সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

উপাচার্যের আশ্বাসে ফিরে গেলেন আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা

৭ দিনের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে কর্মবিরতির হুঁশিয়ারি
যাযাদি ডেস্ক
  ১৪ জুন ২০২৩, ০০:০০

৫০ হাজার টাকা ভাতা বাড়ানোসহ তিন দফা দাবিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) পোস্ট গ্র্যাজুয়েট প্রশিক্ষণার্থী (প্রাইভেট) পাঁচ শতাধিক চিকিৎসক অবশেষে উপাচার্যের আশ্বাসে আন্দোলন প্রত্যাহার করেছেন। বিএসএমএমইউ উপাচার্য ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ তাদের দাবি নিয়ে আগামী ৭ দিনের মধ্যে সরকারের সঙ্গে আলোচনার আশ্বাস দিলে চিকিৎসকরা ফিরে যান। তবে এই সময়ের মধ্যে দাবি পূরণ করা না হলে তারা কর্মবিরতিতে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন।

জানা যায়,

\হমঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত চিকিৎসকরা তিন দফা দাবিতে বিভিন্ন সেস্নাগান দিতে দিতে উপাচার্য কার্যালয় অবরুদ্ধ করেন। এ সময় ভিসি ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ কার্যালয়ে অবস্থান করছিলেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিপন্থি কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। তারা জানান, যেসব চিকিৎসকরা ভিসির কার্যালয়ের সামনে আন্দোলন করছে, তারা সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে চায়। এর প্রতিবাদেই আমাদের অবস্থান।

অন্যদিকে ভিসিপন্থিদের আন্দোলন প্রসঙ্গে নন-রেসিডেন্ট চিকিৎসক ডা. তানভীর বলেন, 'আমাদের আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতেই তারা এসেছে। তাদের কোনো নির্দিষ্ট দাবি-দাওয়া নেই, তারপরও কেন আমাদের আন্দোলনের সময়েই তাদেরকে এখানে আসতে হবে? তারা এখানে কার ইশারায় এসেছে? কে তাদেরকে পাঠিয়েছে? এগুলো আমরা বুঝি।'

তিনি বলেন, 'আমরা সাধারণ চিকিৎসক, আমরা কোনো দলের রাজনৈতিক কর্মী নই। আমরা কোনো রাজনৈতিক আন্দোলনে আসিনি, এসেছি আমাদের পেটের দায়ে। তাহলে কেন আমাদের আন্দোলনে আরেকটি পক্ষকে পাঠানো হয়েছে? তারা চায় আমাদের আন্দোলনকে প্রভাবিত করতে। আমরা আমাদের দাবিতে অনড়। আমরা লিখিত প্রজ্ঞাপন ছাড়া বিএসএমএমইউ ছাড়ব না।'

এর আগে বেলা ১১টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সি বস্নকের সামনে জড়ো হতে থাকেন চিকিৎসকরা। এরপর সাড়ে ১১টার দিকে বিএসএমএমইউ উপাচার্যের কার্যালয় ভবনের নিচে বিক্ষোভ শুরু করেন তারা। এ সময় চিকিৎসকরা ৫০ হাজার টাকা ভাতা দাবিসহ তিন দফা দাবিতে বিভিন্ন সেস্নাগান দিতে থাকেন। তারা বলেন, বর্তমান বাজার মূল্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মাসিক ভাতা বৃদ্ধি করতে হবে।

একপর্যায়ে তারা অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদকে নিজ কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করেন। এ সময় উপাচার্যের পক্ষ থেকে চিকিৎসকদের শান্ত করার চেষ্টা করা হলে সরাসরি তারা উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলতে চান। তাদের দাবি আদায় না হলে অবস্থানের ঘোষণা দেন। একপর্যায়ে পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তায় নিয়োজিত আনসার সদস্যদের সঙ্গে আন্দোলনরত চিকিৎসকদের হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে।

পরে বিএসএমএমইউ'র উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ছাত্রছাত্রীদের ভাতা বৃদ্ধির দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ৭ দিনের মধ্যে সরকারের সঙ্গে আলোচনা করার আশ্বাস দেন। আশ্বাসের পর আন্দোলনকারীরা ভিসি কার্যালয়ে বৈঠকে বসেন।

বৈঠকে আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধিরা উপাচার্যকে বলেন, রমজান মাসে আমাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আপনি বলেছিলেন ১৫ দিনের মধ্যে দাবি পূরণ করা হবে। আমরা আপনার প্রতি সম্মান রেখে কাজে ফিরে গিয়েছি। আমরা কিন্তু এখন বিক্ষোভ করছি, চিকিৎসা বন্ধ করে আন্দোলন করছি না। আমরা ক্লাসে, রোগীর পাশে থাকতে চাই। আর্থিক অনটনের কারণে যে মানসিক পরিস্থিতি, তা নিয়ে রোগীর পাশে থাকা যায় না। আমাদের ধৈর্য ধরতে বলেছিলেন, আমরা ধরেছি এতদিন।

আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে উপাচার্য বলেন, 'নন-রেসিডেন্ট এবং রেসিডেন্টদের ভাতা দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। তার প্রতি তোমাদের কৃতজ্ঞ থাকা উচিত। আমার এখানে যারাই পড়তে আসছে, তাদের চাকরি দেওয়া হয়েছে। আমি টাকা কালকে পেলে কালকেই দিয়ে দেবো। ৩৬ কোটি টাকা লাগে নন-রেসিডেন্টদের ভাতা দিতে। আমি তো পাইনি টাকা। আমি মন্ত্রী কিংবা সচিবের কাছে যাবো তোমাদের দাবি নিয়ে।'

উপাচার্য আরও বলেন, 'আমি তো টাকা দেই না, তাহলে আমাকে অবরুদ্ধ কেন। আমি তোমাদের দুইজনকে নিয়ে মন্ত্রীর কিংবা সচিবের কাছে যাবো আশ্বাস দিচ্ছি। তোমরা লেখাপড়ায় ফিরে যাও।'

বৈঠকের পর আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে দাবি আদায় না হলে তারা কর্মবিরতিতে যাবেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে