সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

কার্ড থাকলেও চাল পাচ্ছেন না কলাপাড়ার জেলেরা

কুয়াকাটা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
  ০৩ মে ২০২৩, ০০:০০

যুগ যুগ ধরে বংশ পরম্পরায় জেলে। মাছ শিকার ছাড়া যাদের বাঁচার কোনো উপায় নেই। সেই প্রকৃত জেলেরাই সরকারি তালিকায় নিবন্ধিত হতে পারেননি। নিবন্ধন না থাকায় কোনো খাদ্য সহায়তাও তারা পান না। এবং যারা কার্ড ভুক্ত জেলে আছেন তারাও পাচ্ছেন না চাল।

জীবনে কখনো মাছ শিকার করেননি কিংবা যাননি কখনো সমুদ্রপাড়ে। প্রধান পেশা ব্যবসা, বাণিজ্য বা কৃষি। কিন্তু তারা নিবন্ধিত জেলে। আছে জেলে কার্ড। কার্ডের কারণে প্রতি বছর জেলে হিসেবে পান খাদ্য সহায়তা। চাল বিতরণের দিন লাইনে দাঁড়িয়ে চাল নিয়ে যায় তারা। খাদ্য সহায়তার নাম তালিকায় সবার আগে থাকে তাদের নাম। এমনটাই অভিযোগ করেছেন পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ধুলাসর ইউনিয়নের অসহায় জেলেরা।

গত বুধবার উপজেলা প্রশাসন বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন ধুলাস্বার ইউনিয়নের চর গঙ্গামতী এলাকার ৮নং ওয়ার্ডের জেলেরা।

ভুক্তভোগী জেলেদের অভিযোগ, জেলেদের জন্য বরাদ্দ হওয়া ভিজিএফ কার্ডের চাল প্রকৃত নিবন্ধিত জেলেদের না দিয়ে, দেওয়া হচ্ছে মেম্বারের পছন্দমতো। এমনকি মৃত জেলেদের নামে আসা চালও ছাড়িয়ে নিচ্ছেন তিনি। জেলেরা এর প্রতিবাদ করলে দেওয়া হয় হুমকি এবং দেখানো হয় ভয়ভীতি।

চর গঙ্গামতী এলাকার ভুক্তভোগী জেলে অলি উদ্দীন বলেন, 'আমি জেলে কাজ করে ১০ লাখ টাকা ঋণী হয়েছি। আর সরকার আমাদের যে কার্ড দিয়েছে তা মেম্বার আটকে রেখেছে। চাইতে গেলে হুমকি দিচ্ছে। যেদিন চাল দিয়েছে সেদিন কার্ড থাকতেও মেম্বারের হাত-পা ধরেছি। তারপরও চাল পাইনি। আমাদের সঙ্গে জুলুম করছে মেম্বার।'

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মেম্বার সিদ্দিক বলেন, 'আমরা মোট নিবন্ধিত জেলেদের থেকে কিছু কম চাল পাওয়ায় সমন্বয় করে দিতে হয়। কিন্তু কার্ড আটকে রাখার কথা মিথ্যা। আমরা চাল দিয়ে সাথে সাথে জেলেদের কার্ড দিয়ে দিচ্ছি। আমি কোনো অনিয়ম করি না। আর কারও কাছ থেকে টাকা-পয়সা নেই না।'

ধুলাস্বার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাফেজ আব্দুর রহিম বলেন, 'আমার পরিষদের বেশিরভাগ মেম্বার পুরনো হওয়ায় তারা সিন্ডিকেট করে জেলেদের জাল আত্মসাৎ করছে। বারবার বলার পরও এগুলোর কোনো প্রতিকার করতে পারছি না। পরে আমি ইউএনওকে অবহিত করেছি। বিষয়টি নিয়ে আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।'

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, 'জেলেদের অভিযোগের ভিত্তিতে আমি কয়েকবার ওখানে গিয়ে তাদের সতর্ক করেছি। তবে ইউপি সদস্যরা চেয়ারম্যানের নাগালের বাইরে থাকায় এ সমস্যাটা তৈরি হচ্ছে। তারপরও আমি আবার অভিযান পরিচালনা করব। সত্যতা পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে