সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

দেশের শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীদের তালিকা চেয়ে হাইকোর্টে রিট

যাযাদি ডেস্ক
  ১৪ জুন ২০২৩, ০০:০০

প্রতি বছর ৫ হাজার কোটি টাকা পাচার হচ্ছে মাদক ব্যবসার কারণে। আর এ ঘটনা অনুসন্ধানের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে। রিটে আগামী দুই মাসের মধ্যে দেশের শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীদের তালিকা দাখিলের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার অ্যাডভোকেট সুবীর নন্দী হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট দায়ের করেন। রিটে অর্থ সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, আইজিপি, এনবিআরকে বিবাদী করা হয়েছে।

গত ১১ জুন 'মাদক ব্যবসার কারণে বছরে পাচার ৫ হাজার কোটি টাকা' শিরোনামে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনগুলো সংযুক্ত করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ থেকে মাদকের কারণে প্রতিবছর পাচার হয়ে যায় ৪৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা প্রায় ৫ হাজার ১৪৭ কোটি টাকা। মাদক কেনাবেচা করে অর্থ পাচারের দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে পঞ্চম। এশিয়ার দেশগুলো বিবেচনায় নিলে মাদকের মাধ্যমে টাকা পাচারের ঘটনায় বাংলাদেশ একেবারে শীর্ষে রয়েছে।

জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়নবিষয়ক সংস্থা আঙ্কটাড তাদের ওয়েবসাইটে অবৈধ অর্থপ্রবাহ সংক্রান্ত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করেছে। এতে বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৯টি দেশের মাদকসংশ্লিষ্ট অবৈধ অর্থপ্রবাহের অনুমানভিত্তিক হিসাব তুলে ধরেছে সংস্থাটি। অন্য দেশগুলো হলো- আফগানিস্তান,

কলম্বিয়া, ইকুয়েডর, মালদ্বীপ, মেক্সিকো, মিয়ানমার, নেপাল ও পেরু।

তখন ভারত সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে ফেনসিডিল ঢুকত। এক সময় ফেনসিডিলের জায়গা দখল করে হেরোইন। এখন দেশে ইয়াবার ব্যাপক বিস্তার ঘটেছে। সাম্প্রতিক সময়ে ইয়াবার চেয়ে ভয়ঙ্কর মাদক আইস দেশে ঢুকছে।

তালিকায় এশিয়ার যে পাঁচটি দেশের নাম রয়েছে, এর মধ্যে শীর্ষে থাকা বাংলাদেশের পরেই আছে মালদ্বীপ ও নেপাল। চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে রয়েছে আফগানিস্তান ও মিয়ানমার। মূলত ২০১৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে মাদকের মাধ্যমে অবৈধ অর্থপ্রবাহের এই চিত্র প্রথমবারের মতো তুলে ধরেছে আঙ্কটাড।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সূত্র বলছে, দেশের ভেতর দিয়ে যত মাদক চোরাচালান হয়, এর সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ উদ্ধার হয়। অর্থাৎ দেশে আসা ৮০ শতাংশ মাদক উদ্ধার করা সম্ভব হয় না। ফলে যত মাদক উদ্ধার হয়, তার বাজারমূল্যকে পাঁচ গুণ বাড়িয়ে অনুমিত হিসাব করে ইউএনওডিসি। তাদের কাছ থেকে তথ্য নিয়েই মাদকসংশ্লিষ্ট অর্থ পাচারের অনুমানভিত্তিক হিসাবটি করেছে আঙ্কটাড।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তথ্যই বলছে, সাম্প্রতিক সময়ে দেশে মাদকের বিস্তার বেড়েছে। গত বছর দেশে চার কোটি ৫৮ লাখ ৬৮ হাজার ৫৬৯টি ইয়াবা বড়ি উদ্ধার হয়েছে। ইয়াবার মূল উপাদান ম্যাথঅ্যাম্ফিটামিন বা আইস উদ্ধার হয়েছে ১১৩ কেজি ৩৩১ গ্রাম। আর হেরোইন উদ্ধার হয়েছে ৩৩৮ কেজি। এর আগের বছর (২০২১) ইয়াবা উদ্ধার হয়েছে পাঁচ কোটি ৩০ লাখ ৭৩ হাজার ৬৬৫টি, আইস উদ্ধার হয়েছে ৩৬ কেজি ৭৯৪ গ্রাম এবং হেরোইন উদ্ধার হয়েছে ৪৪১ কেজি।

আঙ্কটাডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইয়াবা, হেরোইনসহ বিভিন্ন ধরনের মাদক বাংলাদেশে ঢুকছে। আর মাদক কেনার অর্থ বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়ে যাচ্ছে। এশিয়ার যে পাঁচটি দেশের মাদকসংশ্লিষ্ট অবৈধ অর্থপ্রবাহের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে, এর মধ্যে বাংলাদেশ, মালদ্বীপ ও নেপাল থেকে অর্থ পাচার বেশি হয়। অন্যদিকে বিভিন্ন দেশে মাদক বিক্রি করে বিপুল পরিমাণ অর্থ আয় করছেন আফগানিস্তান ও মিয়ানমারের মাদক ব্যবসায়ীরা।

আবেদনকারী আইনজীবী সুবীর নন্দী দাস জানান, আজ বুধবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদারের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে রিট আবেদনটির ওপর শুনানি হতে পারে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে