আরডি) ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ করা হয়েছে।

অন্যদিকে, বৃহস্পতিবার রাজধানীর পেঁয়াজের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার শ্যামবাজারে বুধবারের চেয়ে কেজিপ্রতি ৮ টাকা কমে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকা কেজিতে। আর ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৩-৫৪ টাকা কেজিতে।

প্রায় একই চিত্র রাজধানীর কারওয়ান বাজারে। এ বাজারে ৫০-৫৫ টাকা কেজিতে পাইকারি দরে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে দেশি সবচেয়ে ভালো পাবনার পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকা কেজিতে। আর ফরিদপুরের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৩-৫৪ টাকা কেজিতে। আর ভারতের পেঁয়াজ

বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজিতে। তবে খুচরা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬৩ টাকা কেজিতে।

এর প্রভাব পড়েছে রাজধানীর রামপুরা ও মালিবাগ এলাকার বাজারেও। এ বাজারগুলোতে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭৫ টাকা কেজি দরে।

শ্যামবাজারে ব্যবসায়ী রহমত আলী বলেন, 'পূজা ও বন্যার কারণে আমদানি কমায় পেঁয়াজের দাম গত দুই সপ্তাহ বেড়েছিল। এখন পেঁয়াজের আমদানি বাড়তে শুরু করেছে। ফলে পেঁয়াজের দামও কমতে শুরু করেছে। এটা তো পাইকারি বাজার। বুধবার ৬৩ টাকা কেজি পেঁয়াজ বিক্রি করেছি। তবে আজকে (বৃহস্পতিবার) বিক্রি করছি ৫৩-৫৫ টাকায়।'

কারওয়ান বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী মামুন বলেন, আজকে পেঁয়াজ বিক্রি করছি ৬২ টাকা কেজি। দুদিন আগেও ৭০-৭৩ টাকা কেজি পেঁয়াজ বিক্রি করেছি। কম দামে পেঁয়াজ কিনতে পেরেছি তাই কম দামে বিক্রি করতে পারছি। কোনো জিনিসের দাম বাড়লে সেই জিনিস কম বিক্রি হয়। ফলে গত কয়েকদিন পেঁয়াজ বিক্রি কমেছে।

রামপুরার ব্যবসায়ী আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ভালো মানের দেশি পেঁয়াজ আজ বিক্রি করেছি ৭০-৭৫ টাকা কেজি। আকারে একটু ছোট দেশি পেঁয়াজ বিক্রি কিনেছি ৬৫-৬৮ টাকায়। আর আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি করছি ৬৫ টাকা কেজিতে।

দাম নিয়ন্ত্রণে শুল্ক কমলো :বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুরোধের পর পেঁয়াজ ও চিনির দাম নিয়ন্ত্রণে শুল্ক কমিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। পেঁয়াজ আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। চিনির নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক (আরডি) ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের স্বাক্ষর করা এ সংক্রান্ত দুইটি পৃথক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

এর আগে গত ১১ অক্টোবর পেঁয়াজের শুল্ক প্রত্যাহার, অপরিশোধিত সয়াবিন তেল, পাম তেল ও চিনির শুল্ক কমাতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে অনুরোধ জানায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ওই দিন দুপুরে সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে নিত্যপণ্যের মজুত, সরবরাহ, আমদানি, মূল্য পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে আয়োজিত সভায় এ অনুরোধ জানানো হয়।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে অনুরোধ জানানোর তিন দিনের মাথায় পেঁয়াজ ও চিনি আমদানির শুল্ক কমানো হলো। বৃহস্পতিবার থেকেই নতুন শুল্কহার কার্যকর হবে। চিনির নতুন শুল্কহার কার্যকর থাকবে আগামী বছরের ২৮ ফেব্রম্নয়ারি পর্যন্ত। পেঁয়াজের নতুন শুল্কহার কার্যকর থাকবে আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

উলেস্নখ্য, দেশে করোনা মহামারির শুরু থেকেই নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছিল। সাধারণ ক্রেতাদের ধারণা ছিল সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে দাম কমবে। প্রায় এক মাস ধরে দেশে করোনা পরিস্থিতি মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কিন্তু নিত্যপণ্যের দামের ক্ষেত্রে তার কোনো প্রভাবই পড়ছে না। উল্টো আগের তুলনায় অনেক পণ্যের দাম দ্বিগুণ হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে