সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
মিরপুর টেস্ট

আফগানদের বিপক্ষে প্রতিশোধের মিশনে মাঠে নামছে বাংলাদেশ

ক্রীড়া প্রতিবেদক
  ১৪ জুন ২০২৩, ০০:০০
মঙ্গলবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ-আফগানিস্তান টেস্টপূর্ব অনুশীলনে ব্যস্ত টাইগাররা -ফোকাস বাংলা

আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলা প্রথম টেস্টটি বাংলাদেশের জন্য মোটেই সুখকর ছিল না। সবশেষ ২০১৯ সালে ঘরের মাঠ চট্টগ্রামে আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট খেলেছিল বাংলাদেশ। এরপর প্রায় ৪ বছর পেরিয়ে গেলেও আফগানদের সঙ্গে এ ফরম্যাটে আর মুখোমুখি হয়নি টাইগাররা। অবশেষে আবারও দলটির বিপক্ষে টেস্ট খেলতে নামছে লাল-সবুজের জার্সিধারীরা। আজ বুধবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে শুরু হবে বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের মধ্যকার একমাত্র টেস্ট ম্যাচ। হোম অব ক্রিকেটে ম্যাচটি শুরু হবে সকাল ১০টায়।

আফগানদের বিপক্ষে জয় নিয়ে কতটা আত্মবিশ্বাসী? সংবাদ সম্মেলনে এমন প্রশ্ন শুনেই বাংলাদেশ কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে শুধু একটা শব্দই খরচ করলেন, 'ইয়েস'। হাথুরুসিংহের এক শব্দের উত্তরেই স্পষ্ট আফগান বধে বাংলাদেশ কতটা আত্মবিশ্বাসী।

এই আত্মবিশ্বাসের বড় কারণ বর্তমান পেস অ?্যাটাক। যেখানে তাসকিন, ইবাদত, শরিফুল, খালেদের সঙ্গে রয়েছেন মুশফিক হাসানের মতো প্রতিশ্রম্নতিশীল বোলার। আর স্পিনে ঝান্ডা উড়াচ্ছেন মিরাজ ও তাইজুলের মতো অভিজ্ঞ বোলার। দুয়ে মিলিয়ে আফগানিস্তানের বিপক্ষে নিজেদের বোলিং নিয়ে বেশ আত্মবিশ্বাসী কোচ ও অধিনায়ক।

আঙুলের চোটে মিরপুর টেস্ট থেকে ছিটকে গেছেন বাংলাদেশ দলের নিয়মিত অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। এতে টাইগারদের নেতৃত্ব ভার উঠেছে লিটন দাসের কাঁধে। নতুন নেতৃত্বে কেমন খেলবে বাংলাদেশ

এমন প্রশ্নের জবাবে টাইগার কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে বলেন, 'সে (লিটন) যা করার তাই করবে। ব্যাটিংয়ের ব্যাপার আলাদা। যখন তুমি ব্যাটার, তখন তুমি সেরা ব্যাটার। আর অধিনায়ক হলো বাকি ১০ ক্রিকেটারের নেতা।'

কিন্তু আফগানিস্তান দলের 'অচেনা চরিত্র'গুলো এখন বাংলাদেশের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। অচেনা ক্রিকেটারে বিধ্বস্ত হওয়ার নজিরও বিশ্ব ক্রিকেটে কম নয়। প্রযুক্তির উৎকর্ষতার এই যুগে কেউ অচেনা থাকে না, কিন্তু অভিষেকের অপেক্ষার থাকা কিংবা কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ না খেললে সে ক্রিকেটার সম্পর্কে জানার সীমাবদ্ধতা থাকে অনেক। এছাড়া আফগানিস্তানের ঘরোয়া ক্রিকেট খুব একটা সমৃদ্ধ নয়।

বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্টের জন্য ১৫ সদস্যের দলে অভিষেকের অপেক্ষায় আছেন ৫ জন! নেই রশিদ খানদের মতো চেনামুখরা। ব্যাটসম্যান সাইয়েদ বাহির শাহ মাহবুব, অলরাউন্ডার করিম জানাত, পেসার নিজাত মাসুদ, মোহাম্মদ ইবরাহীম ও স্পিনার ইজহারুল হক নাভিদ আছেন অভিষেকের অপেক্ষায়। তার মধ্যে বাহির শাহের প্রথম শ্রেণির পারফরম্যান্স সাড়া জাগানিয়া, আছে ট্রিপল সেঞ্চুরিও (৩০৩*)। ৩৩ ম্যাচ খেলে সেঞ্চুরি করেছেন ৯টি আর হার হাফ সেঞ্চুরি ১১টি।

অচেনা আফগানদের নিয়ে প্রশ্নে হাথুরুসিংহে জানিয়েছেন বাংলাদেশের ফোকাস বেশি নিজেদের দিকে, 'অনেক ক্রিকেটার (আফগানিস্তানের) সম্পর্কে আমরা খুব বেশি একটা জানি না। যাইহোক আমরা প্রতিপক্ষ দলের শক্তি-সীমাবদ্ধতার দিকে নজর রাখছি। কিন্তু আমরা তাদের ২৫ শতাংশ ফোকাস করবো। আর বাকি ৭৫ শতাংশ আমরা নিজেরা কি করবো সেটাতে ফোকাস রাখবো। আপনি যেভাবে বলছেন, তাদের সম্পর্কে আমরা জানি না তাই সেটা আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবো না।'

অন্যদিকে বাংলাদেশের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে আফগানিস্তানের দলপতি রশিদ খানকে। তার পরিবর্তে দায়িত্ব পেয়েছেন দলটির টপ অর্ডার ব্যাটার হাশমতউলস্নাহ শহীদি।

আসন্ন টেস্টের বেশ আগেভাগেই স্কোয়াড ঘোষণা করে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। যেখানে টাইগার শিবিরে প্রথমবারের মতো ডাক পেয়েছেন তরুণ ব্যাটার শাহাদাত হোসেন দিপু এবং উঠতি পেসার মুশফিক হাসান। আর বাংলাদেশের মাটিতে পা রাখার একদিন আগে টেস্ট স্কোয়াড ঘোষণা করেছে সফরকারী দল। গত শনিবার ঢাকায় আসেন শাহিদি-রহমতরা।

টেস্ট স্ট্যাটাস অর্জনের পর দ্বিতীয়বারের মতো বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলবে আফগানিস্তান। যেখানে প্রথম দেখাটা ভুলে যেতে চাইবে টাইগার বাহিনী। ২০১৯ সালে চট্টগ্রাম টেস্টে ২২৪ রানের ব্যবধানে হেরে যায় স্বাগতিকরা। সেবার বল হাতে দুই ইনিংস মিলিয়ে একাই ১১ উইকেট নিয়েছিলেন রশিদ খান। অবশ্য ইনজুরির কারণে মিরপুর টেস্ট মিস করবেন তিনি।

রশিদের অনুপস্থিতি নিয়ে আফগান অধিনায়ক শহীদি বলেন, 'একটু চ্যালেঞ্জিং তো হবেই। সবাই জানে সে (রশিদ খান) আমাদের অন্যতম প্রধান বোলার। টেস্টে অতীতে সে অনেক ভালো করেছে। তবে আমাদের অন্য বোলার আছে, অন্য অপশন আছে। তারাও ভালো খেলবে ইনশাআলস্নাহ।'

এদিকে আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের অতীত রেকর্ড নিয়ে চিন্তার কোনো কারণ নেই জানিয়ে লিটন দাস বলেন, 'ওই জিনিসটা অতীত হয়ে গেছে অনেক আগেই। আর আমি অতীত নিয়ে এত চিন্তিত না। এসব নিয়ে খুব একটা ভাবিও না। যেহেতু নতুন খেলা, নতুন চ্যালেঞ্জ-এটা নিয়েই এখন আমাদের প্রস্তুত।'

বাংলাদেশ স্কোয়াড : লিটন দাস (অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, নাজমুল হোসেন শান্ত, শাহাদাত হোসেন দিপু, মাহমুদুল হাসান জয়, মুশফিকুর রহিম, জাকির হাসান, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, মুশফিক হাসান, শরিফুল ইসলাম, তাসকিন আহমেদ, এবাদত হোসেন, খালেদ আহমেদ।

আফগানিস্তান স্কোয়াড : হাশমতউলস্নাহ শহীদি (অধিনায়ক), রহমত শাহ, আফসার জাজাই, ইকরাম আলী খিল, ইব্রাহিম জাদরান, আব্দুল মালিক, বাহির শাহ, নাসির জামাল, করিম জানাত, জহির খান, ইজারুলস্না হক নাভিদ, হামজা হোতাক, ইব্রাহিম আব্দুল রাহিমজাই, ইয়ামিন আহমদজাই, নিজাত মাসুদ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে