শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

দুই বছরের কাজ শেষ হয়নি পাঁচ বছরেও!

দুর্গাপুর (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
  ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০
নেত্রকোনার দুর্গাপুরে কংস নদের ওপর নির্মাণকাজ শেষ না হওয়া গাঁওকান্দিয়া ইউপি-ঝানজাইল বাজার সেতু -যাযাদি

পাঁচ বছর আগে নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার তাঁতিরকোনা ফেরিঘাট এলাকায় কংস নদের ওপর গাঁওকান্দিয়া ইউপি-ঝানজাইল বাজার সেতুর নির্মাণের কাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। দুই বছরের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের তিন বছর বেশি চলে গেলেও শেষ হয়নি। এতে প্রায় ৩০ গ্রামের মানুষের যাতায়াতের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দীর্ঘদিনেও সেতু নির্মাণ শেষ না হওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে।

অভিযোগ রয়েছে, সেতু নির্মাণ কাজের মান খুবই নিম্নমানের হয়েছে। কাজ চলাকালে ভেঙে পড়েছে সেতুর গার্ডার। শুধু সেতুর গার্ডারই নয়, সেতুর বিভিন্ন অংশ বেশ কয়েকবার ভেঙেছে বলে জানায় এলাকাবাসী। তবে কাজের মান ঠিক বলে দাবি ও কাজের ধীরগতির জন্য করোনা মহামারি এবং বন্যাকে দুষছে স্থানীয় প্রকৌশল বিভাগ।

স্থানীয়রা জানায়, জেলা শহর, হাসপাতাল, হাট-বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে যোগাযোগের মাধ্যম এটি। সেতুটি দীর্ঘদিনেও সম্পন্ন না হওয়ায় গাঁওকান্দিয়া ইউনিয়নসহ আশপাশের মানুষ প্রায় দশ কিলোমিটার পথ ঘুরে যেতে হচ্ছে। এ ছাড়াও এই গ্রামে উৎপাদিত ফসল বাজারে নিতেও ভোগান্তিতে পড়তে হয় চাষিদের। পাশাপাশি কেউ অসুস্থ হলেও রোগী নিয়ে হাসপাতালে যাওয়া খুবই কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়। কাজ দ্রম্নত শেষ করার দাবি স্থানীয়দের।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) থেকে জানা গেছে, সিআইবিআরআর প্রকল্পের অধীনে ১৯ কোটি ৭৫ লাখ ৭৩ হাজার ৭১৮ টাকা মূল্যে সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৮ সালের ১৪ মে। চুক্তি অনুযায়ী কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২০ সালের ১৩ মে। সেতুটি নির্মাণের কাজ পেয়েছিল উদয়ন বিল্ডার্স এন্ড অসিম সিং নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু কয়েক দফা মেয়াদ বাড়ানোর পরও সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়নি। ক্ষোভ প্রকাশ করে স্থানীয় আলামিন মিয়া নামের এক ব্যক্তি বলেন, সেতুর জন্য কতটুকু কষ্ট পোহাতে হচ্ছে, তা এই এলাকার মানুষ হারে হারে টের পাচ্ছে। জরুরি কোনো রোগী নিয়ে যেতে কষ্টের সীমা নেই। লিজন আহমেদ, রতন মিয়া ও আহাদ আলীসহ একাধিক ব্যক্তি বলেন, শুরু থেকে এ পর্যন্ত ৫ বছর চলে গেছে। তারপরও কাজ শেষ হয়নি। তার মধ্যে নির্মাণাধীন সেতুর গার্ডার ভেঙেছে। শুধু সেতুর গার্ডারই নয়, সেতুর বিভিন্ন অংশে কয়েকবার ভেঙেছে। কাজের মান অনেক খারাপ হয়েছে।

উপজেলার গাঁওকান্দিয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক সরকার বলেন, সেতু নির্মাণে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের তাল বাহানায় কাজের গতি নেই। প্রকৌশলীসহ অনেককেই বারবার তাগাদা দিয়েও কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। এ নিয়ে ঠিকাদার প্রতিনিধি অনিল চন্দ্র ঘোষ জানান, বন্যার কারণে গার্ডার ভেঙে যাওয়ায় তাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। কাজের সময় বাড়ানো হয়েছে। এ ব্যাপারে এলজিইডি উপজেলা প্রকৌশলী খোয়াজুর রহমান বলেন, গার্ডারটি মূলত বন্যায় ভেঙেছে। আর বন্যা ও করোনার সময় তারা কাজ করতে পারেনি। তাই ঠিকাদার নিজেই অভিযোগ জানিয়েছেন। পরবর্তীতে আবারও সময় চেয়ে আবেদন করেছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। সেটি সম্ভবত অনুমোদন হয়েছে। আশা করছেন শিগগিরই সেতুর কাজ শেষ হয়ে যাবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে