শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

শায়েস্তাগঞ্জে সেচের অভাবে কৃষকের বোবা কান্না

শায়েস্তাগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি
  ২৩ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০
হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে সেচের অভাবে পড়ে থাকা ফসলি জমি -যাযাদি

শায়েস্তগঞ্জ উপজেলায় সেচের অভাবে ভেঙে যাচ্ছে কৃষকদের স্বপ্ন। আসছে আগামী মৌসুমে বোরো ধান কীভাবে বপন করবেন এ নিয়ে কৃষকরা হতাশাগ্রস্ত।

জানা যায়, উপজেলায় ২০ জন কৃষক পেয়েছেন বিএডিসি থেকে সরকারি সেচের অনুমোদন। কিন্তু এতে অনেকটাই বঞ্চিত হয়েছেন উপজেলার নূরপুর ইউনিয়নের সুরাবই গ্রামের কৃষকরা। নানা টালবাহানার কারণে নূরপুর ইউনিয়নের সুরাবই গ্রামের প্রকৃত কৃষকরা পাননি সেচের কোনোরকম সুবিধা। ঢাকা সিলেট মহাসড়কের পাশে সুতাং অঞ্চলে ২০০০-২৫০০ গজের ভেতরে ও নেই কোনো সেচ সুবিধা, ফলে ফসলি জমি তৈরি করতে হিমশিম খাচ্ছেন। কেউ কেউ বোরো মৌসুমের ধান ফলানো বাদ দেওয়ার চিন্তায় আছেন। ঢাকা সিলেট মহাসড়কের পাশে সুতাংয়ে নিজ উদ্যোগে সেচ বসিয়েছেন সুরাবই গ্রামের মীর রতন। তিনি গতবার ও এখানে কয়েকশ' একর জমিতে চুক্তিবদ্ধ হয়ে সেচ দিয়েছেন। রতন মিয়া জানান, গতবারও লোকসানে রাতদিন পরিশ্রম করে পানি দিয়ে সহযোগিতা করেন। এবারও শুরু করেছেন। কিন্তু জ্বালানি তেলের দাম বেশি থাকায় আর সময় বেশি লাগায় তিনি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এ বিষয়ে সুরাবই গ্রামের কৃষক ফরহাদ মিয়া জানান, 'কখন সেচ কমিটির সভা হয়, মিটিং হয় তা আমাদের জানানো হয় না, না হলে আমরা অবশ্যই সেচের সুবিধা নেওয়ার জন্য আবেদন জমা দিতাম।'

সুরাবই গ্রামের মীর শাহিন জানান, 'এমনিতেই বন্যশূকর আমাদের ধান খেয়ে ফেলে, এবার যে কীভাবে ধান বোপন করব তা জানি না। আমি সেচের সুবিধার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।' শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার সেচ কমিটির সূত্রে জানা যায়, প্রতি বছরই ইউএনওকে সেচ কমিটির সভাপতি এবং বিএডিসি একজন ইঞ্জিনিয়ারকে সদস্য সচিব করে সভা করা হয়। সভার মাধ্যমে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সেচ কমিটির স্বাক্ষর সংবলিত আবেদন জমা নেওয়া হয়। বিএডিসি তদন্ত করে কৃষকদের সেচের অনুমোদন দিয়ে থাকে। সুতাং অঞ্চলের কৃষকরা সেসব সুবিধা না পাওয়ায় অতিরিক্ত পানি কিনে জমিতে দেওয়া অনেক কৃষকের পক্ষেই সম্ভব হচ্ছে না, মরতে বসেছে তাদের নতুন ধান বোনার স্বপ্ন। এ বিষয়ে হবিগঞ্জ বিএডিসির কর্মকর্তা মো. নাইম জানান, কে কে সেচের অনুমোদন পেয়েছেন তিনি জানেন না, এটা শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের কাজ।

এ ব্যাপারে শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিনহাজুল ইসলাম জানান, '৮২০ গজ দূরত্ব এর বাইরে একটা সেচ বসানো হয়, কিন্তু সুতাং অঞ্চল কেন বাদ পড়ল এটা আমি দেখব, আর সুতাং অঞ্চলের কৃষকরা সেচ সুবিধা পাননি সেটা আমার জানা ছিল না। তবে এখনো যদি ওই অঞ্চলের কেউ সেচ সুবিধার জন্য আবেদন করেন আমি আরেকটি সভা করে সেচ সুবিধা দিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে