বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

একটি হুইলচেয়ারের আকুতি পা হারানো প্রতিবন্ধী মর্জিনার

নাগেশ্বরী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
  ১৪ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
একটি হুইলচেয়ারের আকুতি পা হারানো প্রতিবন্ধী মর্জিনার
একটি হুইলচেয়ারের আকুতি পা হারানো প্রতিবন্ধী মর্জিনার

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের রুইয়ারপাড় এলাকার বটতলা এলাকার বাসিন্দা মর্জিনা বেগম (৪৬)। স্বামী-সন্তানসহ থাকেন মডেল কলেজসংলগ্ন অন্যের জমিতে। মাথা গোঁজার ঠাঁই বলতে ভাঙাচোরা দুটি টনের চালার বাংলা ঘর। সামান্য বৃষ্টিতে যেখানে পানি পড়ে। অতিকষ্টে রাত কাটাতে হয় তাদের।

স্বামী দুলাল মিয়া দুলু কখনো ভ্যান, কখনো বাই সাইকেলে ফেরি করে আচার ও আইসক্রিম বিক্রি করে সংসার চালান। সারাদিন বিভিন্ন এলাকা ঘুরে আচার কিংবা আইসক্রিম বিক্রি করে যা আয় হয় তা দিয়ে কোনোমতে চলে সংসারের খরচ। দুই মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন আর এক ছেলেকেও বিয়ে দিয়ে টানাপড়েনের মধ্যে চলছে সংসার। ছেলেটা বাবার কাজে সহযোগিতা করেন। এর বাইরে কোনো আয় নেই তাদের। আর মর্জিনা বেগম এক পা হারিয়ে স্ক্রাচে ভর করে বহুকষ্টে চলাফেরা করেন।

1

মর্জিনা বেগম জানান, প্রায় ৫ বছর আগে রিকশায় যাওয়ার সময় মাইক্রোবাসের ধাক্কায় বাঁ পা ভেঙে যায় তার। প্রায় দুই মাস ধরে চিকিৎসা করলেও কোনো উন্নতি না হয়ে উল্টো ইনফেকশন হয় তার পায়ে। নিরুপায় হয়ে হাঁটুর ওপর থেকে কেটে ফেলতে হয়। এ অবস্থায় পঙ্গুত্ব নিয়ে এক পা স্ক্রাচে ভর করেই অনেক কষ্টে সংসারের যাবতীয় কাজ করেন তিনি। এদিক-সেদিক যাওয়া আসা কিংবা অন্যান্য জরুরি কাজ সারেন অন্যের সহযোগিতায়।

অভাবের তারণায় একটি হুইল চেয়ার কেনার সামর্থ্যও নেই অসহায় ও হতদরিদ্র এই পরিবারের। এ অবস্থায় একটি হুইল চেয়ারের আকুতি জানিয়েছেন তারা। মর্জিনা বেগম বলেন, 'এক পাও নাই। অনেক কষ্ট করি চলাফেরা করা লাগে। নামাজ পড়বের পাই না। কষ্ট হয়। কাইও একটা হুইল চেয়ার দিলে অনেক উপকার হইল হয়।' স্বামী দুলাল মিয়া দুলাল বলেন, 'যে কাজ করি তা দিয়ে কোনোমতে সংসার চলে। ঘরবাড়ি জমিজমা কিছু নেই। অভাবের সংসার। বউয়ের একটা হুইল চেয়ার কিনি দেওয়ার সাধ্য নাই। বউয়ের এমন কষ্ট দেহি নিজেরও খুব কষ্ট হয়। এজন্য একটা হুইল চেয়ার পাইলে অনেক খুশি হইলাম হয়।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে