সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
রাজধানীতে ছুটির দিনেও যানজট ভোগান্তি

রাজধানীতে ছুটির দিনেও যানজট ভোগান্তি

যাযাদি ডেস্ক
  ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০

ছুটির দিনে শুক্রবার রাজধানীতে ছিল বড় দুই রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি। একদিকে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব স্মরণে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের উদ্যোগে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। অন্যদিকে, বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীতে আলোচনা সভা, বর্ণাঢ্যর্ যালিসহ বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করে দলটি।

এসব কর্মসূচি ঘিরে ভিআইপি গমনাগমন, রাজধানী ও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অনেক নেতাকর্মী এসেছে। ফলে ছুটির দিন হলেও এসব কর্মসূচির জন্য রাজধানীর কিছু রাস্তা বন্ধ রাখা হয়। এতে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হয় আশপাশের সড়কে। যানজটসহ ভোগান্তিতে পড়ে নগরবাসী।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগের সমাবেশ শুরু হয় বিকাল ৩টায়। প্রধান অতিথি হিসেবে সমাবেশে অংশ নন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৩টা ৪০ মিনিটে সমাবেশের মঞ্চে আসেন তিনি। এ ছাড়া একইদিনে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করেছে দলটি। বিকাল ৩টায় বিএনপির উদ্যোগে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে বর্ণাঢ্যর্ যালি বের হয়।র্ যালিটি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে ফকিরাপুল মোড়, নটর ডেম কলেজ, শাপলা চত্বর, ইত্তেফাক মোড় হয়ে রাজধানী মার্কেটে গিয়ে শেষ হয়। ফলে র?্যালিটি এসব সড়ক অতিক্রম করায় সেসব এলাকায় তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। অন্যদিকে মৎস্য ভবন থেকে শাহবাগমুখী রাস্তায় গাড়ি চলাচল ছিল বন্ধ। এই রাস্তায় কোনো গাড়িই প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। এদিক থেকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হেঁটে মিছিল নিয়ে শাহবাগের রাস্তায় ও সমাবেশস্থলে প্রবেশ করতে দেখা গেছে।

ছাত্রলীগের সমাবেশের দিন শুক্রবার সকাল ১০টার পর থেকে কাঁটাবন ক্রসিং, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল ক্রসিং, কাকরাইল মসজিদ ক্রসিং, কাকরাইল চার্চ ক্রসিং, ইউবিএল ক্রসিং, হাইকোর্ট ক্রসিং, দোয়েল চত্বর ক্রসিং, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টার, জগন্নাথ হল ক্রসিং, ভাস্কর্য ক্রসিং উপাচার্য ভবন ক্রসিং- এই ১১টি পয়েন্ট বন্ধ রাখে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ। এ কারণে আশপাশের বিকল্প রাস্তায় তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়।

বিকাল ৩টার পর রাজধানীর কয়েকটি সড়ক সরেজমিনে তীব্র যানজট দেখা গেছে। বিশেষ করে ধানমন্ডি ৩২ হয়ে কলাবাগান, নিউমার্কেট, আজিমপুর পর্যন্ত পুরো রাস্তায় হাজার হাজার গাড়ি যানজটে আটকে থাকতে দেখা গেছে। দীর্ঘক্ষণ গাড়ি বন্ধ রেখে চালকদের অলস সময় পার করতে দেখা গেছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েন ওই এলাকার সড়ক দিয়ে চলাফেরা করা যাত্রীরা। অনেককে পরিবহণ থেকে নেমে হেঁটে গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে। এতে আবার প্রচন্ড ভিড় ঠেলে রাস্তায় হাঁটতে হয়েছে তাদের। অনেককে গাড়ি না পেয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। অনেকেই বিরক্তি প্রকাশ করেন। এছাড়া ফার্মগেট, মগবাজার, পল্টন, প্রেসক্লাব রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে যানজট সৃষ্টি হয়।

চন্দ্রা থেকে ছেড়ে আসা নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড অভিমুখী ঠিকানা পরিবহণের একটি বাসের সহকারী মফিজ উদ্দিন বলেন, আসাদগেট পর্যন্ত তেমন জ্যাম পাইনি। ধানমন্ডি ৩২-এ ঢুকেই জ্যাম ঠেলে সায়েন্সল্যাবে আসতে হয়েছে। শুক্রবার ৫ মিনিটে এই জায়গা পার হওয়ার কথা। অথচ ৪০ মিনিট পার হলেও গাড়ি নড়েনি।

আজিমপুর অভিমুখী এক যাত্রী বলেন, ঢাকায় রাজনৈতিক সমাবেশ মানে সাধারণ মানুষের যত ভোগান্তি। ছুটির দিন হলেও আমাদের লাভ কী? আমাদের তো অন্য দিনের মতো জ্যাম ঠেলেই বাসায় যেতে হয়েছে।

রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের সদস্য রফিক বলেন, রেগুলার তেমন কোনো গাড়ি নেই বললেই চলে। যা আছে সব প্রোগ্রামের গাড়ি। এ জন্য গাড়ির সংকট রয়েছে।

রমনা ট্রাফিক বিভাগের উপ-কমিশনার মো. জয়নুল আবেদীন বলেন, ছুটির দিন হিসেবে সড়কে তেমন যানজট নেই। তবে সমাবেশকে কেন্দ্র করে কোথাও কোথাও যানজট সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে নিউ মার্কেটের দিকে যানজট ছিল। এছাড়া বিএনপির র?্যালির জন্য পল্টনে কিছু পয়েন্টে যানজট সৃষ্টি হয়। তাছাড়া অন্য সড়কগুলোয় যান চলাচল স্বাভাবিক ছিল।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে