সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

মধ্যনগরে লক্ষাধিক লোকের চিকিৎসায় ভরসা ফার্মেসি

ধর্মপাশা ও মধ্যনগর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি
  ৩০ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০

'আমরা অসুস্থ হলে কোনো এমবিবিএস ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা নিতে পারি না। স্বাধীনতা সংগ্রামের পর থেকে এখন পর্যন্ত আমাদের এখানে সরকারি এমবিবিএস ডাক্তার না আসার কারণে বিনা চিকিৎসায় অনেক মানুষ মারা যায়। এমবিবিএস ডাক্তার না থাকায় স্থানীয় বিভিন্ন বাজারের ফার্মেসিগুলোতে পলস্নী চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নিতে হয়। এ ছাড়াও অসুস্থ রোগীদের নিয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অথবা কোনো প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসাসেবা দিতে হয়।' এভাবেই চিকিৎসক সংকটের কথা জানাচ্ছিলেন উপজেলার মধ্যনগর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য আর্শাদ মিয়া।

জানা যায়, ১৯৭৪ সালে মধ্যনগর সদর ইউনিয়ন, চামরদানী ইউনিয়ন, বংশীকুন্ডা উত্তর ইউনিয়ন ও বংশীকন্ডা দক্ষিণ ইউনিয়ন নিয়ে মধ্যনগর থানা গঠিত হয়। ১৪৪টি গ্রামের এক লক্ষাধিক জনগণের চিকিৎসাসেবার একমাত্র আশ্রয়স্থল স্থানীয় কয়েকটি ফার্মেসি। যে কোনো অসুখে স্থানীয় ফার্মেসিওয়ালারাই ডাক্তারের ভূমিকা পালন করেন। এখানে সর্দি-কাশি, জ্বর, মাথাব্যথার চিকিৎসা ছাড়া আর কিছুই হয় না। তবু অসময়ে ফার্মেসিওয়ালারাই রোগীদের শেষ ভরসা। মধ্যনগর থেকে ধর্মপাশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে সড়কপথে পৌঁছতে বর্তমানে ৪৫ মিনিট সময় লাগে। চামরদানী ইউনিয়ন থেকে ট্রলারে মধ্যনগর হয়ে ধর্মপাশা আসতে দেড় ঘণ্টা, বংশীকুন্ডা দক্ষিণ ইউনিয়ন থেকে আড়াই ঘণ্টা ও বংশীকুন্ডা উত্তর ইউনিয়ন থেকে তিন ঘণ্টা সময় লাগে। বর্ষাকালে রোগী নিয়ে ধর্মপাশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে পৌঁছতে পারলেও হেমন্তে ওই ইউনিয়নগুলো থেকে মধ্যনগর আসতেই যথাক্রমে দু-তিন ঘণ্টা সময় লাগে। যার ফলে শিক্ষা, চিকিৎসা, প্রশাসনিক সেবা নিতে মানুষের দুর্ভোগ ছিল। সর্বশেষ ২০২১ সালের ২৬ জুলাই নিকারের ১১৭তম সভায় মধ্যনগরকে পরিপূর্ণ উপজেলা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

২২২ বর্গকিলোমিটারের আয়তনের এ উপজেলায় প্রায় দেড় লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। উপজেলা ঘোষণার আগে বিশাল এ জনগোষ্ঠীর কথা চিন্তা করে মধ্যনগরে ১০ শয্যাবিশিষ্ট দু'টি মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়। কেন্দ্রগুলো হলো মধ্যনগর মা ও শিশু কল্যাণ এবং দাতিয়াপাড়া ফুলেন্নেছা মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র। দু'টি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে দু'জন সরকারি এমবিবিএস ডাক্তার থাকার কথা। তার বিপরীতে প্রশিক্ষিত মিডওয়াইফ ও নার্সিং অ্যাটেনডেন্ট বিভিন্ন রোগের ২৮ ধরনের ওষুধ বিতরণ করা হয়।

ধর্মপাশা উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুসতানসির বিলস্নাল বলেন, মধ্যনগরে একটি ২০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের অনুমোদন হয়েছিল। সেখানে গত বছর একজন সরকারি এমবিবিএস ডাক্তারের পদায়ন করা হয়। হাসপাতালের কোনো অবকাঠামো না থাকায় বর্তমানে সেই এমবিবিএস ডাক্তার ধর্মপাশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে কর্মরত আছেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে