পাহাড়ে একের পর এক অপহরণ ও গুম হচ্ছেন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। গত কয়েক বছরে শুধুমাত্র রাজস্থলী উপজেলাতেই একের পর এক অপহরণ, গুম ও হত্যার শিকার হয়েছে আওয়ামী লীগের অন্তত অর্ধডজন নেতাকর্মী।
অপহরণের স্বর্গরাজ্য এ উপজেলায় গুলি করে হত্যাসহ অস্ত্রের মুখে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর কয়েক মাসেও ফিরে আসেননি রাজস্থলী উপজেলার প্রথম সারির আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগ কর্মীসহ অঙ্গসহযোগী সংগঠনের একাধিক নেতাকর্মী। শুধুমাত্র আওয়ামী রাজনীতি করার অপরাধে উপজাতীয়দের আঞ্চলিক দলের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের হাতে নির্মমভাবে অপহরণ-গুম খুনের শিকার হয়েছেন তারা।
আঞ্চলিক দলীয় সন্ত্রাসীদের হাতে সর্বশেষ গত রোববার বিকালে অপহরণের শিকার হয়েছেন রাজস্থলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হ্লা থোয়াই অং মারমা ওরফে গঞ্জ মারমা। তিনি বাঙ্গালহালিয়াস্থ কাঁকড়াছড়ি এলাকার বাসিন্দা। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান উবাচ মারমা অপহরণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এলাকার স্থানীয় কারবারি সুই ক্যাচিং মারমা জানিয়েছেন, রোববার বিকালে নিজ বাড়ি থেকে বের হয়ে জরুরি কাজে কাঁকড়াছড়ি বাজারে আসার সময় গঞ্জ মারমাকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে ভেতরের পার্টির লোকজন। এখন পর্যন্ত তাকে কোথায় রাখা হয়েছে এবং কি অবস্থায় আছে সে ব্যাপারে কোনো খোঁজ মেলেনি।
কারবারি জানান, অপহৃতের এক ছেলে মালয়েশিয়ায় আর এক মেয়ে থাকেন চট্টগ্রামে। অপহৃতের স্ত্রী অসহায় অবস্থায় আছেন। তাই থানায় কোনো অভিযোগ দাখিল করা হয়নি। এ ঘটনার পরপর এলাকার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা চরম আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন।
এদিকে চন্দ্রঘোনা থানার ওসি আনসারুল করিম জানিয়েছেন, 'আমরা ঘটনাটি শোনার পরপরই অপহৃতের স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করে অভিযোগ দেওয়ার জন্য বলেছি; কিন্তু তারা কেউই অভিযোগ দেননি। তারপরও পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখে কে বা কারা জড়িত সেটি বের করার চেষ্টা করছে।'
স্থানীয়রা জানান, রাজস্থলী উপজেলায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা চরম উৎকণ্ঠার মধ্যে দিনাতিপাত করছেন। আঞ্চলিক দলের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের হাতে চলতি ২০২৪ সালের ৭ এপ্রিল সকালে বাঙ্গালহালিয়া ইউপি'র ৭নং ওয়ার্ডের মেম্বার ক্যাচিংহ্লা মারমা (৩৪) ও ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বার ইখ্যাইমং মারমাকে (৩৬) বাজারে আসার পথে অপহরণ, ২০২২ সালের ৪ ডিসেম্বর সকালে ঘিলাছড়ির আমতলীপাড়া থেকে রাজস্থলী উপজেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি সালাউদ্দিনকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার পর এখন পর্যন্ত তাদের খোঁজ পায়নি পরিবার ও প্রশাসন।