সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

হাড় কাঁপানো শীত উপেক্ষা বোরো চাষে ব্যস্ত চাষিরা

স্বদেশ ডেস্ক
  ২৪ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
যশোরের মণিরামপুরে তীব্র শীত উপেক্ষা করে বোরো চারা রোপণ করছেন চাষিরা -যাযাদি

গত কয়েকদিন ধরে জেঁকে বসেছে শীত ও ঘন কুয়াশা। তবে তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশা মানছেন না কৃষকরা। শীত উপেক্ষা করেই পুরোদমে চলছে বোরো আবাদ। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত-

মণিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি জানান, মণিরামপুরের কৃষকরা শঙ্কা নিয়েই বোরো চাষে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। হাড় কাঁপানো কনকনে শীত উপেক্ষা করে কিভাবে বোরো আবাদ সুষ্ঠুভাবে করতে পারবেন এ চিন্তা মাথায় নিয়েই চাষাবাদ শুরু করেছেন তারা। এ বছর উপজেলায় এবার বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৮ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে ১ হাজার ২২৩ হেক্টর জমি এখনো রয়েছে পানির নিচে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, চাষিরা বোরো আবাদ করতে এক হাজার ৬৯৬ হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন। ইতোমধ্যে, প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চারা রোপণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। উপজেলার রোহিতা, খেদাপাড়া, কাশিমনগর, চালুয়াহাটি, ভোজগাতী, মশ্বিমনগর, মণিরামপুর সদর ইউনিয়নে বোরো আবাদের জন্য যে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে তা সম্পূর্ণ করা সম্ভব হবে।

হরিদাসকাটি ও কুলটিয়া ইউনিয়নে আওতাধীন বিল বোকড়, নেহালপুর ইউনিয়নের বিল আড়পাতা এবং দূর্বাডাঙ্গার বিল কেদারিয়া, খানপুর ইউনিয়নের বিল শালিখার আওতায় এক হাজার ২২৩ হেক্টর জমির জলাবদ্ধতার কারণে বোরো চাষের জন্য এখনো উপযোগী করতে পারেননি কৃষকরা। ভবদহ সমস্যার কারণে এ বিলগুলোতে জলাবদ্ধ থাকায় গত বছরও অনেকাংশে চাষিরা বোরো আবাদ করতে পারেননি।

এ বছরও এক হাজার ২২৩ হেক্টর জমি পানি নিষ্কাশন সম্ভব না হলে জলাবদ্ধ থেকে যাবে। জলাবদ্ধ এসব বিলগুলো বোরো চাষের উপযোগী করার জন্য চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন চাষিরা। এ লক্ষে ভবদহ পানি নিষ্কাশনের জন্য পাওয়ার পাম্প বসিয়ে সেচ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

এ অবস্থা থেকে কিভাবে উত্তরণ সম্ভব সে লক্ষে মণিরামপুরের সংসদ সদস্য হাফেজ ইয়াকুব আলী শনিবার সরেজমিন ভবদহ অঞ্চল পরিদর্শন করেছেন। দ্রম্নত পানি নিষ্কাশন কিভাবে করা সম্ভব তা নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড, বিএডিসি, চাষি শ্রেণির প্রতিনিধিসহ জলাবদ্ধ এলাকাগুলোর জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে মতবিনিময়ও করেছেন।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানিয়েছে, ভবদহ থেকে পানি সরানোর সম্ভব হলে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব হবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ঋতুরাজ সরকার জানিয়েছেন, বোরো আবাদ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে কৃষকদের নিয়ে সব রকমের প্রস্তুতি চলছে।

মোহনগঞ্জ (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি জানান, হাওড়ে জেঁকে বসেছে শীত। তবুও শীতের তীব্রতা উপেক্ষা করে পুরোদমে চলছে বোরো আবাদ। মোহনগঞ্জ উপজেলার কৃষকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন বোরো ধানের চারা রোপণে। ভোর ৬টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তীব্র শীতের মধ্যেই জমিতে কৃষি কাজ করছেন তারা। উচ্চ ফলন শীল, হাইব্রিড ও আগাম জাতের (সুর্বণা ৩) ধানের চারা রোপণ করে অধিক ফসলের স্বপ্ন দেখছেন কৃষক।

নাগডরা গ্রামের কৃষক বকুল মিয়া জানান, শীত মানছেন না তারা, ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কৃষি কাজে থাকেন। কারণ সময় মতো ধানের চারা রোপণ না করলে ভালো ফলন হয় না। বীজতলায় ধানের চারা উপযুক্ত হয়ে গেছে, তাই কোনো কৃষক অতি ঠান্ডা মানছেন না। সবাই নিজ নিজ জমিতে কৃষি কাজে ব্যস্ত।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুস শাকুর সাকী জানান, ১৭ হাজার ১০ হেক্টর বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর। এর মধ্যে শীত উপক্ষো করেই ১২ হাজার হেক্টর জমিতে চারা রোপণ হয়ে গেছে। বাকি জমিতে পুরোদমে রোপণ কাজ চলছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে