সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১
রাজধানীতে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা

বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সরকার হটানোর শপথ

সরকারের বিদায়ই একমাত্র লক্ষ্য :ডক্টর মঈন খান
যাযাদি রিপোর্ট
  ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০
বিএনপির ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শুক্রবার রাজধানীর নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে বর্ণাঢ্যর্ যালি বের করা হয়। ছবিটি আরামবাগ এলাকা থেকে তোলা -যাযাদি

রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দলের ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করেছে বিএনপি। দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি রাজধানীতে বর্ণাঢ্যর্ যালি বের করেছে দলটির নেতাকর্মীরা। এদিনে রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমে সরকার হটিয়ে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার শপথ নিয়েছে তারা।র্ যালি থেকে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ডক্টর আবদুল মঈন খান বলেছেন, 'বিএনপির একমাত্র লক্ষ্য এক দফা আন্দোলন। এর মাধ্যমে ফ্যাসিবাদী স্বৈরাচারী সরকারকে বিদায় দিতে হবে।'

শুক্রবার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীতে আয়োজিত বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার আগে তিনি একথা বলেন। ট্রাকের ওপর সংক্ষিপ্ত সমাবেশে নেতারা বক্তব্য রাখার পর বিকাল ৪টায়র্ যালি শুরু হয়। নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে এইর্ যালি শুরু হয়ে ফকিরাপুল মোড়, নটর ডেম কলেজ সড়ক, মতিঝিলের শাপলা চত্বর, ইত্তেফাক মোড়, হাটখোলা হয়ে রাজধানীর সুপার মার্কেটের কাছে শেষ হয়। বড় আকৃতির জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকার পাশাপাশি রঙ-বেরঙের ব্যানার- ফেস্টুন, জিয়াউর রহমান-খালেদা জিয়া-তারেক রহমানের প্রতিকৃতিসহ নানা বাদ্যযন্ত্র নিয়ে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী এইর্ যালিতে অংশ নেন। মহানগর বিএনপি, মুক্তিযোদ্ধা দল, যুব দল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দল, কৃষক দল, মৎস্যজীবী দল, তাঁতী দল, ছাত্র দল, কৃষক দল, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন, ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন, এগ্রিকালচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশন, জাসাস, ছাত্র দল, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে নাইটেঙ্গল রেস্তোরাঁ থেকে ফকিরাপুল মোড় পর্যন্ত গোটা সড়ক মিছিলে মিছিলে জনসমুদ্রে পরিণত হয়।র্ যালিতে জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বড় বড় প্রতিকৃতি হাতে 'শুভ শুভ শুভদিন, বিএনপির জন্মদিন', 'স্বাধীনতার ঘোষক জিয়া, লও লও লও সালাম', 'এক জিয়া লোকান্তরে, লক্ষ জিয়া ঘরে ঘরে', 'মুক্তি মুক্তি মুক্তি চাই, দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই', 'তারেক রহমানের বার্তা, ফয়সালা হবে রাজপথে' ইত্যাদি স্স্নোগান দেয় কর্মী-সমর্থকরা উৎসবমুখর করে তোলে।র্ যালি শুরুর আগে কাকরাইলের নাইটেঙ্গল রেস্তোরাঁ মোড় থেকে শুরু করে নয়া পল্টনের দীর্ঘ সড়কে নেতাকর্মীদের তিল পরিমাণ ঠাই ছিল না। এই বর্ণাঢ্যর্ যালিতে ঘোড়ার গাড়িও ছিল। এদিকের্ যালি উপলক্ষে নয়া পল্টন থেকে হাটখোলা পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন করা হয়।র্ যালি উপলক্ষে কাকরাইল, মতিঝিল, কমলাপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়।

র্

যালির শুরুতে নেতাকর্মীদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অভিনন্দন জানিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেন, 'আমরা এইর্ যালির অনুষ্ঠান করলেও আমাদের মূল লক্ষ্য একদফা আন্দোলন। একদফা আন্দোলনের মাধ্যমে আজকে বাংলাদেশে যে ফ্যাসিবাদী স্বৈরাচারী সরকার এ দেশের ১৮ কোটি মানুষের ওপর চেপে বসেছে তাকে বিদায় দিতে হবে। সেটাই আমাদের এক দফা আন্দোলন।'

তিনি আরও বলেন, 'রাজপথে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে অগণতান্ত্রিক সরকারকে বিদায় দিয়ে এদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনব ইনাশালস্নাহ। এটাই আজকে দলের ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আমাদের শপথ।'

স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, 'বাকশালীরা এদেশের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছিল। জিয়াউর রহমান এই দল (বিএনপি) সৃষ্টি করেছিল গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেয়ার জন্য, বহু দলীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেয়ার জন্য, ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেয়ার জন্য, আইনের শাসন ফিরিয়ে দেয়ার জন্য, গণমাধ্যমে স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেয়ার জন্য, বাক স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেয়ার জন্য। এই দল সৃষ্টি হয়েছে গণতন্ত্রের জন্য।'

স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, 'আজকে সাধারণ মানুষের জীবন যাত্রা দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। এই সরকারের দল আছে বাংলাদেশের কোটিপতিরা। আমরা এই সরকারের পরিবর্তন চাই। আমরা এদেশে কৃষক, শ্রমিক, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, সাধারণ মানুষ, বেকার যুবক তাদের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই। আর সেজন্য একদফা দাবি আদায় করতে হবে। এর কোনো বিকল্প নাই।'

মহানগর বিএনপি উত্তরের আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে ও উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হকের সঞ্চালনায় সংক্ষিপ্ত সমাবেশে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উলস্নাহ আমান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, যুব দলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান, কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিন, ছাত্র দলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল বক্তব্য রাখেন।

প্রতিষ্ঠাতার কবরে শ্রদ্ধা : এদিকে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী দিবসটি উপলক্ষে এদিন সকালে নয়া পল্টন ও গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এরপর সকাল সাড়ে ১০টায় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীর নেতৃত্বে দলের নেতাকর্মীরা শেরে বাংলা নগরে দলের প্রতিষ্ঠাতার কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন। তারা শহীদ নেতার আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করেন। এ সময়ে দলের ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী, শাহজাহান ওমর, আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উলস্নাহ আমান, আবদুস সালাম, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, হাবিবুর রহমান হাবিব, ফরহাদ হালিম ডোনার, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, কেন্দ্রীয় নেতা খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, শ্যামা ওবায়েদ, আবদুস সালাম আজাদ, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, কায়সার কামাল প্রমুখ নেতারা ছিলেন।

এ সময় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেন, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রশ্নে বিদেশিদের কাছে না হলেও দেশের ১৮ কোটি মানুষের কাছে সরকারকে মাথানত করতেই হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে