সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

২৮ অক্টোবর রাজনৈতিক কর্মসূচি প্রত্যাহার চায় বৌদ্ধ সম্প্রদায়

যাযাদি রিপোর্ট
  ২৪ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০

বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব শুভ প্রবারণা পূর্ণিমার দিন ২৮ অক্টোবর সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচি প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ সম্মিলিত বৌদ্ধ সমাজ।

সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটি এ অনুরোধ জানায়।

জানা গেছে, আগামী ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশ করবে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। পাশাপাশি দিনটি ঘিরে নানা রাজনৈতিক কর্মসূচিও রয়েছে তাদের। অন্যদিকে, ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগও ওই দিন রাজপথে থাকার ঘোষণা দিয়েছে। এ নিয়ে জনমনে ভীতিকর পরিস্থিতি ও সংঘাতের আশঙ্কা করছে নানা মহল। এমন পরিস্থিতিতে বৌদ্ধ জনগোষ্ঠী তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে পালন করতে রাজনৈতিক কর্মসূচি প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়েছে।

প্রবারণা পূর্ণিমার শুভেচ্ছা জানিয়ে লিখিত বক্তব্যে বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘের যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সুমন কান্তি বড়ুয়া বলেন, 'আগামী ২৮ অক্টোবর বিশ্ব বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের উদ্যোগে যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদায় ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক আনুষ্ঠানিকতায় শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা উদযাপিত হবে। বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের জন্য এটি দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব। বাংলাদেশের বৌদ্ধ সম্প্রদায় প্রতি বছরের মতো হৃদয়ের গভীর শ্রদ্ধা ও ধর্মীয় আচার এবং সামাজিক-সাংস্কৃতিক আনুষ্ঠানিকতায় এই দিনটি উদযাপনের জন্য বিগত এক বছর ধরে অপেক্ষা করে আসছে।'

তিনি বলেন, 'বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের এই তিথি বা উৎসব পূর্ণিমাকে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠিত হয় বিধায় এক বছর পূর্বেই এই ধর্মীয় অনুষ্ঠানের দিন-তারিখ নির্দিষ্ট হয় এবং সব সরকারি-বেসরকারি পঞ্জিকায় এটি অন্তর্ভুক্ত থাকে। তাই আমাদের প্রত্যাশা ছিল অবশ্যই দূরদর্শী চিন্তাসম্পন্ন এ দেশের রাজনৈতিক নেতারা যে কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচির ক্ষেত্রে সাম্প্রদায়িক

সম্প্রীতির কথা বিবেচনা করে আসন্ন পূর্ণিমা তিথিকে রাজনৈতিক কর্মসূচি মুক্ত রাখবেন। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় যে, দেশের কিছু রাজনৈতিক দল হয়তো অনিচ্ছাকৃত ও অসাবধানবশত ওই দিন কর্মসূচি দিয়েছে, ইতোমধ্যে এই কর্মসূচি নিয়ে চলছে নানামাত্রিক প্রচারণা। ফলে সাধারণ বৌদ্ধ জনগোষ্ঠীর মনে তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণের ক্ষেত্রে ভীতির সঞ্চার হয়েছে, তারা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। যে কারণে এই পবিত্র পূর্ণিমা দিবসে ধর্মপ্রাণ বৌদ্ধ জনগোষ্ঠী নির্বিঘ্নে যাতায়াতের ক্ষেত্রে শঙ্কিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থায় আমরা দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর আন্তরিক শুভ দৃষ্টি কামনা করছি।'

বক্তারা বলেন, 'আমাদের প্রত্যাশা, আগামী শনিবার (২৮ অক্টোবর) দেশের বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ধর্মীয় তিথির গুরুত্বের কথা বিবেচনা করে এবং বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক মূল্যবোধের চেতনাকে উজ্জীবিত রাখার প্রত্যয়ে বাংলাদেশের সম্মিলিত বৌদ্ধ সমাজের এই আবেদন গভীর আন্তরিকতার সঙ্গে গ্রহণ করবেন। কারণ তারা আশঙ্কা করছেন যে, ধর্মীয় অনুষ্ঠানের দিনে পাল্টাপাল্টি রাজনৈতিক কর্মসূচি দেশে হিংসা-বিদেশ ও দ্বন্দ্ব সংঘাত করতে পারে। ফলে ধর্মীয় অনুষ্ঠানের দিনে প্রতিসংঘাত ঘটলে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের অসংখ্য নারী-পুরুষ ধর্ম পালনে বাধার সম্মুখীন হতে পারেন।'

সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সিনিয়র সহ-সভাপতি রঞ্জিত কুমার বড়ুয়া, সাবেক সভাপতি রাহুল কান্তি বড়ুয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে