সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

চেয়ারম্যানের নির্দেশনায় অদম্য গতিতে এগিয়ে চলছে বিআরটিসির বরিশাল বাস ডিপো

যাযাদি ডেস্ক
  ১৭ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০
মো. তাজুল ইসলাম

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ করপোরেশন (বিআরটিসি) লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটির বর্তমান চৌকস চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত সচিব) মো. তাজুল ইসলাম। তিনি চেয়ারম্যান পদে যোগদানের পর থেকে শত প্রতিকূল পরিবেশ থাকা অবস্থায় নানাবিধ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে অক্লান্ত পরিশ্রম, সততা, সাহসী ভূমিকা ও আন্তরিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে মেধা খাটিয়ে জরাজীর্ণ ও অলাভজনক প্রতিষ্ঠানকে সার্বিকভাবে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিক করেন।

'আয় বৃদ্ধি, ব্যয় সংকোচন ও যাত্রী সেবার মান উন্নয়ন' স্স্নোগানকে সামনে রেখে ডিজিটাল বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশে পরিণত করার লক্ষ্যে অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে দিন-রাত নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন এক অদম্য শক্তিতে।

২০২১ সালের ৭ ফেব্রম্নয়ারি বিআরটিসির চেয়ারম্যান হিসেবে যোগদান করেন মো. তাজুল ইসলাম। তিনি বাংলাদেশ সরকারের অতিরিক্ত সচিব। এরপর নানাবিধ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে সততা, প্রজ্ঞা, মেধা, সময়োপযোগী ও সুদক্ষ দিকনির্দেশনা এবং সঠিক নেতৃত্বের মধ্য দিয়ে একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠানকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত করেছেন।

তারই ধারাবাহিকতায় ঘুরে দাঁড়িয়েছে বিআরটিসি বরিশাল বাস ডিপো। বিআরটিসি বরিশাল বাস ডিপোর ইউনিট প্রধান মো. জামশেদ আলী এ প্রতিবেদককে জানান, মো. তাজুল ইসলাম বিআরটিসিতে চেয়ারম্যান হিসেবে যোগদান করার পর দেখতে পান, বরিশাল বাস ডিপোর মূল ফটকে কোনো গেইট নেই। অত্র ডিপোর বেশ কয়েকটি বাস জরাজীর্ণ অবস্থায় রুটে চলাচল করছে। ডিপোর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বেশ কয়েক মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না। তারা বেতনের জন্য আন্দোলন করছেন। কিন্তু মো. তাজুল ইসলাম যোগদান করার পর থেকে বিআরটিসি বরিশাল বাস ডিপোতে প্রতি মাসের ১ তারিখে সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে (দৈনিক মজুরিভিত্তিকসহ) বেতন দেওয়া হয়। এছাড়াও যথাসময়ে বোনাস ও ভাতা প্রদান করা হয়। যা আগে সম্ভব ছিল না। বর্তমান চেয়ারম্যান যোগদান করার পরে 'আয় বৃদ্ধি, ব্যয় সংকোচন ও যাত্রী সেবার মান উন্নয়ন' স্স্নোগানকে সামনে রেখে বরিশাল বাস ডিপোর বর্তমান ও পূর্বের ইউনিট প্রধানগণ ডিপোর আয় বহুগুণ বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছেন। পূর্বের ৫ বছরের লাভ-ক্ষতি পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের লাভ ৭২ লাখ টাকা, ২০১৯-২০ অর্থবছরের লাভ ৩০ লাখ টাকা, ২০২০-২১ অর্থবছরের লাভ ১২ লাখ টাকা, ২০২১-২২ অর্থবছরের লাভ ১ কোটি ৩৩ লাখ টাকা, ২০২২-২৩ অর্থবছরে বিআরটিসি বরিশাল বাস ডিপোর লাভ দাঁড়িয়েছে ৪ কোটি ৬৬ লাখ টাকায়, যা বিগত ৫ বছরের তুলনায় বহুগুণ বৃদ্ধি পায়। বর্তমানে বিআরটিসি বরিশাল বাস ডিপোতে ১২৬ জন স্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ২৭ জন দৈনিক মজুরিভিত্তিক শ্রমিক-কর্মচারীসহ সর্বমোট ১৫৩ জন জনবল কর্মরত আছেন এবং ৪৭টি চলমান বাস, ৫টি দীর্ঘমেয়াদি ইজারায় প্রদানকৃত বাস, ১টি ভারী মেরামতাধীন বাসসহ মোট ৫৩টি বাস ও ৫টি প্রশিক্ষণ কার রয়েছে। এছাড়াও মো. তাজুল ইসলাম চেয়ারম্যান হিসেবে যোগদানের পর বিআরটিসি বরিশাল বাস ডিপোর পক্ষে অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হাতে নেন, যা ডিপোর ইউনিট প্রধান মো. জামশেদ আলীর নিরলস প্রচেষ্টায় বাস্তবায়ন হয়।

তন্মধ্যে উলেস্নখযোগ্য উন্নয়ন হচ্ছে, নতুন নতুন রুট চালুকরণ, ডিপোর মূল ফটক ডিজিটালাইজডকরণ, ডিপোর প্রশাসনিক ভবন সংস্কার ও দৃষ্টিনন্দনকরণ, ডিপোর অভ্যন্তরের পরিত্যক্ত জায়গায় বালু ভরাটের মাধ্যমে ব্যবহার উপযোগীকরণ, ড্রাইভিং প্রশিক্ষণের জন্য ড্রাইভিং ট্রাক নির্মাণ, আধুনিক প্রশিক্ষণ কক্ষ নির্মাণ, আধুনিক যাত্রী বিশ্রামাগার ও মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত টয়লেট স্থাপন, ডিপোর নিরাপত্তারক্ষীদের জন্য গার্ডরুম স্থাপন, নিরাপত্তার স্বার্থে ডিপোর বিভিন্ন পয়েন্টে সিসি ক্যামেরা স্থাপন, গাড়িতে ভিটিএস ডিভাইস, ক্যামেরা ও ফ্রি ওয়াইফাই সংযোগ স্থাপন, কর্মচারীদের মানসম্মত পোশাক (শীতকালীন এবং গ্রীষ্মকালীন) প্রদান করা, মূল ফটকসংলগ্ন কাউন্টার দৃষ্টিনন্দনকরণ, ডিপোর সীমানা প্রাচীর নির্মাণ, সংস্কার ও দৃষ্টিনন্দনকরণ ইত্যাদি। এছাড়াও বিআরটিসি বরিশাল বাস ডিপোতে ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ প্রদান করে প্রতি বছর শত শত দক্ষ চালক তৈরি হচ্ছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৪৪২ জন প্রশিক্ষণার্থীকে গাড়ি চালনায় প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। যার মাধ্যমে অদক্ষ জনবল দক্ষতা অর্জনসহ দেশে-বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

বিআরটিসির সেবা সহজীকরণ এবং বিভিন্ন উদ্ভাবনী উদ্যোগের মাধ্যমে বিআরটিসিকে অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হতে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত করে প্রশাসনের সক্ষমতার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সম্মানিত সিনিয়র সচিব কে.এম আলী আজম ২০২২ সালের ২৪ আগস্ট বিআরটিসির চেয়ারম্যান বরাবর একটি ডিও লেটার প্রদান করেন।

এছাড়া স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং ডিজিটালাইজড করার মাধ্যমে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করায় অহহঁধষ উবাবষড়ঢ়সবহঃ অমৎববসবহঃ (অচঅ) এ ২০২১-২০২২ অর্থবছরে সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগের সব সংস্থাসমূহের মধ্যে ৯৬ দশমিক ৮৪ নম্বর পেয়ে বিআরটিসি প্রথম স্থান অর্জন করে এবং শুদ্ধাচার পুরস্কার পান।

সব ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে বিআরটিসির চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলামের সাহসী ভূমিকা ও ইউনিট প্রধান মো. জামশেদ আলীর নিরলস প্রচেষ্টায় আজ ঘুরে দাঁড়িয়েছে বিআরটিসি বরিশাল বাস ডিপো।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে