সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

ভালো নেই হাওড় পাড়ের জেলেরা

হাওড়াঞ্চল প্রতিনিধি
  ৩০ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০

ভালো নেই হাওড় পাড়ের জেলেরা। ইজারাদার বা প্রভাবশালীদের অন্যায় অত্যাচারে অতিষ্ঠ তাদের পরিবার। ফলে ইতিমধ্যে অনেক জেলে পরিবার পেশা বদল করে অন্য পেশায় নিয়োজিত হয়েছে।

কিশোরগঞ্জ, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নেত্রকোনা ও সুনামগঞ্জ জেলার সংযোগস্থল বিস্তীর্ণ হাওড়াঞ্চলে প্রকৃতভাবেই অগণিত নদী, বিল-বাদাড়, হাওড়-বাঁওড়ে পরিপূর্ণ। এছাড়াও বর্ষায় সব মাঠ-ঘাট পথ পানিতে একাকার হয়ে পড়ে। আবার প্রকৃতিগত কারণে এই অঞ্চলের নদীর তীরবর্তী অথবা আশপাশে গড়ে উঠেছে অসংখ্যা জেলেপলস্নী। মাছ ধরেই চলে তাদের সংসার। কিন্তু ইতিমধ্যেই অনেক জেলে পরিবার নদী বা বর্ষার পানিতে মাছ ধরতে গিয়ে ইজারাদার বা প্রভাবশালীদের অত্যাচারের শিকার হচ্ছে।

সম্প্রতি কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম উপজেলায় জেলেরা মাছ ধরতে গিয়ে ইজারাদারের লাঠিয়াল বাহিনীর হাতে মারধরের শিকার হয়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উপজেলার জেলে সম্প্রদায়ের মধ্যে দেখা দিয়েছে চরম হতাশা আর ক্ষোভ।

প্রকৃত মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির ইজারা পাওয়ার বিধান থাকলেও অমৎস্যজীবীদের মৎস্যজীবী বানিয়ে ইজারাদাররা ইজারা নিয়ে যাচ্ছে জলমহল। ফলে ইজারাদার এবং প্রভাবশালীরা অমৎস্যজীবীদের সদস্য করে সমিতি রেজিস্ট্রেশন করে নিয়ে ইজারা পাচ্ছে। নদীগুলো ইজারা পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জেলেদের মাছ ধরতে না দিয়ে এবং বাঁশ কাটা দিয়ে নদীর নাব্যতা হ্রাস করা, পাটি বাঁধ ও বিভিন্ন ধরনের অবৈধ জালে মাছ ধরে সরকারি নিষেধ অমান্য করে কোটি কোটি টাকা লাভবান হচ্ছে। অন্যদিকে প্রকৃত জেলেরা হচ্ছে বঞ্চিত।

জেলেরা জানান, ইজারাদারদের ইচ্ছামাফিক রসিদ বিহীন নদীতে নির্ধারিত সীমানায় মাছ ধরতে হচ্ছে। ধরা মাছ আবার ইজারাদারদের তহবিলেই বিক্রি করতে হচ্ছে। মাছ ধরতে গেলেও কখনো কখনো ইজারাদারদের লাঠিয়াল বাহিনীর হাতে মারধরের শিকার হতে হচ্ছে। ফলে জেলেদের জীবন চরম বিপন্ন হয়ে পড়েছে। কিছু বললে জেলেদের নামে মামলা দেওয়াসহ নানা অত্যাচার করা হচ্ছে।

সাপান্ত গ্রামের অজিত দাস নামের এক জেলে জানান, বর্ষার পানিতে গ্রামের কাছাকাছি মাছ ধরে বিক্রি করতে গেলে ১০-১২ জনের একটি দল আমাদের মারধর করে নৌকাসহ মাছ কেড়ে নেয়। এমনকি আমাদের মারধরও করা হয়। এই ঘটনায় জেলেদের পক্ষ থেকে অষ্টগ্রাম থানায় ১৫ জনের নাম উলেস্নখ করে একটি মামলাও হয়েছে।

এই মামলার বাদী সোনাত্তন দাস জানান, ঘটনার পর থেকেই জেলেরা আতঙ্ক ও উৎকণ্ঠায় দিন পার করছে। এইভাবে যদি জেলেদের উপরে প্রতিনিয়ত হামলা-মারধর চলতে থাকে তাহলে হাওড়ে এক সময় প্রকৃত জেলে পাওয়া মুশকিল হয়ে পড়বে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে